ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার রায় পুনর্বিবেচনা করার রাজ্যের আর্জি খারিজ হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য। অপরদিকে, আবেদনকারীদের তরফে এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: গোয়েন্দাদের হাতেই এটিএম জালিয়াতির ‘ব্ল্যাক বক্স’
নির্বাচন পরবর্তী হিংসা মামলার রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্য যে আর্জি জানিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ সোমবার তা খারিজ করেছে৷ রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে গত শুক্রবার, ১৮ জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে (NHRC) কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High court) পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ৷ নির্দেশে এই কমিটিকে সাহায্য করতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে (Govt of WB)৷ সেই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে হাইকোর্টে পাল্টা হলফনামা পেশ করে রাজ্য সরকার।
এদিনের শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল অ্যাটর্নি জেনারেল কিশোর দত্ত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে বলেন, ‘গত ১৮ জুন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় বৃহত্তর বেঞ্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলো৷ এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করা হোক৷’ একইসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘গত ১৮ জুনের রায়ের প্রয়োগ আগামী দু’দিন স্থগিত রাখা হোক৷ কারণ, রাজ্য এই বিষয়ে লিখিত হলফনামা জমা দিতে চায়৷ হলফনামা দেওয়ার সুযোগ চাইছি৷’
বিচারপতি সৌমেন সেন অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জানতে চান, ‘কত সংখ্যক অভিযোগ আপনাদের কাছে এসেছে? বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন জানতে চান – জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জমা পড়েছে। হয়তো রাজ্য মানাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়ে কিছু হচ্ছে না, তাই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ভোটের ভরাডুবির কারণ খুঁজছে বাম-কংগ্রেস
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এখনও রাজ্য মানবাধিকার কমিশন কোনও অভিযোগ আমার কাছে পাঠায়নি।’ বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা তো বলেছি কমিটি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট আদালতে জমা করবে। বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘আমরা তো এক্সামিনের মাধ্যমে ইনপুট চেয়েছি মাত্র৷’ মামলাকারীর আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, ‘রবিবার রাতেও উত্তর ২৪ পরগনা ও বর্ধমানে এই ধরনের ঘটনা পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও পুলিশ প্রশাসন কিছু করছে না।’ বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পরবর্তী হিংসার বিচার করছি। আমরা প্রশাসনিক বিচার করছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন যদি দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই ধরনের সংঘর্ষ হয়, তবে আদালতের পক্ষে তা বিচার করা খুবই কঠিন৷ আবেদনকারীদের মনে রাখতে হবে আমরা শুধুমাত্র নির্বাচন পরবর্তী হিংসার বিচার করছি। প্রতিদিনের সংঘর্ষের নয়।’ মামলাকারীর আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল জানান, ‘গত ১৮ জুনের রায় পুরোপুরি অন্তর্বর্তী রায়। এই রায় স্থগিতের প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের বক্তব্য, ওই রায় অনুযায়ীই আদালতে রিপোর্ট দাখিল করা হোক।’
এর পরেই বৃহত্তর বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্যের আবেদন গ্রহণ করছে না আদালত৷ রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্য যে আবেদন করেছে, তা খারিজ করা হল৷