Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeদেশJahangirpuri: শাহিনবাগ-দিল্লি হিংসা-জাহাঙ্গিরপুরী কেন চুপ হিন্দু সমাজ? দেশ চলেছে কোন দিকে!

Jahangirpuri: শাহিনবাগ-দিল্লি হিংসা-জাহাঙ্গিরপুরী কেন চুপ হিন্দু সমাজ? দেশ চলেছে কোন দিকে!

Follow Us :

বুলডোজার এসে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে অস্থায়ী ঝুপড়ি, চালা, দোকান-ঘর। পুরসভার ক্রেন গরিব মানুষের শেষ সম্বলটুকু ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে ছুড়ে ফেলছে আস্তাকুড়েয়। অসহায় মানুষের আর্তি কানে পৌঁছলেও চুপ করে আছেন জাহাঙ্গিরপুরীর প্রতিবেশীরা। কোনও প্রতিবাদ নেই। কোনও প্রতিরোধ নেই। ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের বিপদে আর এক সম্প্রদায়ের মানুষ মুখে কুলুপ এঁটেছেন। না, এ ঘটনা শুধু দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীর নয়। গত কয়েক বছর ধরে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, জম্মু-কাশ্মীর সর্বত্র একই ছবি। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

কাকতালীয় ঘটনা না। তথ্য এবং পরিসংখ্যানে এটা প্রমাণিত, এই সমস্ত রাজ্য এবং জায়গায় প্রশাসক হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এই সব ঘটনা থেকে একটা বার্তা খুব স্পষ্ট। কোনও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় কোনও মুসলিম জড়িত থাকলে, সে তিনি যদি আক্রান্তও হন, প্রশাসকের চোখে দায়ী তিনিই। আর তাই তাঁর জীবনজীবিকা, রুটি-রুজি, বাসস্থান কোনও কিছুই আর স্থায়ী নয়।

মধ্যপ্রদেশ বা উত্তরপ্রদেশে যা হয়, তা তো জম্মু-কাশ্মীরে হয় না। দাঙ্গা হয় না। গোষ্ঠী সংঘর্ষ হয় না। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে এখন প্রশাসনই শাস্তির যাবতীয় ভার হাতে তুলে নিয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের নাগরিক হলেই চলবে। শাস্তির জন্য কোনও প্রমাণের, কোনও তদন্তের দরকার পড়বে না। মধ্যপ্রদেশের খারগোন। গত কয়েক দিন আগেই বুলডোজার গুঁড়িয়ে দেয় পাথর ছোড়ায় অভিযুক্তদের বাড়ি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই সমাজ মাধ্যমে এক সংখ্যালঘু মানুষের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যাঁর সঙ্গে ওই ঘটনার কোনও যোগাযোগ নেই।

‘বুলডোজার-সভ্যতা’ এখন তাই হিন্দু-সমাজের নীতিপুলিস বা মোড়লের সমার্থক। মুসলিম বিরোধিতার যাবতীয় ঘৃণ্য গোপন ইচ্ছেকেও এখন খোলামেলা সার্টিফিকেট দিচ্ছে বুলডোজার। হিন্দু সন্ত-সাধুরা খোলামেলা ভাষণে শাস্তি হিসেবে ধর্ষণের বিধান দিচ্ছেন। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল করা হচ্ছে সেই নির্দেশ। ঘৃণাভাষণের সুনামি চলছে। ক্ষমতায় যে শাসক দল তারাও তো তাইই চাইছেন। ঠিক যেমন চাইছে হিন্দু-ইকো সিস্টেম।

এখানেই শেষ না এই একই মুসলিম বিদ্বেষের বিষ ছড়িয়ে পড়ছে ঘরোয়া আলোচনায়, খাবার টেবিলে। পরিবার-বন্ধুদের হোয়াটস-অ্যাপ গ্রুপে। অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন আমলাদের আলোচনায়, পুলিস এবং সেনা-অফিসারদের ব্যক্তিগত আড্ডাতেও।

হিন্দু হলে সাত খুন মাফ। সে আপনি যদি অস্ত্র হাতে কোনও শাহিনবাগে গুলি চালিয়ে থাকেন তাও। ঘৃণা ছড়ানোর জন্য সমাজ আপনাকে সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছে। আর উলটো দিকে? একজন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ তিনি যদি প্রতিবাদ করেন, প্রতিবাদ করেন তা হলে তাঁর জন্য অবশ্য করে লেখা আছে ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইন’। ইউএপিএ। দীর্ঘ আইনি ঝামেলা। এমনকি দীর্ঘ জেলবন্দি জীবন।

এর থেকে পরিত্রাণ কী উপায়ে? দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আদৌ কিছু কী করার আছে? সমাজ কাঠামোর দিকে তাকালে স্পষ্ট, হিন্দুরা ক্ষমতার একাধিক কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে। প্রশাসনে। রাজনীতিতে। পুলিসে। বিচারব্যবস্থায়। কোথাই নেই? কিন্তু হিন্দু সমাজের এটা মরে রাখতে হবে, নিজের পেশা-ভবিষ্যৎ আছেই। তারও আগে দাঁড়িয়ে আগে দেশ এবং দেশের সংবিধানের ভবিষ্যৎ। তাই যখনই প্রয়োজন হবে, যখনই মনে হবে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে হবে। সমাজের চৈতন্য আর ভারসাম্য ধরে রাখতে হবে। তবেই দেশ বাঁচবে। কিন্তু তার আগে দেশের হিন্দুদের পথ বেছে নিতে হবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular