নয়াদিল্লি: মেলালেন তিনি মেলালেন। অবশেষে সোনিয়া গান্ধীই রেফারির শেষ বাঁশি বাজালেন। আগামী ২০ মে, শনিবার সিদ্দারামাইয়া কর্নাটকের কুর্সিতে বসতে চলেছেন। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন ডিকে শিবকুমার। গত শনিবার, ১৩ মে বিপুল ভোটে জেতার পাঁচদিনের মাথায়, বৃহস্পতিবার সব জটিলতার জট কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করল কংগ্রেস। এই ঘটনায় এবারেও প্রমাণ হল, দলের সর্বময় কর্তৃত্বের দণ্ড আজও গান্ধী পরিবারের ঠিকানাতেই রাখা আছে। সোনিয়ার পরামর্শ ও অনুরোধেই এতবড় ‘আত্মত্যাগ’ করতে সম্মত হয়েছেন ‘ম্যাডামের’ একান্ত অনুগত ডিকে শিবকুমার।
ফল বেরনোর পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হতে থাকে। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে এই দুই নেতার রোজ দফায় দফায় বৈঠকেও বরফ গলেনি। মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারকে কিছুতেই গদি ছাড়তে রাজি করাতে পারছিলেন না নেতারা। খোদ দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, কেসি বেণুগোপাল, কর্নাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা সহ তাবড় নেতার যখন ব্যর্থ হন, তখন অতীতের মতো এবারেও জল গড়ায় ১০ জনপথে। সেখানে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গেও দফায় দফায় সাক্ষাতে এবং ফোনে কথা হয়। তাতেও যখন ফয়সালার আলো ফরসা হল না, তখন বল গড়ায় ম্যাডামের কোর্টে। অবশেষে সোনিয়া গান্ধীর কথা শিরোধার্য করেই শিবকুমার ক্ষমতা বিভাজনের দাঁও হাতে নিয়ে এবারের মতো কুর্সির মায়া ত্যাগ করলেন।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee | অভিষেকের আবেদন খারিজ, বাধা রইল না জিজ্ঞাসাবাদে
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন সিদ্দারামাইয়া। তাঁর পরে দায়িত্ব নেবেন শিবকুমার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরুতে বিধায়করা বৈঠকে মিলিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিধানসভার দলনেতা নির্বাচন করবেন। এই সিদ্ধান্তের পর সুরজেওয়ালা টুইট করে জানান, আমাদের একটাই ফর্মুলা, সেটা হল মানুষের সেবা করা। শপথ অনুষ্ঠানে আমাদের সমস্ত শরিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এটা উৎসবের সময় নয়।
গণতন্ত্রের প্রতি কংগ্রেসের উৎসর্গের নজির। যারা গণতন্ত্র রক্ষা ও সংবিধান বাঁচাতে চায় তারাই আমাদের এই অনুষ্ঠানে আসতে পারে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা কেসি বেণুগোপাল জানিয়েছেন, ২০ মে, দুপুর সাড়ে ১২টায় শপথ গ্রহণ হবে। সমমনোভাবাপন্ন দলগুলিকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব। সকলকে স্বাগত জানাই। মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে এই দড়ি টানাটানির ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা স্বৈরতন্ত্রে বিশ্বাস করি না। কংগ্রেস গণতন্ত্রে আস্থা রাখে। সকলের মত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই জয়ের নেপথ্যে সকলের সমান অবদান রয়েছে এবং সকলেই কঠিন পরিশ্রম করে এই জয় ছিনিয়ে এনেছেন।