বারাসত: সন্দেশখালি (Sandeshkhali Incident) সারা বাংলায় ঝড় তুলবে, পথ দেখাবে। ওই ঘটনা গোটা দেশের মাথা হেঁট করে দিয়েছে। বারাসতের কাছারি ময়দানের জনসভা (Public Meeting barasat) থেকে বুধবার এই ভাষাতেই সন্দেশখালি ইস্যুতে তৃণমূলকে তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। বুধবার মোদি তৃণমূলকে মাফিয়ারাজ, তোলাবাজ বলেও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, সন্দেশখালির মা-বোনেদের উপর অত্যাচার করে তৃণমূল পাপ করেছে। টিএমসির মাফিয়ারাজদের অত্যাচার রুখে দিয়েছে সন্দেশখালির মহিলারা। তারাই বাংলার দুর্গা বাহিনী। শাসকদলের অপমানের শিক্ষা দিতে নারীশক্তি আজ পথে নেমেছে। সেখানকার মহিলারা দেখিয়ে দিয়েছে কী ভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হয়।
এদিন বিজেপির মহিলা মোর্চা কাছারি ময়দানে নারী শক্তি বন্দন সমাবেশের ডাক দিয়েছিল। সমাবেশে মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মঞ্চেও ছিল তৃণমূলের প্রমিলা বাহিনী। বিজেপির মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সভানেত্রী থেকে শুরু করে রাজ্য মহিলা মোর্চার নেত্রী, মহিলা বিধায়ক, সাংসদরা হাজির ছিলেন। সমাবেশে আনা হয়েছিল সন্দেশখালির কয়েকজন নির্যাতিতাকেও। মঞ্চে ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রমুখ। তবে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে মঞ্চে দেখা যায়নি। আরামবাগ এবং কৃষ্ণনগরে মোদির সভাতেও দিলীপের গরহাজিরা অনেকের নজর কেড়েছিল।
আরও পড়ুন:
আরামবাগ, কৃষ্ণনগরের মতো এদিন বারাসতের সভাতেও সন্দেশখালি নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির মুখে ছিল বাংলার মহিলাদের বন্দনা। মহিলাদের জয়গান গেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলা রানি রাসমণি, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, মাতঙ্গিনী হাজরা, বীণা দাসের ভূমি। বাংলা হচ্ছে মাতৃশক্তির প্রেরণাভূমি। সেই বাংলায় তৃণমূল সরকার মহিলাদের উপর অত্যাচার করছে। তৃণমূল সরকার বাংলার মহিলাদের সম্মান দেয় না। যে মাফিয়ারা মা বোনেদের অসম্মান, অত্যাচার করে, তাদেরই আড়াল করছে তৃণমূল সরকার। অপরাধীদের বাঁচাতে ওরা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে। তবু ওদের কিছু যায় আসে না। তিনি আরও বলেন, তোলাবাজদের হয়ে কাজ করা তৃণমূল সরকার মেয়েদের কথা শুনবে না। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ধর্ষণের মতো অভিযোগের জন্য ফাঁসির সাজার ব্যবস্থা করেছে, সেখানে এই রাজ্যে মহিলাদের কথা ভাবে না তৃণমূল। মহিলাদের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কী কী করেছে, তার লম্বা ফিরিস্তি দিয়ে মোদি বলেন, আমরা হেল্পলাইন করেছি। কিন্তু তৃণমূল সরকার তা চালু করছে না। তৃণমূল মা-বোনেদের সুরক্ষা দিতে পারে না। বরং অত্যাচারী ভ্রষ্টাচারী নেতাদের উপরই সরকারের ভরসা।
বিজেপি মহিলাদের কতটা সম্মান করে তা বোঝাতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কথাও তুলে ধরেন মোদি। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ভাজপা সরকারের আমলে দেশে নারীশক্তির ক্ষমতায়ন ঘটেছে। এনডিএ সরকার দেশের ক্ষমতায় এসে শুরু করেছে বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও কর্মসূচি। আজ ঘরে ঘরে মেয়েরা শিক্ষার আলো দেখেছে। জনধন যোজনায় কয়েক কোটি মহিলা অ্যাকাউন্ট খুলেছে। কৃষিক্ষেত্রে, শিল্পে, কুটি শিল্পে মহিলারা অগ্রণী। কেন্দ্রীয় সরকার মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে একগুচ্ছ প্রকল্প এনেছে।
দেখুন ভিডিও: