আমেদাবাদ: কে এল রাহুলের (KL Rahul) প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ইন্দোরে (Indore) তৃতীয় টেস্টে শুভমান গিলকে (Shubman Gill) খেলিয়েছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ইন্দোরের ‘ভয়াবহ’ পিচে কিছু করতে পারেননি শুভমান। তাঁকে দোষ দেওয়া যায় না। গোটা টিম যখন একবার ১০৯ আর একবার ১৬৩ রানে বান্ডিল হয়ে যায় তখন আলাদা করে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার কোনও যুক্তি নেই। আমেদাবাদে ব্যাটিং সহায়ক পিচ পেয়েই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। হাঁকিয়েছেন দুরন্ত সেঞ্চুরি। এখন প্রশ্ন হল, এবার কি পাকাপাকিভাবেই রাহুলের জায়গায় গিলকে খেলানো উচিত? বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, অবশ্যই। কেন, তার সপক্ষেও রয়েছে যুক্তি।
প্রথমত, অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটার গিল। সেই অনূর্ধ্ব-১৯ এর সময় থেকেই প্রতিভাবান ব্যাটার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে তাঁকে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করেছেন। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের দলে খুব বাচ্চা বয়সেই ঢুকে পড়েন তিনি। অবশ্য সে সময় ব্যাক-আপ প্ল্যান হিসেবে ঢুকেছিলেন গিল। সর্বোচ্চ পর্যায়ের শুরুটা একটু কঠিন হয়েছিল। ফের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে যান এবং আবারও ভারতীয় দলে জায়গা পান। ২০২০-২১ অস্ট্রেলিয়া সিরিজে (Australia Series) তাঁর ব্যাটিং সবার নজর কাড়ে। সাধারণ দর্শক থেকে বিশেষজ্ঞ, সবারই মনে হয়েছে, বিরাট কোহলির পরে (Virat Kohli) ভারতীয় ক্রিকেটের মহাতারকা হবেন শুভমান গিল।
আরও পড়ুন: Border-Gavaskar Trophy | আমেদাবাদ টেস্ট ড্র, ম্যান অফ দ্য ম্যাচ কোহলি, সিরিজ সেরা অশ্বিন-জাদেজা
দ্বিতীয়ত, শুধু প্রতিশ্রুতিতেই আটকে থাকেননি ডানহাতি ব্যাটার। পারফর্ম করেছেন। সাম্প্রতিক কালে তো বিধ্বংসী ফর্মে রয়েছেন। যে ফর্ম্যাটই হোক না কেন, তাঁর ব্যাটের শাসন চলছে। টি২০তে ১০০ করেছেন, ওয়ান ডে-তে ২০০। এবার টেস্টে সুযোগ পেয়ে সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ডিসেম্বর মাসে টেস্ট কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন গিল। তারপর আবার সুযোগ দেওয়া হয় রাহুলকে, ফলে বেঞ্চে থাকতে হয় গিলকে। সুযোগ পেয়েই ফের সেঞ্চুরি। এমন ফর্মে থাকা ব্যাটারকে তো খেলাতেই হবে।
তৃতীয়ত, যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন কে এল রাহুল (KL Rahul)। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে বার বার ব্যর্থ এই ওপেনারকে খেলিয়ে যেত ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। রাহুলের যোগ্যতার উপর একটু বেশিই আস্থা রেখেছিল। ২০১৪ সালে টেস্ট অভিষেক হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৪৭টা টেস্ট খেলে ফেলেছেন তিনি। ৪৭ টেস্ট বড় কম কথা নয়। এখনও ধারাবাহিক হতে পারলেন না তিনি। টেস্টে তাঁর ব্যাটিং গড় মাত্র ৩৩। ভারতের মতো দেশে যেখানে প্রতিভার ছড়াছড়ি, সেখানে ৩৩ গড় নিয়ে দিনের পর দিন একজন জায়গা আটকে রাখবেন তা হতে পারে না। একথা দেরি হলেও বুঝেছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। আর তাই ওপেনিং স্পটটা পাকাপাকিভাবে শুভমান গিলেরই।