কলকাতা: সন্দেশখালির (Sandeshkhali Case) ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বৃহস্পতিবার বিধানসভায় (WB Assembly) জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই না। আমি রাজ্য মহিলা কমিশন এবং প্রশাসনকে সেখানে পাঠিয়েছি। তবে তিনি স্বীকার করে নেন, স্থানীয় মানুষের কিছু ক্ষোভ ছিল এবং এখনও রয়েছে। সরকার তা নিয়ে কথা বলছে। যথাযথ সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে। তিনি জানান, মহিলা পুলিশের একটি দল গঠন করা হয়েছে। সেই দলের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের অভাব অভিযোগ শুনছেন। সেই রিপো্র্ট পেলে সরকার পদক্ষেপ করবে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সন্দেশখালির ঘটনার পিছনে বিজেপির প্ররোচনা রয়েছে। ক্যামেরায় মুখ ঢাকা যাদের দেখা গিয়েছে, তাদের বাইরে থেকে আনা হয়েছিল। তাদের ধরা হয়েছে।
সন্দেশখালি নিয়ে এতদিন প্রায় নীরবই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকদিন আগে আরামবাগ যাওয়ার পথে ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, রাজ্য সরকার যথাযথ পদক্ষেপ করেছে। যারা গোলমালে অভিযুক্ত, তাদের ধরা হয়েছে। মহিলা কমিশনকে পাঠিয়েছিলাম। তারা রিপোর্ট দিয়েছে। তারপর থেকে মুখ্যমন্ত্রী আর সন্দেশখালি নিয়ে মুখ খোলেননি। বিরোধী বিজেপি সদস্যরা বারবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন।
এদিন বাজেট বিতর্কের জবাবি ভাষণ দিতে বিধানসভায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তিনি ভাষণ শুরু করার আগেই বিজেপি বিধায়করা ওয়াকআউট করেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপর পুলিশের হামলা এবং ছয় বিধায়ককে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে বিজেপি সদস্যরা বিক্ষোভ দেখান।
আরও পড়ুন: সাংসদ পদ ছাড়ছেন যাদবপুরের মিমি, মুখ্যমন্ত্রীকে জানালেন
মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বলেন, বিজেপি কীভাবে বাইরের লোকজনকে নিয়ে আসে, তা প্রকাশ্যে এসেছে। কেমন করে তারা হিংসায় প্ররোচনা দিয়েছে, তাও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বিজেপির মূল লক্ষ্য ছিল শাহজাহান। ইডি তাঁকে নিশানা করেই এসেছিল। প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে ইডি আক্রান্ত হওয়ার পর এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শাহজাহানের নাম শোনা গেল। তবে তিনি দলের দুই জেলা পরিষদ সদস্য উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরার নাম করেননি। তৃণমূল বিজেপির পাশাপাশি হিংসায় মদত দেওয়া নিয়ে সিপিএমের নাম উল্লেখ করলেও মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সিপিএমের নাম নেননি।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সন্দেশখালিতে বিজেপি আদিবাসী এবং সংখ্যালঘুদের মধ্যে লড়াইয়ের রং চড়িয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, ওই এলাকায় আরএসএসের জোর রয়েছে। মমতা জানান, সাত-আট বছর আগে সেখানে দাঙ্গা হয়েছিল। এলাকাটি স্পর্শকাতর। সরস্বতী পুজোর সময় প্রশাসন পরিস্থিতি ভালোভাবে সামাল দিয়েছে। বিজেপির অন্যরকম পরিকল্পনা ছিল।
অন্য খবর দেখুন