কলকাতা: কথায় বলে বাঙালি ভ্রমণপিপাসু। আর ভারতীয়রা তো কম খরচে বিদেশ যাত্রার জন্য ভুটানকে (Bhutan) বেছে নেয়। বিশেষত, বাঙালিদের মধ্যে ভুটান ভ্রমনের চাহিদা বেশি। কিন্তু, করোনার সময় মুখ থুবড়ে পড়েছিল ভুটানের পর্যটন শিল্প। কোভিড পরবর্তী সময় ধুঁকতে থাকা পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে ভারত, বাংলাদেশ ও মলদ্বীপ থেকে যাওয়া পর্যটকদের জন্য ভুটান ‘উন্নয়ন ফি’ চালু করে। তবে, এর জেরে ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে ভুটান ভ্রমণ। কিন্তু তাতেও ভ্রমণপিপাসুদের আটকে রাখা কঠিন। তবে বেড়াতে যাওয়ার আগে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই সুখী দেশ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে রাখুন।
ভুটান সবথেকে সুখী দেশ- এশিয়ার সবচেয়ে সুখী দেশ বলা হয় ভুটানকে। ভুটানের রাজা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেন ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস’-এ। ভারত-চিনের মাঝে থাকা এই ছোট্ট দেশ অর্থনীতি ও প্রযুক্তির দিক দিয়ে খুব একটা শক্তিশালী নয়। এমনকী সামরিক বাহিনীও শক্তিশালী নয়। কিন্তু এ দেশের মানুষেরা আনন্দে ও সুখে থাকতে পছন্দ করেন।
৭০ শতাংশই অরণ্যে ঘেরা এই দেশ- হিমালয়ের কোলে অবস্থিত ছোট্ট দেশ ভুটান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। বর্তমানে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি জায়গা সবুজে অরণ্যে ঘেরা। তাছাড়া এ দেশের সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী, ভুটানের অন্তত ৬০ শতাংশ এলাকা গাছে ঢাকতেই হবে। তবেই রক্ষা পাবে এ দেশের জীববৈচিত্র্য। ভুটানে ৫,৫০০টিরও বেশি প্রকারের গাছ রয়েছে, যার মধ্যে ৩০০টি ঔষধি গাছ। এই দেশের জঙ্গলে তুষার চিতা ও রেড পান্ডা সহ ১৬৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী পাওয়া যায়।
নিজের স্ট্যাম্প বানাতে পারবেন- বিশ্বের সবচেয়ে জটিলভাবে ডিজাইন করা স্ট্যাম্প রয়েছে ভুটানে। বিভিন্ন রং ও আকারে স্ট্যাম্প পাওয়া যায়। এমনকী এ দেশে রয়েছে 3D স্ট্যাম্প। বিশেষ দিন উপলক্ষে কিংবা রাজপরিবারের কোনও অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রায়শই নতুন স্ট্যাম্প প্রকাশিত হয়। এমনকী রাজধানী থিম্পুর জাতীয় পোস্ট অফিসে গিয়ে আপনি নিজের মতো করে স্ট্যাম্প বানাতে পারবেন এবং ভুটানের এই সংস্কৃতির অংশ হতে পারবেন।
ভুটানের সর্বোচ্চ পর্বতে আরোহণ নিষিদ্ধ- হিমালয়ের কোলে অবস্থিত হওয়ায় পাহাড়-পর্বতের সংখ্যা নেহাত কম নেই এ দেশে। ভুটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল গাংখার পেনসুম। এর উচ্চতা ২৪,৮৩৬ ফুট। কিন্তু, ১৯৯৪ সাল থেকে ভুটান সরকারের তরফে ১৮,০০০ ফুটের পর পর্বত আরোহণ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে, পর্বতের ওই সব অংশ পবিত্র, তাই সেখানে মানবজাতির না যাওয়াই ভাল।
একটাও ট্যাফিক সিগন্যাল নেই এই দেশে- মন দেশও রয়েছে বিশ্বে, যেখানে নেই কোনও ট্যাফিক সিগন্যাল। এটাই আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটান। ভুটানের রাজধানীতে মূলত ট্যাফিক পুলিশই যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া এখানে যানবাহনের সংখ্যাও কম। তাই দূষণের মাত্রা নেই বললেই চলে। প্রকৃতির কোলে মন প্রাণ ভরে অক্সিজেন নিতে, আজই চলে আসুন ভুটানে।
দেখুন আরও অন্য খবর: