দুবাই: জল সমস্যা নিয়ে ইরান ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক খণ্ডযুদ্ধে গড়াল। সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলিতে অন্তত ৩ জনের মৃত্যু এবং বহু লোক জখম হয়েছেন। ২ ইরানি রক্ষী এবং এক তালিবান সেনার মৃত্যু হয়েছে গুলিতে। যত সময় গড়াচ্ছে, ততই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রকে মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিমরোজ প্রদেশে ইরানি সীমান্ত রক্ষী বাহিনী আফগান সীমান্ত লক্ষ্য করে গুলি চালালে আমরাও জবাব দিই। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। অন্যদিকে, ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, তাদের ২ সীমান্তরক্ষীর মৃত্যু এবং ২ সাধারণ নাগরিক জখম হয়েছেন। তেহরান টাইমসের খবর অনুযায়ী, ৩ জন ইরানি জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।
এই আচমকা লড়ালড়ির পিছনে রয়েছে দীর্ঘদিনে জলসমস্যা। ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এ মাসে তালিবানকে হেলমন্দ নদীর জলধারা রোধ করার বিষয়ে তালিবানকে সতর্ক করেন। ১৯৭৩ সালের চুক্তি অনুযায়ী, আফগানিস্তান নদীর জল ইরানের পূর্ব এলাকায় ঢোকার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। যদিও তালিবান শাসকরা এই অভিযোগ ডাহা মিথ্যা বলে অস্বীকার করে।
আরও পড়ুন: Daily Bengali Horoscopes | Ajker Rashifal | আজকের রাশিফল | ২৮ মে, ২০২৩
তালিবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্রের দাবি, আচমকাই নিমরোজ অঞ্চলের কং জেলায় ইরানি বাহিনী গুলি চালাতে শুরু করে। আর তাতেই সংঘর্ষ বেধে যায়। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে বিশ্বাস করি। যুদ্ধের জন্য অজুহাত খাড়া করলে তা কারও পক্ষেই মঙ্গলজনক হয় না। উল্টোপক্ষে ইরানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের দিক থেকেই প্রথম গুলি ছুটেছে। ইরানের সংবাদ সংস্থা পুলিশ কর্তার বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেছে, আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক অগ্রাহ্য করে ওরা গুলি চালালে আমাদের বাহিনীও জবাব দেয়।
সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে হেলমন্দ নদীর জল। ১০০০ কিমি দীর্ঘ এই নদীর জলধারা আফগানিস্তান হয়ে ইরানে প্রবেশ করেছে। অভিযোগ, আফগানিস্তান তাদের দিকে বাঁধ নির্মাণ করে জলবিদ্যুৎ ও সেচের কাজে ব্যবহার করছে। ফলে ইরানের দিকে সেভাবে জল বাহিত হচ্ছে না। গত ৩০ বছর ধরে খরা ইরানের একটি জ্বলন্ত সমস্যা। কিন্তু গত ১০ বছর ধরে তা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। ইরানের আবহাওয়াবিদদের মতে, দেশের প্রায় ৯৭ শতাংশ এলাকাই খরা-কবলিত বলা চলে।