আফ্রিকার নামিবিয়া থেকে আসা আটটি চিতার (Cheetah) জন্য রাজস্থান থেকে ১৮১টি চিতল (Chital) হরিণ পাঠানোর সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাল বিষ্ণোই সম্প্রদায়। মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে রাখা হয়েছে নামিবিয়া থেকে আনা চিতাগুলিকে। নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে ওই চিতাগুলিকে বিস্তর ঢাকঢোল পিটিয়ে আফ্রিকা থেকে আনার ব্যবস্থা করা হয়। খোদ প্রধানমন্ত্রী নিজেও তাঁর জন্মদিনের বেশ খানিকটা সময় ক্যামেরার শাটারে আঙুল রেখে কাটিয়ে দেন কুনো ন্যাশনাল পার্কে।
ভারতে চিতা দীর্ঘদিন আগেই বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। এজন্য নতুন করে দেশে চিতা আনার সিদ্ধান্ত বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ মহলে আলোচনা শুরু হয়েছিল আদপে ওই প্রাণীগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে কি না। প্রাণী সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ভারতে লুপ্তপ্রায় চিতার সঙ্গে আফ্রিকান চিতার ততটা মিল নেই। সেজন্য নামিবিয়ার এই আটটি চিতা ভারতীয় পরিবেশে কতখানি মানিয়ে নিতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
আর এই পরিস্থিতিতে বাড়তি বিতর্ক তৈরি হয়েছে অখিল ভারতীয় বিষ্ণোই মহাসঙ্ঘের সভাপতি দেবেন্দ্র বিষ্ণোই-এর প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে। অত্যন্ত কড়া ভাষায় লেখা ওই চিঠিতে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিই নেই যে আমাদের দেশে চিতা শুধু লুপ্তপ্রায় অংশের মধ্যে পড়ে। আর চিতল হরিণের লুপ্তপ্রায় হওয়ার আশঙ্কা নেই। রাজস্থানেও চিতল হরিণ প্রায় লুপ্তপ্রায় হওয়ার মুখে। তাই এই বিশেষ প্রজাতির হরিণটিকে বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। আর একারণেই চিতল হরিণকে ভোজের উপাদান বানানোর ওই অবৈজ্ঞানিক এবং অনুভূতিহীন সিদ্ধান্ত অবিলম্বে পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
ওই চিঠিতে একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, এভাবে চিতল হরিণ পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে আগামী ২৫-২৬ সেপ্টেম্বর রাজস্তানের বিকানিরে একটি জাতীয় স্তরের সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে। ওই সময়ের মধ্যে যদি এভাবে কুনো ন্যাশনাল পার্কে চিতল পাঠানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে দেশ জুড়ে আন্দোলনে নামা হবে। ইতিমধ্যে হরিয়ানার সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের সদস্যরা। বিশেষজ্ঞ মহল তাই অপেক্ষায় আছে এই অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়ে কেন্দ্র অবশেষে কি সিদ্ধান্ত নেয় সে ব্যাপারে।