জলপাইগুড়ি: কথায় আছে, ঠিক দুপুর বেলা, ভূতে মারে ঢেলা। তবে এখানে ভর দুপুরে নয়, সন্ধ্যা নামলেই উড়ে আসে ঢেলা বা ঢিল। কোথা থেকে আসছে, কারা ছুড়ছে, চেষ্টা করেও তার রহস্যভেদ করা যায়নি। তাই অগত্যা মাথা বাঁচাতে হেলমেট পড়ে রাত কাটাচ্ছেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) কোনপাকরির সরকার পাড়া এলাকার বাসিন্দারা। এক সময় বালি পাচারকারীদের (Sand Smuggler) বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এলাকার লোকজন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পেয়ে বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয় পুলিশ প্রশাসন। আপাতত বন্ধ রয়েছে যমুনা নদী থেকে বালি পাচার। তবে, বালি পাচার বন্ধের বদলা নিতে পাথর ছোড়ার ঘটনা কিনা বুঝে উঠতে পারছেন না সরকার পাড়ার বাসিন্দারা। উপায় না পেয়ে এবার পুলিশের (Police) দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা।
সরকার পাড়ার বাসিন্দারা জানান, একদিন দুদিনের ঘটনা নয়, গত প্রায় কুড়ি পঁচিশ দিন ধরে সন্ধ্যা নামলেই ঢিল পড়ছে পাড়ায়। ঢিল বলতে বড় বড় পাথরের টুকরো। কোথা থেকে আসছে বা কে ছুড়ছে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। শনিবার রাতে রান্না ঘরের বারান্দায় ছেলেকে নিয়ে খেতে বসেছিলেন গজেন্দ্রনাথ রায়। তিনি জানান, আস্ত একটা ঢিল রান্না ঘরের চালে এসে পড়ে। ভয়ে ভাতের থালা ফেলে ছেলে বউকে নিয়ে ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন:Mohammed Salim | TMC | টাইগার না বেড়াল জানি না, রয়্যাল তো বটেই, অভিষেককে নিশানা সেলিমের
গ্রামেরই বাসিন্দা মরিন চন্দ্র রায়, সনাতন রায়ের অভিযোগ আরও মারাত্মক। তাঁদের কথায়, দিন কয়েক আগেই সন্ধ্যায় দুজনে মিলে গল্প করছিলেন। আচমকা একটা ঢিল উড়ে আসে। সনাতন বাবু জানান, অল্পের জন্য মাথাটা রক্ষা পায়। তিনি আরও জানান, গ্রামের ছেলেরা পালা করে পাহাড়া দিলেও কোথা থেকে ঢিল উড়ে আসছে তা এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। ঢিলের থেকে মাথা বাঁচাতে হেলমেট পড়ে যাতাযাত করতে হচ্ছে। উপেন রায় নামে আরেক বাসিন্দার কথায়, প্রথমে ভূতের কাণ্ড বলে মনে হলেও এখন তাঁরা নিশ্চিত উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে ঢিল ছোঁড়া হচ্ছে। কারন সন্ধ্যা নামার পর থেকে রাত বারোটার মধ্যে ঢিল পড়ছে। তারপর সব শান্ত।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মাসুদা বেগম জানান, ঘটনা সত্যিই উদ্বেগের। কারন যে কোনও সময় ঢিলের আঘাতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি পুলিশের নজরে আনবেন তিনি। কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার জানান, যমুনা নদী থেকে বালি পাচার বন্ধ হয়েছে। তবে নতুন এই উপদ্রবের কথা তাঁর জানা ছিল না। অভিযোগ এলে অবশ্যই পদক্ষেপ করবে পুলিশ।