Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeকলকাতাMarichjhapi Massacre: ৪৪ বছর পার, আজও দগদগে মরিচঝাঁপির অভিশপ্ত সেই দিন

Marichjhapi Massacre: ৪৪ বছর পার, আজও দগদগে মরিচঝাঁপির অভিশপ্ত সেই দিন

Follow Us :

কলকাতা: লেখাটা শুরু করা যাক প্রয়াত আরএসপি নেতা (late RSP leader ), প্রাক্তন বিধায়ক (former MLA) অশোক চৌধুরীর (Ashok Choudhury) বক্তব্য দিয়ে। সুন্দরবন এলাকায় বামপন্থী আন্দোলন ও সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অশোকবাবুর বিরাট অবদান ছিল। গত শতকের সাত-আটের দশকে (তখন বামফ্রন্ট সরকার (left fron government) সবে রাজ্যের ক্ষমতায় এসেছে) বা তারও কিছু আগে থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত এলাকায় আরএসপির সংগঠন ছিল জোরদার। সেই সময় সিপিএম (CPM) রীতিমতো সমীহ করে চলত আরএসপিকে। সিপিএমের অভিযোগ ছিল, মরিচঝাঁপিতে উদ্বাস্তুদের (marichjhapi refugees) খেপিয়ে তোলার পিছনে আরএসপির বিরাট অবদান ছিল।

আজ সেই ৩১ জানুয়ারি। ১৯৭৯ সালের এই দিনটিতে মরিচঝাঁপি থেকে বাঙালি উদ্বাস্তুদের তাড়ানোর জন্য সদ্য ক্ষমতায় আসা বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলিতে কতজনের মৃত্যু হয়েছিল, তা নিয়ে আজও রহস্য রয়ে গিয়েছে। কত মানুষের লাশ নদীতে ভেসে গিয়েছিল, তারও হিসেব নেই। সেই সময় ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিস্তর লেখালেখিও হয়।

আরও পড়ুন: Gandhi Assassination: গান্ধী হত্যাকারী গডসেকে ধরে ফেলেছিলেন এক ‘নায়ক’, জানেন কে তিনি?

ফিরে আসি প্রয়াত আরএসপি নেতা অশোক চৌধুরীর কথায়। এক ইন্টারভিউতে তিনি বলছেন, ১৯৭৯ সালের ৩১ জানুয়ারি পুলিশের তরফেই অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল। মরিচঝাঁপিতে লোকজন, জিনিসপত্রের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়। অবরোধ জারি হয়। খাবার ঢুকতে দেওয়া হয় না, ওষুধপত্র, এমনকি জলও। এই সময় মরিচঝাঁপি দ্বীপে খেতে না পেয়ে, অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে বহু শিশুর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর হিসেব কোনওদিন পাওয়া যাবে না। ৩১ জানুয়ারি দ্বীপের বাসিন্দারা মরিয়া হয়ে খাবার ও জল জোগাড়ে বেরিয়ে পড়ে। পুলিশ ওদের নৌকা ধাক্কা মেরে ভেঙে দেয়, ডুবিয়ে দেয়। এরপরেই যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। অসম যুদ্ধ। বহু উদ্বাস্তু নিহত হন। পুলিশ কত রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল, সে হিসেব পাওয়া যাবে না।

অশোক চৌধুরীর বয়ানে, কুমিরমারির আদিবাসী (Kumirmari tribal) মেনি মুণ্ডাকে রান্নাঘরে ঢুকে কেন গুলি করা হল, কে গুলি চালানোর নির্দেশ দিল, আজও তার জবাব মেলেনি। …..ক্রমাগত প্ররোচনা দিয়ে উদ্বাস্তুদের উত্ত্যক্ত করে ক্ষুধায় তৃষ্ণায় তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে ৩১ জানুয়ারির কাণ্ড ঘটিয়েছিল পুলিশ। সরকারের অবরোধের কারণে মরিচঝাঁপিতে অনাহারে, অখাদ্য খেয়ে বিনা চিকিৎসায় কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তার সংখ্যা কোনও দিন জানা যাবে না। তেমনি জানা যাবে না, ওই বছরেরই ১৪ থেকে ১৬ মে চূড়ান্ত অপারেশনে কত হতাহত হয়েছিল, তার হিসেব। অশোকবাবুর মতে, এই গণহত্যা (mass killing) যেভাবেই হোক, চেপে দিতে পেরেছিল প্রশাসন।

আরও পড়ুন: Mood of the Nation Survey: এই মুহূর্তে ভোট হলে মোদি না বিরোধীরা, কে জিতবে? কী বলছে সমীক্ষা

 দণ্ডকারণ্য (Dandakaranya) থেকে বাঙালি উদ্বাস্তুদের (Bengali refugees) চলে আসার ঢল অনেকদিন ধরেই চলছিল। ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে ওই সব উদ্বাস্তু পরিবারের এক তৃতীয়াংশ রাজ্যে পালিয়ে আসে। ১৯৭৫ সালেও অনেকে চলে এসেছিলেন, তখন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের (Siddhartha Shankar Roy) কংগ্রেস সরকারের (Congress Government) পুলিশ বাংলার সীমানার বাইরে ট্রেন থেকে নামিয়ে পিটিয়ে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়। প্রয়াত বিশিষ্ট সাংবাদিক বরুণ সেনগুপ্ত (eminent journalist Barun Sengupta) এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার (Centre), ওড়িশা সরকার (Odisha government), পশ্চিমবঙ্গ সরকার(West Bengal), দণ্ডকারণ্য কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্রিয়াকলাপকেও দায়ী করেছেন। তিনি লিখেছিলেন, হাজার হাজার মানুষের এই শোচনীয় পরিণতির জন্য আমরা, সংবাদপত্রও দায়ী। আমরা এর পিছনে চক্রান্ত খুঁজে বার করার চেষ্টা করছি, উসকানিদাতাদের উপর সব দোষ চাপিয়ে নিজেদের বাঁচাতে চাইছি।

যে কোনও ভাবে এই সব হতভাগ্য মানুষগুলোকে দণ্ডকারণ্যে ফেরত পাঠিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চাইছি। বিভিন্ন মহল থেকে সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল, বামফ্রন্ট সরকার নৃশংসভাবে মরিচঝাঁপি থেকে উদ্বাস্তুদের তাড়িয়েছিল। কিন্তু বামফ্রন্ট সরকারের কট্টর সমালোচক বরুণ সেনগুপ্ত তখন লেখেন, সিদ্ধার্থ রায়ের সরকার জ্যোতিবাবুর সরকারের চেয়ে অনেক নির্দয়ভাবে উদ্বাস্তুদের মোকাবিলা করেছিল। পরে জরুরি অবস্থার সুযোগ নিয়ে উদ্বাস্তুদের মিসায় আটক করে রাখা হয়েছিল, মানা ক্যাম্প ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: Yellow Journalism in Bengal: আবোল তাবোল, পাগলা দাশু সুকুমারের সৃষ্টি, সাংবাদিকের কলমজুড়ে হলুদ অ্যাসিড বৃষ্টি…

মরিচঝাঁপিতে আসলে ঠিক কী ঘটেছিল, কত লোকের মৃত্যু হয়েছিল, তা নিয়ে আজও বহু বিতর্ক রয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭৯ সালের আগে পরে মরিচঝাঁপিতে গিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত করেছেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু সেই রহস্য আজও কাটেনি। সিপিএম এখনও দাবি করে, মরিচঝাঁপিতে পুলিশের গুলিতে মাত্র দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তখনকার অবিভক্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পুলিশ সুপার অমিয় সামন্তের দাবি ছিল, উদ্বাস্তুদের উপর কোথাও বলপ্রয়োগ করা হয়নি। পুলিশের গুলিতে দু’জন মারা যান। তখন বামফ্রন্ট সরকার দাবি করে, এর পিছনে ফ্রন্ট সরকার ফেলার একটা চক্রান্ত ছিল। এর জন্য ফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএম (CPM) ছোট শরিক আরএসপিকেও(RSP) কিছুটা দায়ী করেছিল। কারণ উদ্বাস্তুদের মধ্যে সেই সময় আরএসপির বিশাল প্রভাব ছিল। 

আজ ৪৪ বছর কেটে গিয়েছে। মরিচঝাঁপির সেই অভিশপ্ত দিনের স্মৃতি এখনও অনেকের মনে রয়ে গিয়েছে। আবার কারও কাছে তা ফিকে হয়ে গিয়েছে। ফি বছর এই দিনটিতে মরিচঝাঁপি নিয়ে কিছু আলোচনা, কিছু সভা হয়। এইটুকুই। তারপর সবাই ভুলে যায় মরিচঝাঁপিকে। আজও কেন মরিচঝাঁপির ঘটনার সঠিক তথ্য উঠে এল না, তার কোনও ব্যাখ্যা মেলে না।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
MD Selim | সেলিমের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ, অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট তলব কমিশনের
01:53
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফা আজ, দেশের মোট ৯৩ আসনে ভোট
08:43
Video thumbnail
SSC Scam | 'সুপার নিউমেরিক পদ তৈরি অযৌক্তিক ছিল না', সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল রাজ্যের
02:24
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | জঙ্গিপুরের রঘুনাথগঞ্জে বুথে উত্তেজনা, বিস্ফোরক বিজেপি প্রার্থী ধনঞ্জয় ঘোষ
03:05
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | মুর্শিদাবাদের লোচনপুরে তুলকালাম, মহম্মদ সেলিমকে গো ব্যাক স্লোগান
02:12
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | আজ তৃতীয় দফার ভোট, গণতন্ত্রের মহাউৎসবে মেতেছে সকলে
04:02
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | সকাল ৯টা পর্যন্ত মালদহ উত্তরে ভোট পড়েছে ১৫.৩৩%
07:29
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | জঙ্গিপুরে বুথে উত্তেজনা, TMCকর্মীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি বিজেপি প্রার্থীর
04:56
Video thumbnail
Loksabha Election | ভোট দিতে যাওয়ার সময় ভোগবানগোলায় কংগ্রেস কর্মীদের মারধরের অভিযোগ TMCর বিরুদ্ধে
12:26
Video thumbnail
Loksabha Election 2024 | মুর্শিদাবাদের ৬১ নম্বর বুথে ঝামেলা, BJPর এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ
02:21