উত্তরকাশী: উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর সিলকিয়ারায় সুড়ঙ্গ-ধসে আটক ৪০ জন কর্মীকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যের শ্রমিক-কর্মী গত পাঁচদিন ধরে মাটির নীচে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে আটকে পড়ে রয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে নতুন করে ধস নামায় আগের সব প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। বুধবার ফের নতুন করে চেষ্টা করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এই অবস্থায় কর্তৃপক্ষ থাইল্যান্ডের একটি সংস্থাকে উদ্ধারকাজের জন্য ডাকছে। ২০১৮ সালে জলমগ্ন গুহা থেকে ১২ জন কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে এরাই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার করেছিল। যোগাযোগ করা হচ্ছে নরওয়ের বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গেও। কারণ যেখানে সুড়ঙ্গটির মুখ আটকে রয়েছে, সেই এলাকাটি অত্যন্ত ভঙ্গুরপ্রবণ।
গত পাঁচদিন ধরে আটকে থাকা নির্মাণকর্মীদের পাইপের মাধ্যমে খাবার, পানীয় জল এবং অক্সিজেন সরবরাহ করা হলেও তাঁদের মানসিক অবস্থা বিপন্ন। তাই ক্রমাগত ওয়াকিটকির মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যাতে কেউ মানসিকভাবে ভেঙে না পড়েন। মনের জোর বাড়াতে কথা বলে তাঁদের শক্তি জোগানো চলছে।
আরও পড়ুন: জয়নগরের সইফুদ্দিনের উত্থানই কি ‘বিরোধী’দের ঈর্ষার কারণ?
বুধবারের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় দিল্লি থেকে বিমানবাহিনীর মালবাহী হারকিউলিস বিমানে করে বিশাল মাপের তুরপুন-জাতীয় মেশিন নিয়ে আসা হয়েছে সুড়ঙ্গের কাছে। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভিকে সিং ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ পরিদর্শন করবেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিও লাগাতার উদ্ধারকাজ নিয়ে খোঁজখবর নিয়ে চলেছেন। দিল্লি থেকে যে তিনটি মার্কিন ড্রিলিং মেশিন আনা হয়েছে তার এক-একটি ওজন ২৪ টন। এগুলি যদি ঠিকঠাক কাজ করে তাহলে প্রতি ঘণ্টায় ৫ মিমি গতিতে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে পারবে। তবে সে সময় যদি মাটি কাঁপে বা নতুন করে কম্পনজনিত ধস নামে, তাহলে কী হবে, তার বিকল্প পরিকল্পনাও চলছে।
সে কারণে ২০১৮ সালে থাই খেলোয়াড়দের উদ্ধার করা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছে, প্রশাসনের তরফে থাই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ তদারকিতে থাকা ইঞ্জিনিয়ার তথা ড্রিলিং মেশিন বিশেষজ্ঞ আদেশ জৈন জানান, এটা মেশিনের ব্যর্থতা নয়। কারণ ধস নামার পর থেকে অন্তত ৬ বার নতুন করে সুড়ঙ্গের ভিতর পাথর, বালি এসে পড়ে বন্ধ এলাকার দৈর্ঘ্য ৫০ মিটার থেকে বেড়ে ৭০ মিটার হয়ে গিয়েছে। আর আগে যে মেশিনটি আনা হয়েছিল তার খনন-ক্ষমতা ৪৫ মিটার পর্যন্ত। তাঁর আশা শুক্র অথবা শনিবারের মধ্যে সমস্ত কর্মীদের নিরাপদে ও সুস্থ অবস্থায় বের করে আনা সম্ভব হবে।