ভারতের ফুটবল মরসুম প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু এখনও বাংলার কোনও দল সাফল্যের মুখ দেখেনি। আই এস এল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে হায়দরাবাদ এফ সি, সন্তোষ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কেরালা আর আই লিগ জিতে নিয়ে গেল গোকুলম কেরালা। আই এস এল-এ কলকাতার এটিকে মোহনবাগান হয়েছে তিন নম্বর, ইস্ট বেঙ্গল হয়েছে এগারো টিমের মধ্যে এগারো। সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা হয়েছে রানার্স, আই লিগে মহমেডান হয়েছে দু নম্বর। সব মিলিয়ে ২০২১-২২ ফুটবল মরসুমটা যে বাংলার ফুটবলের পক্ষে খুব ভাল গেছে বলা যাবে না।
এই প্রেক্ষিতে বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া এ এফ সি কাপের গ্রুপ ডি-তে এটিকে মোহনবাগানের তিনটি ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলার আপামর ফুটবল প্রেমীরা। এটিকে মোহনবাগানকে খেলতে হবে তিনটি ম্যাচ। ১৮ মে তাদের সামনে সদ্য আই লিগ জেতা গোকুলম কেরালা, ২১ মে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস এবং ২৪ মে তারা খেলবে মালদ্বীপের মেজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের সঙ্গে। সব কটি ম্যাচই হবে সল্ট লেক স্টেডিয়ামে। মোহনবাগানের প্রথম দুটি ম্যাচ বিকেল সাড়ে চারটায়। শেষ ম্যাচটি রাত সাড়ে আটটায়।
গ্রুপ লিগে কোয়ালিফাই করার আগে মোহনবাগানকে দুটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে। প্রথম ম্যাচে শ্রী লঙ্কার ব্লু স্টারকে ৫-০ গোলে হারাবার পর মোহনবাগান দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ লিগে কোয়ালিফাই করেছে। আই এস এল শেষ হওয়ার পরে দিন কয়েক বিশ্রাম নিয়েই মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো তাঁর দলবল নিয়ে প্র্যাক্টিস করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকটা প্র্যাক্টিস ম্যাচও খেলে ফেলেছে তাঁর দল। তার একটিতে তারা সন্তোষ ট্রফির জন্য বাংলা দলের কাছে ০-১ গোলে হেরে গেলেও দ্বিতীয়টিতে এশিয়ান কাপের জন্য তৈরি হওয়া ভারতীয় দলকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে। মোহনবাগানের ছয় বিদেশি ফুটবলারই ফিট এবং টিমের সঙ্গে প্র্যাক্টিস করছেন। সন্দেশ ঝিঙ্গন ছাড়া বাগানের বাকি স্বদেশি ফুটবলাররাও ফিট। সব মিলিয়ে পূর্ণ শক্তি নিয়েই মোহনবাগান খেলতে নামছে এ এফ সি কাপে। এবং সল্ট লেক স্টেডিয়ামে ভরা গ্যালারিও তাদের সমর্থনে গলা ফাটাবে।
প্রথম ম্যাচে মোহনবাগানের প্রতিদ্বন্দ্বী গোকুলমের চেয়ে জুয়ান ফেরান্দোর দল খাতায় কলমে অনেক এগিয়ে। প্রথম কথা মোহনবাগান হল আই এস এল-এর টিম, গোকুলম আই লিগের। আই এস এল-এর টিমগুলোর ওজন আই লিগের টিমগুলোর ওজনের চেয়ে অনেক বেশি। তার উপর গোকুলম গত চার মাস ধরে পড়ে রয়েছে কলকাতায়। বায়ো বাবলে থেকে তাদের ফুটবলাররা আঠারোটি ম্যাচ খেলেছে। কদিন আগে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আই লিগ। টিমটা এখন সেলিব্রেশন মুডে রয়েছে। এই অবস্থায় তারা মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কতটা লড়াই করতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। টিমের বেশ কয়েকজন ফুটবলারের কম বেশি চোটও আছে। তাই প্রথম ম্যাচে অন্তত জেতার ব্যাপারে মোহনবাগানই এগিয়ে।
জুয়ান ফেরান্দোর টিমের আসল লড়াই শেষ দুটি ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস এবং মেজিয়ার বিরুদ্ধে। তবে শক্তির বিচারে মোহনবাগানই এগিয়ে থাকবে। বসুন্ধরা এবং মেজিয়–দুই প্রতিপক্ষই মোহনবাগানের অচেনা নয়। গত বছর এ এফ সি কাপে দুই দলের বিরুদ্ধেই খেলেছে মোহনবাগান। তবে খেলাগুলো হয়েছিল মালদ্বীপে। মোহনবাগান বসুন্ধরার সঙ্গে ১-১ ড্র করলেও মেজিয়াকে হারিয়েছিল ৩-১ গোলে। তবে এবার নতুন টিম মোহনবাগানের। গত বছরের তুলনায় তাদের শক্তি বেড়েছে। হুগো বুমো, লিস্টন কোলাসো, অমরিন্দর সিংরা আসায় মোহনবাগান আরও শক্তিশালী। তাই তিন ক্লাবকে পিছনে ফেলে এ এফসি কাপের আঞ্চলিক সেমিফাইনালে উঠতে মোহনবাগানের অসুবিধে হবে না বলেই মনে হয়।