রঘুনাথগঞ্জ: কলকাতা টিভির খবরের জের, ডাইনি অপবাদে এক আদিবাসী পরিবারের ছ’সদস্যকে মারধরের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিস। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে এক আদিবাসী পরিবারকে ডাইনি সন্দেহে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ ওঠে। এমনকি তাদের মলমূত্র খাইয়ে গ্রামের সবার সামনে কান ধরে উঠবস করার শাস্তিও দেওয়া হয়। সেই ঘটনাই কলকাতা টিভি তুলে ধরেছিল সবার সামনে। তারপর বুধবার ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। মূল অভিযুক্ত ও গ্রামের মোড়লকে গ্রেফতার করেছে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিস।
রঘুনাথগঞ্জ এক নম্বর ব্লকের মথুরাপুর আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা জনতা সর্দার। তাঁরই প্রতিবেশী ফটিক সর্দার। মাস খানেক আগে জনতা সর্দারের ১৬ বছরের মেয়ে রুপসীর বিয়ে হয়। বিয়ের পরই রুপসী বাবার বাড়িতে এসে জ্বরে আক্রান্ত হয়। সেই জ্বর কিছুতেই ভালো হচ্ছিল না। জনতা সর্দারের সন্দেহ হয়, মেয়েকে ডাইনিতে ধরেছে। স্হানীয় এক গুনিকে ডেকে আনা হয়। গুনি জানায় রুপসীকে ডাইনিতে ধরেছে। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙ্গুল উঠে প্রতিবেশী ফটিক সর্দারের পরিবারের দিকে। রবিবার আদিবাসী পাড়ার মোড়লদের উপস্থিতিতে ডাইনি অপবাদে ফটিক সর্দারের পরিবারের ছ’সদস্যকে মারধর করা হয়। অভিযোগ, গ্রামের মোড়লের কথামতো শৌচালয় থেকে মলমূএ বোতলে ভরে তাদের জোর জবরদস্তি খাওয়ানো হয়। এখানেই শেষ নয়, সালিশি সভায় কানধরে উঠবস করানো হয় তাঁদের। তারপর সোমবার মৃত্য হয় রুপসী সর্দারের। রুপসীর মৃত্যুর পর ফটিক সর্দারের পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে ঘর থেকে বের হতে সাহস পাচ্ছেন না প্রাণনাশের আশঙ্কায়।
আরও পড়ুন: Karnataka: কর্নাটকে শিক্ষায় গৈরিকীকরণ, প্রতিবাদী বিজেপি বিধায়কও, ক্ষুব্ধ প্রগতিশীল লেখকরা
ডাইনি অপবাদে আদিবাসী এক পরিবারকে মারধর ও মলমূএ খাওয়ানোর খবর জানাজানি হতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছন রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি পার্থ ঘোষ ও বিডিও আবু তোয়েব। তাঁরা জানান, বিষয়টি সামনে আসার পর গ্রামে পুলিস মোতায়ন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।