নয়াদিল্লি: সরকার (Government) কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের (Central Government Employees) বকেয়া মহার্ঘভাতা [Dearness Allowance (DA) Arrears] দেবে না। কোভিড প্যানডেমিক পর্বে (Covid-19 Pandemic) ১৮ মাসের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং পেনশনভোগীদের (Pensioners) ডিএ দেওয়া বন্ধ রেখেছিল সরকার। পরবর্তীকালে তা আর দেয়নি কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা পাওয়ার দাবি থাকলেও, তা মেটাতে রাজি নয় সরকার। এই বিষয়ে সরকার জানিয়েছে, বকেয়া মহার্ঘভাতা দেওয়া হবে না।
লোকসভাতে (Lok Saba) সরকার তার সিদ্ধান্তের সপক্ষে বলেছে, বকেয়া ডিএ/ডিআর (Dearness Allowance -DA/Dearness Relief – DR)-এর বেশিরভাগটাই ২০২০-২১ চ্যালেঞ্জিং অর্থবর্ষের সময়কার। ২০২০ সালে দেশের অর্থনীতির (Country’s Economy) উপর করোনা প্যানডেমিকের নেতিবাচক প্রভাব (Negative Effect) পড়েছিল। সেই কারণ মহার্ঘভাতা সম্ভাব্য আর্থিক সহায়তা হিসেবে গণ্য করা সম্ভব নয়, তাই কেন্দ্রীয় সরকার ১৮ মাসের বকেয়া ডিএ কিংবা ডিআর দেবে না। ২০২০-২১ অর্থবর্ষের পরেও কল্যাণমূলক পদক্ষেপের (Welfare Measures) ফলে দেশের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Saradha Scam | সারদার জমি নিলামে উঠছে ১১ এপ্রিল
লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী (Pankaj Chaudhary, Union Minister of State for Finance) বলেছেন, ১.১.২০২০, ১.৭.২০২০ এবং ১.১.২০২১, এই তিনটি কিস্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী/পেনশনভোগীদের ডিয়ারনেস অ্যালাওয়্যান্স (ডিএ)/ ডিয়ারনেস রিলিফ (ডিআর) স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কোভিড ১৯-এর কারণে দেশের অর্থনৈতিক ব্যাঘাত ঘটার কারণে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল সরকারের উপর থেকে আর্থিক চাপ কমানো। যেহেতু ২০২০ সালে দেশের অর্থনীতির উপর প্রতিকূল প্রভাব (Adverse Effect on the Economy) পড়েছিল, তারপর কল্যাণমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল এবং সংশ্লিষ্ট ১৮ মাসের বকেয়া ডিএ/ডিআর ওই পর্বের মধ্যে পড়ে, তাই সম্ভাব্য বলে বিবেচিত হবে না। এমনকি এখনও সরকারের রাজস্ব ঘাটতি, এফআরবিএম আইনে (FRBM Act) বর্ণিত মাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি চলছে।
কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে বকেয়া ডিএ/ডিআর না দেওয়া প্রসঙ্গে আরও বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের তিনটি কিস্তির ডিয়ারনেস অ্যালাওয়্যান্স ও ডিয়ারনেস রিলিফ স্থগিত রেখে ৩৪৪০২.৩২ কোটি টাকা বাঁচিয়েছে সরকার, সেই টাকা কোভিড প্যানডেমিক জনিত আর্থিক ক্ষতি সামলাতে ব্যবহার করা হয়েছে।
কেন্দ্র সরকারের সামনে তিনটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল –
১) কোভিড-১৯ প্যানডেমিকের সময় বন্ধ হওয়া ১৮ মাসের ডিএ বকেয়া অদূর ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা এবং যদি থেকে থাকে, তাহলে তার বিশদ বিবরণ কী এবং সরকার কখন দেওয়ার কথা ভাবছে?
(খ) উল্লিখিত ডিএ বকেয়া প্রকাশে বিলম্বের কারণ কী?
(গ) কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের ডিএ বকেয়া বিতরণের জন্য মোট কত পরিমাণ অর্থ তহবিল প্রয়োজন?
এই তিনটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র সরকার জানিয়ে দিয়েছে, ১৮ মাসের বকেয়া সরকার দেবে না কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের।
ডিয়ারনেস অ্যালাওয়্যান্স বা ডিএ (Dearness Allowance – DA) কী?
রোজকার জীবনযাত্রা ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে এবং প্রকৃত মূল্যের ক্ষয় থেকে মৌলিক বেতন/পেনশনকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী/পেনশনভোগীদের মহার্ঘভাতা/মহার্ঘত্রাণ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বছরে দু’বার ডিএ/ডিআর দেওয়া হয়। ১ জানুয়ারি এবং ১ জুলাই পর্যালোচনা করে মহার্ঘভাতার শতাংশ পুনর্নির্ধারণ/বৃদ্ধি করে সরকার।