কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: অগ্নিগর্ভ ইরাকের শিয়া ধর্মগুরু মোক্তাদা আল-সদরের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পর এবার আমরণ অনশন শুরু করলেন তিনি। তাঁর অনুগামীদের উপর সরকারি নিপীড়ন বন্ধ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁর এই অনশন চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা প্রকৃতপক্ষে ‘ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি’ ছাড়া আর কিছু নয় বলে মনে করেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যালবার্ট উলফ। তিনি বলেছেন, আমি মনে করি না, উনি রাজনীতি থেকে পুরোপুরি স্বেচ্ছা নির্বাসন নেবেন। ইরাকের গুটিকয়েক মানুষের মধ্যে উনি একজন, যিনি এককথায় হাজার হাজার ইরাকি জনতাকে পথে নামাতে পারেন। তাঁর মতে, এই অবস্থায় ইরাকে যদি ফের নির্বাচন হয়, তাহলেও কোনও লাভ হবে না। আগের দুটো নির্বাচনের মতোই স্থায়ী সরকার গঠন হবে না।
এদিকে, ইরাকের রক্তক্ষয়ী লড়াইকে অনেকেই শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করছেন। কারণ, দেশের অধিকাংশ সরকারি বাসভবন এখন সাধারণ মানুষের দখলে। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে জনতার সংঘর্ষে অগুনতি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকা এ ব্যাপারে বেশ রুষ্ট হয়েছে। বাগদাদস্থিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যালিনা রোমানোস্কি বলেছেন, এই অবস্থায় সকলের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত। এই মুহূর্তে শান্তি ফেরাতে সকলকে একসঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর ডাক দিয়েছেন তিনি। ইরাকের নিরাপত্তা, স্থায়িত্ব ও সার্বভৌমত্বকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না। সংঘর্ষ নয়, আলোচনাই এই মুহূর্তের প্রতিষেধক।
যদিও সোমবার সারারাত ধরে বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দেশের কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-খাদিমি সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সদরের শরিক নেতা খাদিমি প্রভাবশালী সদরকে হিংসা থামাতে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন। ইরান তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। কুয়েত সরকার ইরাকে বসবাসকারী নাগরিকদের স্বদেশে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে। তুরস্কও ইরাকি জনতাকে শান্ত থাকার কথা জানিয়েছে।
Pictures of thousands of Iraqi protesters who entered the country’s presidential palace.
Like what happened in Sri Lanka, they are swimming where the president used to swim. These angry people support the leader of the main opposition in the country, Muqtada al-Sadr. pic.twitter.com/eLNcm10Alr
— Mahamed Huseen Omar🇸🇴 (@MahamedHuseenO2) August 29, 2022
আরও পড়ুন: Pakistan Flood: পাকিস্তানের বন্যাদুর্গতদের প্রতি গভীর শোকপ্রকাশ মোদির, খুলতে পারে বাণিজ্যপথ
সোমবার ইরাকি ধর্মগুরু মোক্তাদা আল-সদরের অনুগামীরা বাগদাদের গ্রিন জোনে রিপাবলিকান প্যালেস দখল করে। সদর জানান, তিনি রাজনীতি ছাড়ছেন। এর পরেই প্রতিবাদীরা চড়াও হয় রিপাবলিকান প্যালেসে। মুহূর্তে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সেনাবাহিনী বাগদাদে কার্ফু জারি করেছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা সাতটি সরকারি ভবন দখল করে নিয়েছে। রিপাবলিকান প্যালেসে টিয়ার গ্যাস চলছে।
সদর দুদিন আগেই জানান, তাঁর নিজের এবং অন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলের সদস্য সরকারি পদ ছেড়ে দেবেন। রাজনৈতিক সংকট দূর করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ। গত অক্টোবর মাসে নির্বাচনের পর থেকেই ইরাকে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়। প্রেসি়ডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর মতবিরোধের কারণে ভোট হলেও সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি।