কলকাতা: এবার রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে আন্দোলনের কর্মসূচি নিল বামফ্রন্টও (Left Front)। মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ১৯ এবং ৩০ মার্চ একই ইস্যুতে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবস্থানে বসছেন কলকাতায় বি আর আম্বেদকরের (B R Ambedkar) মূর্তির পাদদেশে। ওই দু’দিন জেলায় জেলায় প্রতিটি ব্লকেও দলীয় কর্মীদের ধর্নায় বসার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী (Mamata Banerjee)। কাকতালীয় ভাবে ২৯ মার্চই কলকাতায় কেন্দ্রীয় মিছিলের ডাক দিয়েছে রাজ্য বামফ্রন্ট (Left Front)। মৌলালির রামলীলা ময়দান থেকে সেদিন ওই যাচ্ছিল যাবে ধর্মতলায় লেনিন মূর্তি পর্যন্ত। শুক্রবার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান, ২৮ এবং ৩০ তারিখ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে জেলায় জেলায় ধর্ণা দেবেন বামফ্রন্টের কর্মীরা।
এদিন বিমান বসু বলেন, আমরা বাম জমানাতেও রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছি। দিল্লিতে দরবার করেছি। তৃণমূল জমানাতেও সেই বঞ্চনা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা বারবার রাজ্য সরকারকে বলছি আপনারা শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। কিন্তু আজ পর্যন্ত তৃণমূল সরকার সেই শ্বেতপত্র প্রকাশ করে উঠতে পারেনি।
২৯ মার্চ কলকাতা শহর কার্যত স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা। ওই দিন মুখ্যমন্ত্রীর দুদিনব্যাপী ধরনার কর্মসূচি। স্বাভাবিক ভাবেই সেই কর্মসূচি ঘিরে ভিড় হবে আম্বেদকরের মূর্তি লাগোয়া এলাকায়। আবার সেদিন ধর্মতলায় সমাবেশ রয়েছে তৃণমূলের ছাত্র-যুব সংগঠনের। ওই সমাবেশের মূল বক্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাবেশে রেকর্ড জমায়েত করার জন্য জেলায় জেলায় নির্দেশ গিয়েছে তৃণমূলের। বিভিন্ন জেলায় ওই সভার জন্য প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি বামফ্রন্টের মিছিল বেরবে মৌলালি থেকে। সেই ত্রহস্পর্শে আগামী বুধবার কলকাতা শহরের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হবে বলেই অনেকে মনে করছেন।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এদিন বাম জমানার দুর্নীতির প্রসঙ্গেও তৃণমূলের অভিযোগের জবাব দেন। তিনি বলেন, বামফ্রন্ট আমলে যদি দুর্নীতি হয়েই থাকে তাহলে ১২ বছরের শাসন কালেও কেন ঘুম ভাঙল না তৃণমূল সরকারের। আমরা দাবি করছি ক্ষমতা থাকলে বামফ্রন্টের দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছেন বলে তৃণমূলের অভিযোগ। সেই প্রসঙ্গে বিমান বসু বলেন,১৯৮৭ সালে কলেজ সার্ভিস কমিশন বলে কিছু ছিল না। তখন কলেজের পরিচালন সমিতিই গ্রুপসি কর্মীদের নিয়োগ করত। এতে দুর্নীতির কোনও প্রশ্ন ওঠে না। আমাদের তদন্ত নিয়ে কোনও ভয় নেই। বিষয়টি যদি নিয়মমাফিক না হয়, তার তদন্ত হোক। শাস্তি যা হওয়ার হবে।
বৃহস্পতিবার জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ২০০৮-০৯ সালে সুজন চক্রবর্তী সহ অনেকেই তাঁর কাছে চাকরির জন্য তদ্ববির করেন বলে অভিযোগ করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, তখন তো ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট সরকার। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বিরোধী দলনেতা। তখন সুজনরা কেন চাকরির তদ্ববির করতে যাবেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথার সঙ্গে কোনও সামঞ্জস্য নেই। বিমানবাবু জানিয়ে দেন, রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করে কোনও সংগ্রামের প্রশ্নই ওঠে না।