Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeকলকাতাAdani Groups | আদানি: একটি আশ্চর্য উত্থানের রূপকথা

Adani Groups | আদানি: একটি আশ্চর্য উত্থানের রূপকথা

Follow Us :

কলকাতা: চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। সে অভিযোগের সারবত্তা নিয়ে মন্তব্য করার মতো তথ্য আমাদের হাতে না থাকলেও ক্ষমতার সোপানে নরেন্দ্র মোদির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গেই যে আদানি গোষ্ঠীর (Adani Groups) আশ্চর্যজনক উত্থান, সেটা বুঝতে গবেষণার দরকার হয় না। 

এ দেশের বিরোধীরা বারবার অভিযোগ করছেন, নরেন্দ্র মোদি (Adani Groups)-র সহায়তাতেই গৌতম আদানি (Goutam Adani)-র রূপকথার উত্থান। আইনি ভাষায় একটা কথা আছে, সারকামস্ট্যানশিয়াল এভিডেন্স বা পারিপার্শ্বিকতার সাক্ষ্য। একসময় বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি হয়ে ওঠা গৌতম আদানির অগ্রগতির ইতিহাস দেখলে দেখা যাবে, সেটা আশ্চর্যজনক ভাবে নরেন্দ্র মোদির উত্থানের সঙ্গে সমান্তরাল পথে গিয়েছে। 

আরও পড়ুন: AAP Postar Campaign | ক্ষমতা থেকে মোদি সরকারকে সরাতে কলকাতায় পোস্টার ক্যাম্পেন আম আদমি পার্টির

আদানির এক জীবনে দেশের ধনীতম হয়ে ওঠার গল্পটার শুরুটা ছিল খুবই সাধারণ। মাত্র ৫ লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে ১৯৮৮ সালে মাল কেনাবেচার ব্যবসা চালু করেন। সেই কোম্পানির নাম ছিল আদানি এক্সপোর্টস, পরে হয় আদানি এন্টারপ্রাইসেস। ছোট-বড় ব্যবসা করে গেলেও চলতি শতাব্দীর প্রথম পর্যন্ত বিরাট কোনও সাফল্য পাননি আদানিরা। ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদি। এর পরেই আদানি পেয়ে গেলেন সাপ লুডো খেলার একটার পর একটা মই। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই প্রথম সাপ লুডোর সাপের মুখে পড়েন তিনি। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হন। তখন পর্যন্ত এ দেশের কোনও শেয়ার সূচকেই স্থান দেওয়া হত না কোনও আদানি কোম্পানিকে। ২০১৫-তে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত করে, ইপিএফও-র টাকা শেয়ার বাজারে খাটবে। কোনও অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনে ২০১৫ সালে আদানি পোর্টস নামে কোম্পানি নিফটি ফিফটি-তে জায়গা পায়। আদানি কেম্পানিতে ঢুকতে থাকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা।

২০২২ সালে আদানি এন্টারপ্রাইস নিফটি ফিফটি-তে ঢোকে। কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের বড় অঙ্কের টাকা আদানিদের কোম্পানিগুলিতে ঢোকা অব্যাহত থাকে। আদানিদের দরাজ হাতে টাকা ধার দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক, এলআইসি, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা প্রভৃতি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। করোনাকালে লকডাউন ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সময়ে হঠাৎ আশ্চর্য উত্থান দেখা যায় আদানিদের। ২০২১ সালের এপ্রিলে আদানি গোষ্ঠীর মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ছিল ৮ লক্ষ কোটি টাকা। এক বছরের মধ্যে ২০২২ সালের এপ্রিলে ওই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ লক্ষ কোটি টাকা 

পরবর্তী ৬ মাসের আবার বিশাল হাই জাম্প। ২০২২ সালের নভেম্বরে আদানিদের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন দাঁড়ায় ২২ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সংস্থার রিপোর্টের ধাক্কায় এই অঙ্ক আজ প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। গত দু’মাসে আদানি গোষ্ঠী হারিয়েছে প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন। এই রূপকথার গল্পে কিন্তু নানা জায়গায় রয়ে যায় ধাঁধা, প্রশ্ন, বিভ্রান্তি।

কোন মন্ত্রে সব মাফ?

সাল ২০১০, তখন আদানি এন্টারপ্রাইস-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন রাজেশ আদানি। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০, কর ফাঁকির অভিযোগে সিবিআই তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আজ ১৩ বছর বাদেও আমরা জানি, ধনীতম ভারতীয় গৌতম আদানি কর দেওয়ার তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে নেই। কর ফাঁকির সে মামলার কী হল, কেন নতুন কোনও মামলার কথা জানা যায় না?

সাল ২০১২, ভারত সরকারের অডিটার এক গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ তুললেন। অভিযোগ, গুজরাটের সরকার পরিচালিত গ্যাস কোম্পানি অত্যন্ত সস্তায় আদানি সহ কয়েকটি কোম্পানিকে জ্বালানি সরবরাহ করছে। কী হয়েছে সেই অভিযোগের? কে উত্তর দেবে?

সাল ২০১৪, বিখ্যাত পত্রিকা ‘দ্য গার্ডিয়ান’ আদানিদের সম্পর্কে নানা অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে। ওই বছর ডিরেক্টোরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বলে, আদানিদের অনেক ভুয়ো কোম্পানি রয়েছে। ভুয়ো কোম্পানি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, দুবাই, মরিশাস প্রভৃতি দেশে, বিনোদ আদানি এগুলি চালায়। কী হয়েছে সেই অভিযোগের? কেন সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলে দিলেন, ভুয়ো কোম্পানি বলে কিছু হয় না? কাকে কে বাচাচ্ছেন?

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ-এর রিপোর্ট-এর অভিযোগগুলি নিয়ে কেন হচ্ছে না ইডি বা সিবিআই তদন্ত? মঙ্গলবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অভিযোগ করেছেন, টাকা আদানিদের নয়, প্রকৃতপক্ষে টাকা নরেন্দ্র মোদির, আদানিরা কেবল ফান্ড ম্যানেজার। ফান্ড ম্যানেজ করে আদানিরা ১৫-২০ শতাংশ কমিশন পান। এই অভিযোগ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে বয়ানের জল অনেক দূর গড়াবে। কিন্তু যে প্রশ্নটাকে কিছুতেই চাপা দেওয়া যাচ্ছে না, তা হল, নীরব কেন মোদি?

RELATED ARTICLES

Most Popular