অঞ্জন কুমার দে, বোলপুর: বান্ধবীর পছন্দ হওয়া জমি লিখে দিতে হবে তাঁর নামে।এই আবদার মেনে না নেওয়ায় এক মহিলার বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়ে তাঁকে গ্রামছাড়া করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের (TMC Panchayet Member) বিরুদ্ধে। এখানেই থামেননি গুণধর পঞ্চায়েত সদস্য। বান্ধবীর নামে জমি না লিখে দিলে মহিলার চার সন্তানকে ঘরে তালা বন্ধ করে বগটুইয়ের মতো পুড়িয়ে মারারও হুমকি দেন ওই তৃণমুল নেতা। আতঙ্কে মহিলা ২৫ দিন ধরে বাড়িছাড়া। মহিলা তিন তিনবার থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। তিনি জানান, তাঁর ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য রিটন খাঁ (Riton Khan)।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বীরভূমের মুরারই দুই নম্বর ব্লকের জাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য রিটন খাঁ। তাঁর দাপটে নাকি গ্রামের লোকজন রীতিমতো তটস্থ থাকেন।কামারখুর গ্রামের বাসিন্দা সুখী বিবি বিড়ি শ্রমিক। স্বামী শাজাহান শেখ চেন্নাইতে শ্রমিকের কাজ করেন। সম্প্রতি গ্রামে ফিরেছেন। কামারখুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় নিজের তিন শতক জমিতে চার সন্তান নিয়ে বসবাস করেন সুখী।
সুখীর অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রিটন তাঁর ভিটের জমি বান্ধবীর নামে লিখে দিতে বলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় রিটন দলবল নিয়ে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে ঘরদোর গুঁড়িয়ে দেন। সুখী জানান, তাঁর এক ছেলেকে মারধরও করা হয়। ছেলের মাথায় ন’টি সেলাই পড়েছে। এর পর তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গ্রামছাড়া করা হয়। তাঁর চার সন্তানকে বন্ধ ঘরে পুড়িয়ে মারা হবে বলেও হুমকি দেয় রিটনের দলবল। ঘটনার পর থেকেই সুখীর স্বামীও ঘরছাড়া।
ঘটনা গত ৬ মার্চের। তার পর থেকে সুখী চার সনাত নিয়ে কার্যত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কখনও রেল স্টেশনে, কখনও আত্মীয়ের বাড়িতে দিন কাটছে অসহায় এই পরিবারের। মঙ্গলবার এক রেল স্টেশনে এই প্রতিবেদক সুখীর খোঁজ পান।
এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় গ্রামে হইচই পরে গিয়েছে। এখন অনেকেই রিটনের কার্যকলাপ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, এটাই তৃণমূলের কর্মসংস্কৃতি। আসলে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে ভরাডুবি্র পর তৃণমূলের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। ওরা বুঝতে পেরেছে, সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে। তাই ধমকানি-চমকানি শুরু হয়েছে।