নয়াদিল্লি: যা হওয়ার তাই হল। বুধে হচ্ছে না ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক (INDIA Bloc Meeting)। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) মঙ্গলবারই বিধানসভায় জানিয়ে দেন, বৈঠকের বিষয়ে তাঁকে খবরই দেওয়া হয়নি। আর তা নিয়ে হইচই পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। এমনিতেই হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপি (BJP) ক্ষমতা দখল করায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে রয়েছে কংগ্রেসের (Congress)।
এদিকে, লোকসভা ভোটে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) টেক্কা দিতে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় আরও বাড়ছে। অনেকেই সন্দেহ করছেন, তিন রাজ্যে বিপুল জয়ের পর বিজেপি শরিক দলগুলিকে ভাঙানোর নতুন খেলায় মাতবে। শুধু তাই নয়, অনেক শরিক দলের নেতাই নৌকা বদলের জন্য যোগাযোগ শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই। তারই আভাস পাওয়া গিয়েছে, ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম কারিগর নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দলেই।
আরও পড়ুন: রেবন্ত রেড্ডির কুর্সির পথে ‘কাঁটা’, আজ নাম ঘোষণা
জেডিইউয়ের লোকসভা সদস্য সুনীলকুমার পিন্টু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে বলেছেন, মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। সীতামড়ীর এমপি পিন্টু বলেন, বিজেপি যে স্লোগান দিয়েছিল, এই ভোটের ফলে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। তাঁর এই কথার জবাবে দলের মুখপাত্র নীরজ কুমার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মোদির প্রতি এত প্রীতি থাকলে উনি ইস্তফা দিন না কেন!
আসলে কিছুদিন আগেও দেশের প্রাচীনতম দলের যে কলার উঁচু করা হাবভাব ছিল, তাতে কালি পড়েছে। এই অবস্থায় একদলীয় দাদাগিরি মানতে রাজি নয় আঞ্চলিক দলগুলি। ইন্ডিয়া জোটের অনেক শীর্ষ নেতাই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনপালনে ব্যস্ত থাকবেন। তাই তাঁরাও থাকতে পারবেন না আগামিকাল, বুধবার। শেষমেশ কালকের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শুধু মমতাই নন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব মল্লিকার্জুন খাড়্গের বাড়িতে হাজির থাকতে পারবেন না বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। কংগ্রেস সূত্র জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ও তার পরবর্তী পরিস্থিতির দরুন স্ট্যালিন আসতে পারবেন না। নীতীশ কুমারের শরীর ভালো নেই। মমতা এবং অখিলেশ জানিয়েছেন, তাঁদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি আছে। এ কারণে জোট বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে কংগ্রেস একাই বিজেপিকে পরাস্ত করার নেশায় ময়দানে নেমে পড়েছিল। কারও সঙ্গে যৌথ লড়াইয়ে যাওয়া কিংবা আসন সমঝোতার রাস্তায় যায়নি। এতেই শরিকদের অনেকেই কংগ্রেসের উপর খাপ্পা ছিল। কিন্তু, ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই বেগতিক দেখে কংগ্রেস নেতৃত্বের ফের ইন্ডিয়া জোটের শরণাপন্ন হয়ে ওঠাকে তারা ভালো চোখে নেয়নি। ফলে ইন্ডিয়া জোটের স্টিয়ারিং ও গিয়ার দুটোই হাতে নিতে চাইছে আঞ্চলিক দলগুলি।
এরমধ্যেই মমতার বক্তব্য নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন মহারাষ্ট্রের উদ্ধব-সেনার নেতা সঞ্জয় রাউত। মঙ্গলবার তিনি বলেন, বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক তো রাতারাতি ডাকা হয়নি! ভোটের ফলপ্রকাশের আগেই বৈঠকের দিন ঘোষণা করা হয়েছিল। এই বৈঠক আগে থাকতেই ঠিক ছিল। তিনি আরও বলেন, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে তো ভোটগণনার দুদিন আগেই উদ্ধব ঠাকরেকে ফোনে বৈঠকের কথা জানান।
অন্য খবর দেখুন