কলকাতা: রাজ্যে বিজেপির সংগঠন শুয়ে পড়েছে বলে মারাত্মক অভিযোগ করলেন পরাজিত প্রার্থী দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁকে যে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে সরানোর দলীয় সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, তাও জানাতে ভোলেননি দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ। বৃহস্পতিবার সকালে নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ জানান. তিনি জেলায় জেলায় সফর শুরু করবেন, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর দাবি, রাজ্য নেতৃত্ব এখনও কোনও পরাজিত প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।
বুধবার দিলীপ তাঁর হারের পিছনে চক্রান্ত এবং কাঠিবাজির উল্লেখ করেছিলেন। নাম না করে রাজ্য নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, গত তিন বছরে দলের সংগঠন বাড়েনি। বিষ্ণুপুরের জয়ী প্রার্থী সৌমিত্র খানও বুধবার অভিযোগ করেন, অযোগ্যদের রাজ্য বিজেপির মাথায় বসানো হয়েছে। যাঁরা কখনও ভোটে দাঁড়াননি, তাঁরা রাজ্যের সংগঠন চালাবেন কী করে।
এদিন দিলীপ আরও খোলাখুলি রাজ্য নেতৃত্বের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভোটে হারজিত হয়। কিন্তু সমস্যা হল, রাজ্যে এখন সংগঠন শুয়ে পড়েছে। কর্মীরা বেরোননি। আমি গতবার মেদিনীপুরে (Medinipur Lok Sabha) বুথভিত্তিক সংগঠন তৈরি করেছিলাম। সাংসদ কোটার টাকায় অনেক কাজ করেছি। মানুষ খুশি ছিল। সব দলের লোক আমার পক্ষে ছিল। যে কোনও কারণেই হোক, দল মেদিনীপুরে আমাকে প্রার্থী করেনি। সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল, সেটা প্রমাণ হয়ে গেল। দিলীপের অভিযোগ, দলের সংগঠন ঢিলে হয়ে গিয়েছে। আমরা এবার প্রথমে লোকই খুঁজে পাইনি। তাই সব জায়গায় আমেদের ভোট কমে গিয়েছে। আর আমাদের হার হয়েছে।
আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলায় ফের অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাকে তলব ইডির
নাম না করে শুভেন্দু-সুকান্তকে বিঁধে দিলীপের মন্তব্য, এত দিন তো সব দোষ দিলীপ ঘোষের ছিল। এখন যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, এই হারের দায় তাঁদের নিতে হবে। জিতলে মালা পরব আর হারলে দায় নেব না, এটা তো হয় না। দিলীপ ঘোষ রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। ১৮ থেকে সংখ্যাটা কমে ১২ হল কেন, এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা বলেন, দলের সংগঠন ঢিলে হয়ে গিয়েছে। আমরা এবার প্রথমে লোক খুঁজেই পাইনি। জেলা থেকে মণ্ডলে নতুন লোক এসেছে। কিন্তু তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি।
দিলীপ বলেন, আমি সভাপতি থাকাকালীন পুরো রাজ্যে ঘুরতাম। দল আমাকে দায়িত্ব দিক বা না দিক, আমি জেলায় জেলায় ঘুরব। আমার ভূমিকা একই থাকবে। যতদিন রাজনীতি করব, ততদিন আমার ভূমিকার বদল ঘটবে না। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলব। আজ থেকেই কাজ শুরু করছি।
বিজেপি এবার এককভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। সরকার গড়তে এখন জেডিইউ, টিডিপির মতো শরিকদের মন যুগিয়ে চলতে হবে বিজেপিকে। ওই দুই দল ইতিমধ্যে পছন্দের একাধিক দফতরের দাবি করে বসেছে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, হাতি কাদায় পড়লে ব্যাঙ লাথি মারে। হাতি তো কাদায় পড়ে গিয়েছে। তবে মোদি শাহ জুটি আছেন। আর নীতীশ কুমার, চন্দ্রবাবু নায়ডুরা পুরনো শরিক। চিনি এদের। একটু বেশি দর হাঁকছেন। সুশাসন দিতেই হবে। সেটা যেন কেউ ভুলে না যায়। আঞ্চলিক দল সবসময় নিজের কথা ভাবে। অনেকে আগে নিজের স্বার্থেই জোট ছেড়েছে আবার নিজেই ফিরে এসেছে। মোদি ভোটের জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি উন্নয়নের জন্য সরকার চালান। উনি একটা রোড ম্যাপ তৈরি করেছিলেন। আমার মনে হয়না এই সব ঘটনায় ওই কাজে খুব বাধা আসবে। আমরা অতীতে তৃণমূলকেও দেখেছি।
দেখুন ভিডিও