সামশেরগঞ্জ: অনেকের জীবিকা বিড়ি বাঁধা, আবার কেউ কেউ নদীতে মাছ ধরে সংসার চালান। দিন আনি দিন খাই এই মানুষগুলো সারাটা জীবন ধরে তিলতিল করে জমানো টাকায় ঘরবাড়ি তৈরি করেছিল। মুহূর্তের মধ্যে গঙ্গায় তলিয়ে গেল ওঁদের স্বপ্নের দোতলা কিংবা তিনতলা বাড়িগুলি। এখন সব হারিয়ে নিঃস্ব ওঁরা।
বছরের পর বছর ধরে গঙ্গাভাঙনের শিকার মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। চলতি বছরেও ফের নদী ভাঙন শুরু হয়েছে সামশেরগঞ্জে। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকে চলছে দফায় দফায় ভয়াবহ নদীভাঙন। শনিবার থেকে ভাঙন ক্রমশ ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। তলিয়ে যাচ্ছে পাড় সংলগ্ন এলাকার ঘরবাড়ি, মানুষজন সব হারিয়ে এখন রিক্ত।
গত সেপ্টেম্বরে বোগদাদনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতাপগঞ্জে প্রথম ভাঙন শুরু হয়। এরপর নদীভাঙন বন্ধ হয়নি। পুজোর মরশুমে এই ভাঙনের জেরে পুজোয় আনন্দের পরিবর্তে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এলাকার বাসিন্দা ছেলেবুড়ো সকলেই। সামশেরগঞ্জের মহেশটোলা গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাথা গুঁজে টিকে থাকার শেষ সম্বলটুকুও চলে গেল গঙ্গাতে। চোখের জল ফেলা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই! তিলতিল করে গড়ে তোলা আস্ত সাধের বাড়িটা নিমেষে কেড়ে নিল গঙ্গা। জীবনে এই দৃশ্য দেখতে হবে দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করিনি।
আরও পড়ুন এবার হাওড়ায় গাড়ি থেকে মিলল প্রায় আড়াই কোটি টাকা, সোনাদানা
শনিবার বিকেল থেকে ফের শুরু হয়েছে ভাঙন। সূত্রের খবর, রবিবার বিকেল পর্যন্ত গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে চারটে বাড়ি। এই বাড়িগুলির মধ্যে একটি দোতলা এবং আরও তিনটে পাকাবাড়ি সটান গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় গ্রামজুড়ে কান্নার রোল পড়ে।
এবার কোথায় যাবেন? কী খাবেন কিংবা আদৌ আর কোনওদিন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন কি না সেই চিন্তায় দিশাহারা ওঁরা। ভবিষ্যতের কথা ভেবে অনিশ্চয়তা ওঁদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
তবে এই বিষয়ে এদিন প্রশাসনের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।