কলকাতা: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার (HS Exam 2023) প্রথম দিনেই দুর্ভোগে পড়া পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালেন বহু ব্যক্তি। যাঁরা সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে দিলে মঙ্গলবার হয়তো জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষায় বসাই হতো না তাদের। এরকম অনেকগুলি মানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল এদিনের পরীক্ষা।
বাঁকুড়া (Bankura) পাত্রসায়রে ভুল করে অন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে চলে আসে তিন পরীক্ষার্থী। বিষয়টি জানতে পেরে নিজের গাড়িতে করে তাদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিলেন থানার ওসি। সকালে সঠিক সময়ের আগেই নিজের নিজের পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হয়ে যায় পরীক্ষার্থীরা। এর মাঝেই তিনজন ভুল করে চলে যায় অন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের কুশদ্বীপ হাইস্কুলের ওই তিন পরীক্ষার্থীর কেন্দ্র ছিল পাত্রসায়র গার্লস হাইস্কুল। কিন্তু তারা ভুল করে বামিরা গুরুদাস ইনস্টিটিউট পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে আসে। বিষয়টি নজরে আসে সেখানে উপস্থিত থাকা ওসি বিদ্যুৎ পালের। তড়িঘড়ি নিজের গাড়িতে করেই ওই তিন ছাত্রীকে সঠিক পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেন তিনি।
আরও পড়ুন: Visva-Bharati University | পড়ুয়া বিক্ষোভে আবারও উত্তাল বিশ্বভারতী
শিলিগুড়িতেও (Siliguri) দুই পরীক্ষার্থী ভুল করে চলে এসেছিল অন্য স্কুলে। স্কুলে এসে ঢুকতে গিয়ে অ্যাডমিট কার্ডের (Admit Card) সঙ্গে স্কুলের নাম মেলাতে গিয়ে তারা হতবাক হয়ে যায়। বুঝতে পারে তারা ভুল করে অন্য স্কুলে চলে এসেছে। ঘটনাটি নজরে আসতেই পরীক্ষার্থীদের পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে তাদের নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেয় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ। পরীক্ষার্থীরা ভুল করে চলে এসেছিল শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলে। কিন্তু তাদের পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল শিলিগুড়ির জ্যোৎস্নাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে।
আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) ম্যাক উইলিয়াম উচ্চ বিদ্যালয়ের এক কর্মীর মানবিক মুখ দেখলেন এলাকাবাসী। পাটকাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ভুল করে ম্যাক উইলিয়াম উচ্চতর বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে আসে। কয়েক মিনিট আগে বিষয়টি জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই পরীক্ষার্থী। ছাত্রীর কান্নাকাটি দেখে তাকে বাইকে চাপিয়ে আলিপুরদুয়ার নিউ টাউন গার্লস উচ্চতর বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিল ম্যাক উইলিয়াম উচ্চতর বিদ্যালয়ের এক কর্মী।
এদিকে, মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় হাতির হানায় এক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর পর সচেতন বন বিভাগ। এদিন, বক্সা (Buxa) বনবস্তি এলাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বন দফতরের গাড়িতে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, পরীক্ষা দিতে এসে এক ছাত্র অ্যাডমিট কার্ড ভুলে যায়। তখন এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের তৎপরতায় বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে এসে পরীক্ষায় বসল এক ছাত্র। সমুদ্রগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র অরূপ সিং নিমতলা কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা। পারুলডাঙা নসরতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে তার সিট পড়েছিল। কিন্তু বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড আনতে ভুলে যায়। নাদনঘাট থানার সিভিক ভলান্টিয়ার আরিফ খানের তৎপরতায় মোটরবাইক করে ওই ছাত্রকে নিয়ে গিয়ে তার বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে আসেন কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার।
উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 Parganas) জেলার বাগদা থানার কুরুলিয়া হাই স্কুলের কলা বিভাগের ছাত্র মিলন সরকার শুক্রবার স্কুলে গিয়ে দেখে তার অ্যাডমিট কার্ড আসেনি৷ তারপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও সমস্যা সমাধান হয়নি৷ ভেবেছিল এ বছরটাই হয়তো নষ্ট হয়ে গেল৷ সোমবার প্রতিবেশীদের মাধ্যমে বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গে যোগাযোগ করে মিলন ও তার পরিবার৷ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমবার রাতের মধ্যে অ্যাডমিট কার্ড জোগাড় করে পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা হয় মিলনের৷ পরীক্ষা দিতে পেরে খুশি মিলন ও তার পরিবার৷
এদিকে, উত্তর হাওড়াতেও (Howrah) অ্যাডমিট কার্ড ভুলে আসা পরীক্ষার্থী ছাত্রীর বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে এলেন বিধায়ক| হনুমান গার্লস স্কুলের ছাত্রীর উচ্চমাধ্যমিকের সিট পড়েছিল সালকিয়া রাজগোরিয়া স্কুলে| পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় ছাত্রীটি কার্ড খুঁজে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে| সেখানেই ছিলেন বিধায়ক গৌতম চৌধুরী| সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডমিট কার্ড আনিয়ে তার পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করেন বিধায়ক।