কলকাতা : বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি দলীয় (বিজেপি) নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন । এবারের কলকাতা পুরভোটে একদা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা সেই জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়া নজির । ৩৭ হাজার ৬৬৮ ভোটে জিতে পুর-প্রার্থীদের মধ্যেই চ্যালেঞ্জ তৈরি করে ফেললেন । আর ছোট লাল বাড়ির টিকিট পাওয়ার লড়াইয়ে অনন্যাকেও টক্কর দিয়েছেন আর এক জন । তিনি রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খানের ছেলে ফৈয়াজ আহমেদ খান । ৬২ হাজার ৪৫ ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি ।
ফৈয়াজ প্রার্থী হয়েছিলেন কসবা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে । ওয়ার্ডের নিরিখে যা ৬৬ নম্বর । ২০১৫ এবং এই বছর পর পর এখান থেকে লড়ে জিতলেন ফৈয়াজ । ওই ওয়ার্ডেই ১৫ বছর কাউন্সিলর ছিলেন তাঁর বাবা, পাঁচ বছর ছিলেন তাঁর মা-ও। অস্ট্রেলিয়া থেকে ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফৈয়াজ বস্তিবাসীর সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন । গত বার ফৈয়াজ পেয়েছিলেন ৩৯, ১৬৪ ভোট । দুই নম্বরে ছিল বিজেপি । তাদের খাতায় ছিল পাঁচ হাজারের সামান্য কিছু ভোট । সন্দেহ নেই, এ বার ৬২ হাজারের বেশি ভোটে জিতে ফৈয়াজ আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিলেন ।
৬২ হাজারের বেশি ভোটে জেতা ফৈয়াজের পরই আলোচনায় অনন্যা । প্রাক্তন এই বিমান সেবিকা যাদবপুরের ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন । প্রথম থেকেই প্রচারের আলো ছিল অনন্যা কেন্দ্রীক । বহুদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই রয়েছেন অনন্যা । তবু বিজেপি পরিবারের হেঁশেলে তৃণমূল ঢুকে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছিল বিজেপি । এমনকি ওই ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী দেবিকা মুখোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তাঁর হয়ে এক বারও প্রচারে আসেননি জয় । এলাকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা জানিয়েছিলেন, জয়কে এখানে প্রচারে আসতে অনুরোধ করা হলেও তিনি রাজি হননি । স্বভাবতই বামেদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ওই ওয়ার্ডে এই ‘ত্রিমুখী’ লড়াই হবে বলেই মনে করেছিল শহরবাসী । কিন্তু, বাস্তবে ভিন্ন ছবিটাই দেখা গেল । ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে অনন্যা পেয়েছেন ৮২ শতাংশ ভোট। অনন্যা-ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল বিরোধীরা ।