বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানে ফের বিজেপির(BJP) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব(Inner Conflict) সামনে এল। দলের অন্দরে সম্মান না পাওয়ায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিল বিজেপির(BJP) এসটি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রাজু পাত্র। মাস কয়েক আগে বিজেপির রাজ্য নেতাদের সামনেই জেলা পার্টি অফিসে(Party Office) ভাঙচুর চালানো হয়। রাজুর অভিযোগ, বিজেপির একদল কর্মীই সেদিন পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালায়। ফেসবুক পোস্টে রাজু বলে সেদিন পার্টি অফিসে যারা ভাঙচুর করেছে তারাই এখন দলে প্রাধান্য পাচ্ছে। নিষ্ঠার সঙ্গে পার্টি করা লোকজন যদি গুরুত্ব হারায় তাহলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে হবে। আবার বিজেপির কৃষক মোর্চার পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি দেবাশিস সরকার ফেসবুক পোস্টে (Facebook Post) লিখেছেন, সেদিন যারা পার্টি অফিসের পবিত্রতাকে নষ্ট করেছিল আর তা নষ্ট করতে সাহায্য করেছিল, তাদের কাউকে ক্ষমা করিনি।
পার্টি অফিসের ভাঙচুরের ছবি সহ সোশ্যাল মিডিয়ার ওই পোস্ট ঘিরে বিজেপির অন্দরে আলোড়ন পড়েছে। তৃণমূল অবশ্য বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, গোটা রাজ্যেই বিজেপি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত।
ওই দুই নেতার পোস্ট ঘিরে যখন জেলা বিজেপিতে (BJP) তোলপাড় চলছে, শনিবার তখনই জেলার যুব মোর্চার সম্পাদক কৌশিক কুণ্ডুও ফেসবুক পোস্ট করে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনিও পার্টি অফিস ভাঙার ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ধর্মের ক্ষেত্রে আমার মন্দিরকে যারা ভাঙবে তাদের বিরুদ্ধে গোটা ধর্ম নামবে। রাজনীতিতে যারা আমার এই মন্দির ভাঙবে তাদেরকেও আমরা ভাঙব। কৌশিকের পোস্টের পরপরই ফের ফেসবুক পোস্ট করতে দেখা গেল জেলা বিজেপির সহ সভাপতি শ্যামল রায়কে। জেলা পার্টি অফিসের ছবি দিয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, এটা আমাদের কাছে মন্দির। আমরা তো বিশ্বাস করি মন্দিরকে এবং মন্দিরের উপর যারা অত্যাচার করেছিল, তাদের নেতা এবং যিনি করিয়েছিলেন সেই নেতা আজ দল পরিচালনার অন্যতম ভূমিকা পালন করছে। তাদের ক্ষমা নেই। এই মন্দিরকে আবার এসো আঘাত করতে। একের পর এক নেতার এই ধরনের পোস্টে বিব্রত দলের ক্ষমতাসীন জেলা নেতৃত্ব। তবে, জেলার কোনও নেতাই এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি।
আরও পড়ুন:Union Budget 2023: কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে এমএসএমই সেক্টরে প্রয়োজন সরকারি সাহায্যের
২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি বিজেপি নেতা (BJP Leader) পিন্টু শ্যাম এবং দেবজ্যোতি সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে দলের জেলা পার্টি অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। সেদিন, ওই দুই নেতার অনুগামীরা বাইরে থেকে ইট-পাটকেল ছোড়ে। পার্টি অফিসে ভাঙচুরও করা হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল এই ভাঙচুরের পেছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে। পরে অবশ্য জানা যায়, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের (Inner Conflict) কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। ওই দুজনকেই ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়। বিক্ষুব্ধ নেতাদের অভিযোগ, ওই ঘটনার পরও পিন্টু, দেবজ্যোতিদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। এর প্রতিবাদের একের পর এক নেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান রকম পোস্ট করতে শুরু করেন। এমনকি জেলার অনেক পদাধিকারীও ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে। সব মিলয়ে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা নেতৃত্ব।