দেশের বিরোধী অনেক রাজনৈতিক দলই বিজেপিকে (BJP) ফ্যাসিস্ত দল বলে আখ্যা দেয়। তাদের দাবি, পরবর্তীকালে আরএসএসের (RSS) ফ্যাসিস্ত মতাদর্শেই হয় বিজেপি। বিরোধীদের আরও অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আচারআচরণে প্রতিপদেই ফ্যাসিস্ত দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় মিলছে।
এই প্রসঙ্গেই মনে পড়ছে হিন্দু মহাসভার প্রথম সভাপতি বি এস মুঞ্জির কথা। ইতিহাস (history) বলছে, গত শতাব্দীর তিনের দশকে ইতালিতে গিয়েছিলেন। সেখানে ফ্যাসিস্ত মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে খোদ মুসোলিনির সঙ্গে দেখা করেন মুঞ্জি। তখন থেকেই আরএসএস (RSS) ফ্যাসিস্ত মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়। দিল্লির আর্কাইভে সংরক্ষিত আরএসএস নেতা ডায়েরিতে তার ইতালি সফরের কথা বিস্তারিত লেখাও রয়েছে।
উগ্র দক্ষিণপন্থার ধারণা ইউরোপ (Europe) থেকে ভারতে (India) আমদানি করেছে আরএসএস। শ্বেতাঙ্গদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ ইউরোপে গত শতাব্দীতে উগ্র দক্ষিণপন্থার জন্ম দেয়। তিন ও চারের দশক থেকে আরএসএস ভারতে উগ্র দক্ষিণপন্থার আমদানি করে। যদিও ১৯২৫ সাল থেকেই আরএসএস (RSS) উগ্র দক্ষিণপন্থার ভক্ত। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আরএসএস জার্মানির হিটলার এবং ইতালির (Italy) মুসোলিনির আদর্শে আরও বেশি করে অনুপ্রাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: Mithun Chakrabarty:আমার রাজনৈতিক গুরু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তির্যক আক্রমণ মিঠুনের
ঐতিহাসিকদের একাংশ মনে করে, তিন ও চারের দশকে ইউরোপে (europe) যে উগ্র দক্ষিণপন্থার বাড়াবাড়ি দেখা গিয়েছিল, ভারতে (India) তা আমদানি করে ব্রাহ্মণ্যবাদে রূপান্তরিত করেছে আরএসএস। ইউরোপে উদ্ভুত উগ্র দক্ষিণপন্থা গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদের বিরোধী। উল্লেখ্য, আলফ্রেড রোসেনবার্গ যে জাতিতত্ত্বের জনক তাতে আর্যরক্তকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (World War) পরে ১৯৪৬ সালে রোসেনবার্গকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। একইসঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হন। ১৯৩১ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে মুঞ্জি ইউরোপ ভ্রমণ করেন। সেখানকার মিলিটারি স্কুলগুলিও পরিদর্শন করেন।
ভাষার পক্ষপাতিত্বে মিল রয়েছে আরএসএস এবং ইউরোপের (europe) সেই সময়ের ফ্যাসিবাদীদের সঙ্গে। হিটলার, মুসোলিনির অনুগামীরা যেমন প্রাচীন ভাষা ল্যাতিনের অন্ধভক্ত, সঙ্ঘ পরিবার গোড়া থেকেই সংস্কৃতের ভক্ত। সঙ্ঘ পরিবার চেয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার, মুসোলিনির জয় হোক। যদিও ৫ থেকে ৭ লক্ষ রোমা জিপসিকে হত্যা করেছিল নাজিরা। কিন্তু কেন সঙ্ঘ পরিবার নাজিদের ভক্ত হয়ে উঠেছিল তার কোনও ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা এ দেশেনেই। যদিও নাজিরা কালো মানুষদের মানুষ বলেই গণ্য করত না। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এর বিরোধিতা করেছিলেন। কে বি হেডগেওয়ার থেকে শুরু করে এম এল জয়াকারের মতো আরএসএসের শীর্ষ নেতারা হিটলার ও মুসোলিনির অতিভক্ত ছিলেন।