শহরের কোলাহলে দূরে অনবদ্য এই জায়গাতে চার রাত নিমেষেই কাটিয়ে দিতে পারবেন। প্রকৃতিপ্রেমীদের এ যেন এক স্বর্গ। পাহাড়, ঝরনা, জঙ্গলে মোড়া এই অঞ্চল এক কথায় চোখ ধাঁধানো অপরূপ সৌন্দর্যের সম্ভার। শিলং হল উত্তর পূর্ব ভারতের মেঘালয়ের (Meghalaya) রাজধানী। মেঘালয় হল মেঘের আলয় অর্থাৎ মেঘের বাড়ি। পাহাড়, ঝর্না, জঙ্গলে ঘেরা এই শিলং (Shillong) কে অতীতে বলা হত প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড। বাঙালি শিলং শহরকে মানসচক্ষে দেখেছে কবিগুরুর ‘শেষের কবিতা’র পাতায় পাতায়। তবে সেখানে খুঁজে পাওয়া যাবে না অমিত-লাবণ্য কে। সেখানে খুঁজে পাবেন প্রকৃতির শান্ত শীতল মুগ্ধ করা পরিবেশকে।
এ অঞ্চলের পাহাড়গুলি ভারতের অন্য শৈলশহরগুলির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। চড়াই-উতরাই কম। সারাবছরই এখানে পর্যটকদের আনাগোনা। এখানে আসলেই প্রথমেই তালিকাতে রাখতে হবে ওয়ার্ড লেক। এই স্থান খুব সুন্দর করে সাজানো রয়েছে। রয়েছে একটি মিউজিয়াম। শিলং থেকে চেরাপুঞ্জি (Cherrapunji) যাওয়ার পথে প্রথমে মকডক সেতু পড়ে। এটি একটি ঝুলন্ত সেতু। কিছুটা দূরেই রয়ছে একটি ইকো পার্ক। এই পথে পড়বে গুহা। যা ১৫০ মিটার দীর্ঘ। এই গুহার মুখ থেকেই দেখা যায় সেভেন সিস্টার ঝরনা। শিলং-চেরাপুঞ্জির অন্যতম আকর্ষণ হল নোহকালিকাই ঝরনা।
শিলং শহরে পৌঁছনোর ১৬ কিলোমিটার আগে উমিয়াম লেক (Umiam Lake)। অন্য নাম বড়াপানি। খাসি ভাসায় উমিয়াম শব্দের অর্থ চোখের জল। চারপাশে ছোট ছোট সবুজ টিলায় ঘেরা মনোরম এই সরোবরে বোটিংয়ের ব্যবস্থা আছে। এখানে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের দু দুটো বাড়ি। সেগুলোই ঘুরতে পারবেন। এছাড়াও রয়েছে কাঁচের মত স্বচ্ছ লেক। এই লেকে নৌকা বিহারও করতে পারেন।
আরও পড়ুন:Ranbir | Katrina | Relation | সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাক্তন প্রেমিক-প্রেমিকার মায়েদের লড়াই!
এখানে দেখতে পাবেন এলিফ্যান্ট ঝর্না (Elephant Falls), দূর থেকে দেখলে মনে হবে হাতির সুঁর। শিলং শহর থেকে ২৫ কিমি দূরে রয়েছে মফলং। এই মফলং এ দেখতে পাবেন প্রচুর অর্কিড। সারাবছরই থাকে এখানে পর্যটকদের আগমন। শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ‘শিলং পিক’। আপার শিলং অঞ্চলের মধ্যে এ জায়গাটি পুরোটাই বায়ুসেনার অধীনে। ৬৪৫০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত মেঘালয়ের উচ্চতম এই পয়েন্ট থেকে শিলং শহরের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হতে হয়। চারপাশে পাইন বনের সারি। পাহাড়ের মাথায় আছে ওয়াচটাওয়ার ও ভিউপয়েন্ট।
শহরের ৫ কিলোমিটার দূরে যমজ দুই ফলস বিডন আর বিশপ (Bidon and Bishop Falls)। একই পাহাড় থেকে নেমে এসেছে এই দুই জলপ্রপাত। বাঁ দিকে বিডন আর ডানপাশে বিশপ। দূর থেকে দেখা যায় সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা বিডন-বিশপের সৌন্দর্য। বর্ষাকালে এরা হয়ে ওঠে অপরূপা। শিলং থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরে মেঘালয়ের আর এক বিউটি স্পট মৌসিনরাম। পূর্বে পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টিপাতের স্থানটি ছিল চেরাপুঞ্জি। তাহলে আর দেরী কেন চলে আসুন এই শৈল শহরে, মেঘের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে।
কীভাবে যাবেন:
হাওড়া থেকে গুয়াহাটি যাওয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন ধরে গুয়াহাটি নামুন। সেখান থেকে ভাড়া গাড়ি বুক করে পৌঁছে যাবেন শিলং-এ।