বিশ্বের চারপাশে এমন অনেক কিছুই আছে যা খুবই বিস্ময়কর। আবার অনেক বিষয় আছে য়ার রহস্য বৈতজ্ঞানিকরাও ভেদ করতে পারেনি। বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় জায়গা এরিয়া ৫১ (Area 51)। স্থানটি যুক্তরাষ্ট্রের (United States) অন্যতম গোপনীয় জায়গা। ধারণা করা হয়, এখানে প্রায়ই থাকে এলিয়েনদের আনাগোনা। যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে ও লাস ভেগাস থেকে ১৩৫ কিলোমিটার উত্তরে গ্রুম হ্রদের ধারে রয়েছে এরিয়া ৫১ স্থানটি। জনসাধারণের জন্য নিষিদ্ধ এই স্থানে লুকিয়ে আছে নানা রহস্য।
আমেরিকার নেভাডা স্টেটের দক্ষিণে, লাস ভেগাস থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পাহাড়ঘেরা মরুভূমির মধ্যে আছে নেভাদা টেস্ট অ্যান্ড ট্রেনিং রেঞ্জ। আধুনিক মারণাস্ত্রের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাগার। ২৯ লাখ একর জুড়ে থাকা এই রেঞ্জে আমেরিকা নাকি ৫০০টিরও বেশি পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আমেরিকার ভূখণ্ডে থাকা সবচেয়ে সুরক্ষিত কিছু জায়গা যেমন- পেন্টাগন, হোয়াইট হাউস, নাসার সদর দপ্তর ও বিভিন্ন লঞ্চ প্যাডেও অনুমতি নিয়ে সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারেন। তবে এরিয়া ৫১ এর আশপাশে মিডিয়া বা জনসাধারণের প্রবেশাধিকার একেবারেই নিষিদ্ধ।
তবে আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, ‘এরিয়া-৫১’ হল আমেরিকার সবচেয়ে সুরক্ষিত সামরিক বিমান ঘাঁটি। ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে ‘এরিয়া-৫১’ থেকে আমেরিকার বিখ্যাত ‘ইউ-টু’ গুপ্তচর বিমান তার উড়ান শুরু করেছিল। তারপর থেকে আমেরিকা এখানে ‘এ-টুয়েলভ অক্সকার্ট’, ‘ডি-টোয়েন্টিওয়ান’, ‘ব্ল্যাকবার্ড’, ‘নাইটহক’, ‘বার্ড অফ প্রে’ ও ‘ট্যাসিট ব্লু’ নামের অত্যাধুনিক গুপ্তচর বিমানগুলির পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে আসছে।
এই স্থানের চারপাশে কোনও প্রাচীর দেওয়া না থাকলেও পরিবেশের সঙ্গে গিরগিটির মতো মিশে আছেন হাজার হাজার সেনারা। খালি চোখে তাদেরকে দেখা যায় না। নিষেধ সত্ত্বেও যদি কেউ এরিয়া ৫১ তে প্রবেশের চেষ্টা করে তাহলে সেনারা অতর্কিত গুলি করে মেরে ফেলে। সেই অনুমতিও দেওয়া আছে তাদের।চারপাশে একটি নোটিশ লাগানো আছে, যেখানে লেখা- ‘ইউজ অব ডেডলি ফোর্স অথোরাইজড’। সেনারা ছাড়াও সবার অলক্ষ্যে সেখানে হাজার হাজার মোবাইল সিসি ক্যামেরা, মোশন ডিটেকটর, লেসার ডিটেকটর, সাউন্ড ডিটেকটর, গন্ধ শোঁকার ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোনও আছে।
পাশেই আছে দ্য এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল হাইওয়ে। সেখান থেকে নাকি দেখা যায়, অদ্ভুত সব আকাশযান এরিয়া ৫১ স্থানে ওঠানামা করে। পৃথিবীর কোনও বিমানের সঙ্গে সেগুলোর নাকি কোনো মিল নেই। বিজ্ঞানী বব লেজার বলেছিলেন, এই রহস্যময় ঘাঁটিতে খুব গোপনে সংরক্ষিত আছে এক ভিনগ্রহবাসীর মৃতদেহ। শব ব্যবচ্ছেদ করে আমেরিকা জানতে পেরেছে, প্রাণীটি এসেছে ‘রেটিকুলাম-৪’ নামের এক গ্রহ থেকে। তিনি আরও বলেন, এই ঘাঁটিতে এমন কিছু মৌলিক পদার্থ নিয়ে গবেষণা করা হয় যা আবিষ্কারের কথা আমেরিকা বিশ্বকে জানায়নি। তার মতে, সুপারনোভা বা বাইনারি স্টার সিস্টেম থেকে আমেরিকা সম্ভবত এমন একটি মৌলিক পদার্থ সংগ্রহ করতে পেরেছে। সেই পদর্থ দিয়ে বহু হাইড্রোজেন বোমা বানানো যাবে।
এরিয়া ৫১ কি সত্যিই মিলিটারি বিমান ঘাঁটি, নাকি অন্য কিছু! সেই রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য দশকের পর দশক ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন কৌতূহলী সাংবাদিক ও বিভিন্নদেশের গুপ্তচরেরা। কিন্তু ‘এরিয়া-৫১’ এর দূর্ভেদ্য নিরাপত্তা ভাঙা আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।