সিউড়ি: ফের বিপাকে পড়লেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। এবার বগটুই (Bogtui) হত্যাকাণ্ডে অনুব্রত-যোগের অভিযোগ তুলল সিবিআই (CBI)। কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta HighCourt) পেশ করা এক হলফনামায় এ কথা জানিয়েছে সিবিআই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে থাকা বগটুই-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় তিন সিবিআই অফিসারের নাম করে থানায় এফআইআর করেন লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি (Reshma Biwi)। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, ওই অফিসাররা মারধর করায় লালনের মৃত্যু হয়েছে। লালনের (Lalon) মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি (CID)। সিবিআই রেশমার অভিযোগের ভিত্তিতে হওয়া মামলার পাল্টা মামলা করে। সেই মামলায় হলফনামা পেশ করে। সেখানেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, বগটুই-কাণ্ডে অনুব্রতর সরাসরি যোগ ছিল।
সিবিআই হলফনামায় জানিয়েছে, ঘটনার দিন এবং পরের দিন বগটুই-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুল হকের সঙ্গে অনুব্রতর ফোনে কথাবার্তা হয়। গত ২১ মার্চ রাতে বগটুইয়ে বোমা এবং গুলিতে খুন হন স্থানীয় উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই রাতেই ভাদুর অনুগামীরা গ্রামে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। একাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরের দিন সকালে ভাদু ঘনিষ্ঠ সোনা শেখের বাড়িতে শিশু ও মহিলা-সহ দশজনের পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার করে দমকল এবং পুলিশ। ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় লোকজন জানান, গ্রামে এত বড় ঘটনা ঘটছে জেনেও পুলিশ সেই রাতে অকুস্থলে যায়নি। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের ফলেই এই ঘটনা ঘটে। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। সেদিনই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ধরা পড়ে আনারুল। একাধিক পুলিশকর্তাকে বদলি করা হয়। ওই রাতে অনুব্রত প্রথমে দাবি করেছিলেন, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন লেগেছিল।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: আমরা কখনও সরাসরি বিজেপি করিনি, দাবি মমতার
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বগটুই-কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। ২১ মার্চ রাতে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই বেপাত্তা ছিল ভাদু ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা লালন শেখ। গত ৪ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ড থেকে সিবিআই গ্রেফতার করে লালনকে। তারপর থেকে সে সিবিআই হেফাজতেই ছিল। হেফাজতে থাকাকালীনই সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের বাথরুমে লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়, আত্মহত্যাই করেছে লালন।