দার্জিলিং: পাহাড়ে ভোল বদল গোর্খা জনমুক্তির। কিছুদিন আগেই রাজ্যের সঙ্গে সরকারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং মন্তব্য করেন, জিটিয়ে নির্বাচন চান না । তারপরে জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতায় তিনি আমরন অনশনে বসেন। জোর কণ্ঠে বিমল গুরুং আগেই জানিয়েছিলেন তাঁর দল আসন্ন জিটিএ নির্বাচনে প্রার্থী দেবে না। কিন্তু জিটিএ নির্বাচনের মনোনয়ন জমা নেওয়া শুরু হওয়ার পর দেখা গেল অন্য ছবি। একাধিক মোর্চা নেতারা নির্দল হিসাবে মনোনয়ন দাখিল করছেন, আবার কেউ কেউ বা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার থেকে পদত্যাগ করছেন।
তাঁদের বক্তব্য, ২০১৭ সালে যে নেতারা আমাদের ভুল পথে দেখিয়েছিল এবং যার জন্য পাহাড় অশান্ত হয়েছিল, সেই নেতার কথা আমরা আর শুনতে রাজি নই ।তাই আমরা এখন নিজেরাই স্বতন্ত্র বা স্বাধীন দল হিসাবে আসন্ন জিটিএ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পাহাড়বাসীর উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল হতে চাই। ৪৫টি আসনের সবকটিতেই বিমল ঘনিষ্টরা মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র বা স্বাধীন ফোরামের নামে জিটিএ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন।
অপরদিকে, পাহাড়ের হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড জানান, পাহাড়বাসীর উন্নয়নের জন্য তারা ৪৫ টি আসনেই প্রার্থী দিচ্ছেন। যে সব দল বা যারা জিটিএ নির্বাচন চান না বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন আসলে পাহাড়ে তাদের অস্তিত্ব নেই। পাহাড়ের উন্নয়নে জিটিএ নির্বাচনও দরকার আছে এবং তার দল যদি ক্ষমতায় আসে তারা রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন Mamata Banerjee: সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
পাহাড়ের আনাচে-কানাচে শোনা যাচ্ছে বিমল গুরুং-এর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, বিজেপি, সিপিআরএম সহ পাহাড়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো একটি অলিখিত জোট তৈরি করেছে। এবং সেই জোট ৪৫ টি কেন্দ্রেই নির্দল হিসাবে প্রার্থী দিচ্ছে। জিটিএ নির্বাচনের মোট ৩১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন । এদের মধ্যে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, হামরো পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম প্রার্থীরা ছাড়া প্রচুর সংখ্যক নির্দল প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দার্জিলিং এলাকায় ৭৬ জন নির্দল কার্শিয়াং এলাকায় ৭২ জন নির্দল এবং কালিম্পং এলাকায় ৬৩ জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মোট ৪৫ টি আসনে ২১০ জন নির্দল প্রার্থী । এদের অধিকাংশই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার লোকজন বলে খবর। পাহাড়ের অধিকাংশ মানুষ মনে করছেন বিমল গুরুংয়ের আগের মতন ভিত্তি বা জন সংযোগ নেই। গত দার্জিলিং পৌরসভা নির্বাচনে বিমল গুরুং মাত্র ৩টি আসন পেয়েছিলেন।
যেহেতু বিমল গুরুং-এর দল সহ পাহাড়ের অন্যান্য দলগুলো আগেই জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করেছিল তাই তারা এখন বেগতিক দেখে নিজের দলের কর্মীদের কাউকে পদত্যাগ করিয়ে বা বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে বিমল গুরুং অস্তিত্ব তলানিতে ঠেকেছে। তাই তার দলের লোকেরা নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে পাহাড়ের আনাচে কানাচে গুঞ্জন, অলিখিত জোটের প্রার্থীরা ভোটে জিতে আসলেই জিটিএ বোর্ড মিটিংয়ে রেজোলিউশন নিয়ে জিটিএ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আরও পড়ুন Uttarakhand Accident: উত্তরাখণ্ডের বাস দুর্ঘটনায় আহতের দেখতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ