নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের নয়া পাঠ্যবইয়ে ছাঁটাই ‘জাতির জনক’ (Father of Nation)। গত ১৫ বছর ধরে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রদের পাখি পড়ার মতো করে যা পড়ানো হতো, তা বাদ পড়েছে ভোটের ভারতের পাঠ্যপুস্তকে। বিজেপির বিরুদ্ধে ইতিহাস বদলে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। সেই ব্ল্যাকবোর্ড থেকে মুছে যেতে বসেছে গান্ধী হত্যাকাণ্ড (Gandhi Assassination) ও তার ইতিহাস। এনসিইআরটি (NCERT) অথবা স্কুলশিক্ষা বিষয়ক নীতি নির্ধারক স্বশাসিত সংস্থার নতুন দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ্যপুস্তক থেকে এসব ছেঁটে ফেলা হয়েছে। তার কয়েকটি উদাহরণ হল,
‘পাকিস্তান যেমন মুসলিমদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল, কিছু হিন্দুও তেমনই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছিল প্রতিহিংসা। কিন্তু তিনি (Mahatma Gandhi) এই অংশকে পছন্দ করতেন না।’
আরও পড়ুন: Kalna Scam | স্কুলের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ৯ লক্ষ টাকার প্রতারণা প্রধান শিক্ষকের
অথবা
‘হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি গড়ে তোলার কাজে তাঁর পদক্ষেপ উগ্র হিন্দুদের প্রবলভাবে উসকে দিয়েছিল। তাই তারা গান্ধীজিকে হত্যা করতে একাধিক চেষ্টা করেছিল।’
কিংবা
‘গান্ধীজির মৃত্যু দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির উপর আগুন ছড়িয়ে দিয়েছিল। যেসব সংগঠন সাম্প্রদায়িক হিংসা-ঘৃণা ছড়াচ্ছিল ভারত সরকার তাদের উপর ব্যবস্থা নিচ্ছিল। কিছুদিনের জন্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের মতো সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার।’
শুধু তাই নয়, গান্ধী-হত্যাকারী নাথুরাম গডসে (Nathuram Godse) যিনি ‘পুনের একজন ব্রাহ্মণ’ এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, গান্ধীজিকে মুসলিম তোষণকারী বলে ঘোষণা করেছিলেন। তাও দ্বাদশের ইতিহাস বইয়ের পাতা থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও এনসিইআরটি-র বক্তব্য, এইসব ব্যাখ্যার কোনও তাৎপর্য আছে বলে তারা মনে করে না। কিন্তু, ঘটনাচক্রে এই বাক্যগুলি ১৫ বছর পর বাদ দিয়ে নতুন পাঠ্যপুস্তক বাজারে এসে গিয়েছে।
সংস্থার ডিরেক্টর ডিএস সাকলানি বলেন, এসব নতুন কিছু নয়। আগের বছরই সামঞ্জস্যপূর্ণ সিলেবাস তৈরি করা হয়েছিল। এ বছর নতুন করে কিছু বদল করা হয়নি। তৃতীয় এবং শেষ দৃষ্টান্তটি হল গুজরাত দাঙ্গার প্রসঙ্গ। একাদশের সমাজ বিজ্ঞানের বইতে এই প্রসঙ্গটিই ছেঁটে ফেলে হয়েছে। গোটা একটি প্যারাগ্রাফ ছেঁটে দেওয়া ছাড়াও ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে একটি বাক্যও উচ্চারণ করা নেই।