উত্তর ২৪ পরগনা: করোনা মহামারীর জেরে গত দু’বছর ধরে একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে রয়েছে সারা বিশ্ব। দেশের সঙ্গে রাজ্যেযও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। আর এই মহামারীতে সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে কচিকাঁচা পড়ুয়ারা। দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ধরে স্কুল ঠিকঠাক করে খোলেনি। তাই শিক্ষার্থীদের কাছে অনলাইন ক্লাসই ছিল একমাত্র ভরসা। দেখা গিয়েছে, শহরকেন্দ্রিক ছাত্র-ছাত্রীরা স্মার্টফোনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসের সুবিধা ভোগ করলেও, অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল প্রত্যন্ত সুন্দরবনের শিক্ষার্থীরা। কারণ স্মার্টফোনের অভাব।
এই সুন্দরবন অঞ্চলে গত দু’বছরে আম্ফান ও ইয়াশের মতো ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। পাশাপাশি একাধিক নিম্নচাপ ও ভরা কোটালে বিপর্যস্ত হয়েছে সুন্দরবনের দ্বীপগুলি। সেখানে জীবনযুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে থাকাই একপ্রকার দায়। স্মার্টফোন কেনা তো প্রায় বিলাসিতা।
সেই সমস্যার কথা বুঝতে পেরে এবার গাছতলাতেই শিক্ষাদানের ব্যবস্থা শুরু হল বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জে। কনকনগর এসডি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরীর উদ্যোগে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের চারটি কেন্দ্র অর্থাৎ বাঁকড়া, কনকগর, কাঠাবাড়ি মোড় ও ১১নং সান্ডেলেরবিলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গাছতলায় বসল ক্লাস। ইতিহাস, অঙ্ক, বিজ্ঞান ও শারীরশিক্ষা সহ একাধিক বিষয়ের শিক্ষকরা গাছতলাতেই পড়ুয়াদের পড়াতে শুরু করলেন। এ যেন রবীন্দ্রনাথের এক টুকরো বিশ্বভারতীর আম্রকুঞ্জ।
আরও পড়ুন: Mangala Hat Howrah: মঙ্গলাহাট নিয়ে হাওড়া পুরসভার কাছে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
যদিও সুন্দরবনের যে সমস্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের স্মার্টফোন কিনে দিতে সক্ষম হচ্ছেন, সেখানেও আরেক সমস্যা কাজ করছে। তা হল দুর্বল নেটওয়ার্ক। যার জেরে ভিডিও কলে অনলাইন ক্লাস করা যথেষ্ট দুরূহ হয়ে ওঠে। তাই এই দুই সমস্যা সমাধানে গাছতলার এই নতুন বিদ্যালয়ে খুশি সুন্দরবনের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবকরাও।