হাওড়া: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Prodhanmantri Awas Yojana) তালিকা যাচাই ঘিরে জেলায় জেলায় অশান্তি ক্রমশই বাড়ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই সমীক্ষা করতে গিয়ে আমতা ১ নং ব্লকের মৎস্য দফতরের আধিকারিক সোমদত্তা দাশগুপ্ত হেনস্তার শিকার হলেন। ওই আধিকারিক ব্লকের দুই কর্মীকে নিয়ে উদং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পূর্ব গাজিপুরে যান। সেখানেই তাঁকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। গত কদিন ধরেই আশা কর্মী (Asha Worker) এবং অঙ্গনওয়াড়ি (Anganwadi) কর্মীরা সমীক্ষা করতে গিয়ে ঝামেলার মুখে পড়ছেন। অনেক জেলাতেই তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। কোথাও আবার তাঁদের খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জেলায় আশা কর্মীরা এই সমীক্ষার (Survey) কাজ করতে চাইছেন না। এদিনই রাজ্যের মুখ্যসচিবের দফতরে স্মারকলিপি দিয়ে শ্রমিক (Labour) সংগঠন অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টারের পক্ষ থেকে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের এই সমীক্ষার কাজ থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
আমতার ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা বৃদ্ধা শঙ্করী কাউলের বাড়িতে গিয়ে এক কর্মী ছবি তোলেন। বৃদ্ধার ছেলে নিরাপদ কাউলে ওই কর্মীকে ছবি মুছে দেওয়ার জন্য হুমকি দেন। অভিযোগ, ওই কর্মী ছবি ডিলিট করতে না চাইলে নিরাপদ তাঁকে মারধর করেন। এমনকি ঘটনাস্থলে হাজির ওই মহিলা আধিকারিক কর্মীটিকে বাঁচাতে এলে তাঁকেও হেনস্তা করা হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। আমতা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করে। ধৃতকে আজ উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Calcutta Medical College: মেডিক্যালে ছাত্র অনশন দ্বিতীয় দিনে পড়ল, সমাধান এখনও অধরা
যদিও এই সরকারি আধিকারিক ঘটনার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। অভিযুক্তের দাবি, তিনি সরকারি কর্মচারীদের চিনতে না পেরে জামার কলার ধরেছিলেন। কিন্তু মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। অভিযুক্তের মা শঙ্করী কাউলের দাবি, আমার ছেলে জানতে চেয়েছিল কী কারণে ছবি তোলা হচ্ছে? সেটা না জানানোর জন্যই বচসা শুরু হয়। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, তাঁর ছেলে কাউকে মারধর করেনি। উল্টে এক সরকারি কর্মীই তাঁর ছেলেকে হেলমেট দিয়ে মারেন।
এদিকে পুরুলিয়া ঝালদার ইলু জার্গো গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ দিতে বিডিওর কাছে আবেদন করেছেন। এর আগে একাধিক জেলায় নাম বাদ দিতে দরবার করতে দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূলের এক ব্লক সভাপতিও রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের আবাস যোজনা প্রকল্পে তথ্য যাচাইয়ের কাজ করতে হবে। এজন্য তিন তারিখ থেকে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। আশা কর্মীদের অভিযোগ, এই কাজ করতে গিয়ে তাঁদের নিজেদের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।