তেল আভিভ: ইজরায়েলি বাহিনী (Israel) এবং প্যালেস্তাইনের (Palestine) যুদ্ধ রবিবার আরও তীব্র হয়েছে। এ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, দুপক্ষের অন্তত ১০০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুর প্যালেস্তানীয় ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি এবং দীর্ঘ লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হয়েছে। ইজরায়েলের দিকে অন্ততপক্ষে ৬০০ জনের প্রাণহানি, অন্যদিকে গাজায় প্রায় ৪০০ জন মারা গিয়েছেন।
ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধের তাজা খবর
১। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। গত শনিবার হামাস বাহিনী ভূমি, জল এবং আকাশপথে আচমকা আঘাত হানে। যার ফলে ইজরায়েলের দাবিমতো তাদের ৬০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন হাজারখানেক। গাজা ভূখণ্ডের প্রশাসন জানিয়েছে, ইজরায়েলের প্রত্যাঘাতে তাদের ৪০০ জনের মৃত্যু এবং ১৭০০ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: লেবাননেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইজরায়েলের
২। ইজরায়েলের পক্ষে কালাদিবস বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানইয়াহু। হামাসকে ধ্বংস করতে ইজরায়েলি সেনা সর্বশক্তি ব্যবহার করবে। আমরা তাদের ভয়ঙ্কর শিক্ষা দেব, যাতে হামাস আর মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারে।
৩। গাজার কাছাকাছি যে সমস্ত হামাসের পিছনে প্যালেস্তিনীয়রা রয়েছেন, তাঁদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন নেতানইয়াহু। কারণ, হুমকি দিয়ে বলেছেন, ওদের সমস্ত ঘাঁটি এবার ধুলো করে দেবে ইজরায়েলি বাহিনী। তাঁর কথায়, গাজায় বসবাসকারী সকলকে সরে যেতে বলছি। কারণ এখন থেকে আমাদের সব বাহিনী পূর্ণ শক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে।
৪। গাজায় একের পর এক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী অবরুদ্ধ গাজার সাতটি এলাকার বাসিন্দাদের ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলেছে।
৫। গাজায় অনেক পরিবার ঘর ছেড়ে পালানো শুরু করেছে। তারা রাষ্ট্রসঙ্ঘ পরিচালিত স্কুলগুলোয় আশ্রয় নিয়েছে।
৬। সামাজিক মাধ্যম এক্সে গাজাবাসী ইজরায়েলের বিমান হামলার বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ইজরায়েল নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী এখনও গাজায় বোমা ফেলছে। আজ, রবিবার সকালে ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র আল জাজিরাকে বলেছেন, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বন্দুকধারীদের সঙ্গে ইজরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। ইজরায়েলের পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
৭। হামাসের নেতারা বলেছেন, গাজায় শুরু হওয়া হামলা দখলিকৃত পশ্চিম উপসাগর ও জেরুজালেমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
৮। গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা শনিবার সারা রাত অন্ধকারে কাটিয়েছেন। ইজরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ঘনবসতি–অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করছে। এসব হামলার পাল্টা জবাবে রকেট ছুড়ছে হামাস। তবে সেগুলোর বেশিরভাগই মাঝ আকাশে প্রতিহত করা হয়েছে।
৯। ইজরায়েল নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে প্যালেস্তানীয় সংগঠন হামাসের রকেট হামলাকে জঙ্গি হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, এ কঠিন সময়ে আমরা ইজরায়েলের পাশে আছি। মোদি লিখেছেন, ইজরায়েলে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার খবর শুনে গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছি। এই কঠিন সময়ে আমরা ইজরায়েলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি, পাশে আছি।
১০। ইজরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় হামাস মাত্র ২০ মিনিটে ৫ হাজারের বেশি রকেট ছোড়ে। ইজরায়েলে চালানো এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’। একই সঙ্গে ইজরায়েলে আবার সক্রিয় হয় ‘আয়রন ডোম’। ‘আয়রন ডোম’ বিশ্বের অন্যতম সেরা ও অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। হামাসের ছোড়া রকেট মাঝ আকাশে ধ্বংস করতে থাকে ইজরায়েলের ‘আয়রন ডোম’। তবে এবার হামাসের রকেট হামলার মাত্রা ছিল নজিরবিহীন। তাই গাজা থেকে ছোড়া অনেক রকেট ইজরায়েলের আয়রন ডোমের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়। এ কারণে ইজরায়েলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে।
দেখুন অন্য খবর