
কলকাতা: কথায় বলে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। ভ্রমণপিপাসু বাঙালির মন ছুটি পেলেই বলে ওঠে ‘চল মন বেড়াতে যাই’। আর সামনেই তো পুজো। পুজো ((Pujo) মানেই লম্বা ছুটি (Holiday)। ট্রেনের বুকিংও শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। তাই, দেরি না করে ঠিক করে ফেলুন, এবছর পুজোর ছুটি কাটাবেন কোথায়। দূরপাল্লার ডেস্টিনেশন এড়িয়ে যেতে চাইলে নো চিন্তা। দক্ষিণবঙ্গেও এমন কিছু জায়গা রয়েছে, চাইলে অল্প ছুটিতে সেখান থেকে ঘুরে আসতেই পারেন।
১) নাচন- পশ্চিম বর্ধমানের নাচন গ্রাম পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। দুর্গাপুর স্টেশন থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় পুজোর সময়ে অনেকেই ট্রেনে চড়ে এই অঞ্চলে ঘুরতে আসেন। নাচনের ড্যাম ঘিরে গড় অরণ্য, মাঝে বয়ে যাওয়া অজয় নদী, পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন। কলকাতা থেকে দুর্গাপুর যেতে সময় লাগে ঘণ্টা চারেক। দুর্গাপুর স্টেশন থেকে নাচন বাঁধের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। দুর্গাপুরে থাকার জন্য বহু হোটেল রয়েছে।
২) আগরহাটি- পুজোর কটা দিন যদি কলকাতা থেকে খুব বেশি দূরে কোথাও না যেতে চান, সে ক্ষেত্রে আগরহাটি যেতে পারেন। ক্যানিং থেকে আগরহাটির দূরত্বও বেশি নয়। নদীর টাটকা মাছ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে পুজোর কটা দিন বেশ ভালোই কাটবে। আগরহাটিতে ছোট-বড় বিভিন্ন রকম রিসর্ট রয়েছে। প্রায় প্রতিটি রিসর্ট, হোটেলের সঙ্গে রয়েছে বিশাল জলাধার। পর্যটকদের জন্যে মাছ ধরার ব্যবস্থাও রয়েছে। কলকাতা থেকে আগরহাটির দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার। গাড়িতে যেতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মতো। পাশেই রয়েছে বিদ্যাধরী, ইছামতি নদী।
আরও পড়ুন: পুজোর ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার সেরা ৫ জায়গা
৩) দুয়ারসিনি- পুরুলিয়ার অযোধ্যা বা মুরুগুমা বাদ দিলে পর্যটকদের আকর্ষণের আরও একটি কেন্দ্রবিন্দু হল দুয়ারসিনি। শাল-পিয়ালের জঙ্গল, সাতগুদুম নদীর ধারে আদিবাসী গ্রামে পুজোর ক’টা দিন কাটিয়ে দিতেই পারেন। শীত আসার আগে পুজোর এই সময়টা দুয়ারসিনির পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম হয়ে ওঠে। একটা রাত না কাটালে এখানকার সৌন্দর্য অধরাই থেকে যাবে। দুয়ারসিনির পাহাড়ের কোলে সরকারি কটেজ রয়েছে। সেখানে বুকিং পেলে আর কথা নেই। না হলে পুরুলিয়ায় বহু হোটেল রয়েছে। কলকাতা থেকে ট্রেনে ঘাটশিলা পৌঁছে সেখান থেকে গাড়িতে দুয়ারসিনি পৌঁছে যাওয়াই যায়।
৪) বুরাঘুটু- বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর এখন পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তার পাশেই রয়েছে অল্পশ্রুত আদিবাসী গ্রাম বুরাঘুটু। চাইলে পুজোর কটা দিন সেখানে রাত্রিযাপন করতেই পারেন। কংসাবতী নদীর তীরে অবস্থিত এই গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনে রাখার মতো। ভোরবেলা হেঁটে হেঁটেই ঘুরে আসতে পারেন, মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে। হাওড়া থেকে ট্রেনে বাঁকুড়া পৌঁছে সেখান থেকে পৌঁছে যান মুকুটমণিপুর। গ্রামের একেবারে ভিতরে থাকতে না চাইলে, রাত্রিযাপন করতে পারেন মুকুটমণিপুরে।
৫) গড়পঞ্চকোট- পুরুলিয়া জেলার নিতুড়িয়া গ্রামে রয়েছে গড়পঞ্চকোট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে প্রাচীন ইতিহাসের মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে। পাশাপাশি রয়েছে বড়ন্তি হ্রদ, পাঞ্চেত, মাইথন বাধ, জয়চণ্ডি পাহাড়, পঞ্চরত্ন মন্দির, আদি কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, জোড় বাংলা মন্দির। গড়পঞ্চকোট পাহাড়ের কোলে রাত্রিযাপন করতে চাইলে বহু রিসর্ট আছে। সরকারি হোটেলও রয়েছে। হাওড়া থেকে ট্রেনে আদ্রা পুরুলিয়া বা আদ্রা স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গড়পঞ্চকোট পৌঁছনো যায়। তা ছাড়া, নিজের গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন গড়পঞ্চকোট।
দেখুন আরও অন্য খবর: