Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeচতুর্থ স্তম্ভ4th Piller: এক প্রধানমন্ত্রী, যিনি কেবল দেশের মানুষকে কেবল হোমটাস্ক দিয়েই যাচ্ছেন

4th Piller: এক প্রধানমন্ত্রী, যিনি কেবল দেশের মানুষকে কেবল হোমটাস্ক দিয়েই যাচ্ছেন

Follow Us :

খেয়াল করে দেখুন যে কোনও ক্ষমতা, অথরিটি যা স্বৈরতান্ত্রিক, যা আপনার কাছে বাধ্যতামূলক, তা আপনাকে আপনার দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়, মনে করাতেই থাকে, প্রতিদিন নতুন নতুন কাজের ফিরিস্তি আপনার সামনে এনে হাজির করে। আজ নয় প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের উদ্ভব থেকেই এই ব্যবস্থা চালু আছে। আপনি হিন্দু, আপনি খ্রিস্টান, আপনি মুসলমান, সে আপনি শৈব হন বা বৈষ্ণব, আপনি ক্যাথলিক হন বা প্রোটেস্টান্ট, আপনি শিয়া হন বা সুন্নি এতে গরিষ্ঠাংশ মানুষের কিছুই করার নেই, যে ঘরে জন্ম নিয়েছে, সেই ঘরের ধর্ম পালন। খুব খুব কম সংখ্যক ধর্মান্তরনের কথা বাদই দিলাম। আপনি ৩/৪/৫ বছরের নাদান বালক, কি তারও কম, আপনি প্রণাম করতে শিখলেন, নিজের ইষ্টদেবতা, নিজেদের পুজ্য দেবতার কাছে নিয়ে গিয়ে বলা হল খোকা প্রণাম কর, করলেন। ছুন্যৎ করা হল, ব্যাপটাইজ করা হল। আপনাকে জিজ্ঞেস করে? একবারের জন্যও নয়। এরপর খেলা শুরু। এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। শিবের মাথায় জল ঢালুন, সত্যনারায়ণের সিন্নি দিন, জন্ম থেকে বিয়ে হয়ে শ্রাদ্ধ, নিয়মের তালিকা আছে। মেনে চলতেই হবে। রমজান মাসে রোজা রাখুন, সানডে তে চার্চে যান, কম করে গুড ফ্রাইডে বা ইস্টার স্যাটারডে বা বড়দিনে চার্চ এ যান। টেন কমান্ডমেন্টস এর কথাই ধরুন, সাফ বলে দেওয়া আছে আপনি খ্রিস্টান হলে কী কী করা যাবে না। এদিকে শরিয়ত কী খাবেন থেকে কী পরবেন সব বলা আছে, কোন মাংস হলাল, কোন খাবার হারাম বলা আছে। এবং এসব যদি না করেন? বা ভুল করে করে ফেলেন। তাহলে নরক আছে, দোজখ আছে, হেল আছে। সেখানে কড়ায় তেল ফুটছে, ষন্ডাগন্ডা লোক আছে, ধরে গরম তেলে চোবাবে, উলটো ঝুলিয়ে মারবে। যন্ত্রণায় আপনি ছটফট করবেন, নরক বা দোজখ বা হেল এর দানবেরা, ইবিলিশরা হাসবে। কিন্তু ইশ্বর করুণাময়, ঈশ্বর আপনাকে সন্তান বলেই মনে করেন, গড লাভস ইউ, আল্লা পরম করুণাময়। অর্থাৎ যা বলতে চাইছি তা হল, দেখুন ধর্ম আপনাকে কেবল আপনার দায়িত্ব মনে করিয়ে দেয়, আপনাকে কী করতে হবে তার তালিকা দেয়, কিন্তু ধর্ম না আপনাকে পেটের জোগান দেয়, না চাকরি। ধর্ম বলে সৎ পথে থাকো উন্নতি হবে, কিন্তু উন্নতি না হলে ধর্মের তো কোনও দায় নেই। তবুও মানুষ ধর্মে বিশ্বাস করে, ভগবান, আল্লা, যিশুতে বিশ্বাস করে, সেই বিশ্বাস লক্ষ কোটি সাধারণ অসহায় মানুষকে তার অসহায়তার মুহুর্তে সাহস যোগায়, এটাও সত্যি। ধর্মগুরু, বাবাজী, মাতাজীদেরও ঐ একই মোডাস অপারেন্ডি, ওনারাও আপনাকে কেবল করে যেতে বলবেন, বিভিন্ন নির্দেশ। ঘোড়ার ক্ষুর আনো, বেড়ালের ল্যাজ আনো, ঘৃতকুমারি শাক আনো, প্রবাল আনো, যজ্ঞ করো, দক্ষিণা দাও। যা চেয়েছিলেন তা হল তো হল, হল না তো হল না, আবার কোনও এক বাবাজী মাতাজীর নির্দেশ মেনে চলুন। আমাদের মোদিজী, নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদি হুবহু একরকম, কেবল নির্দেশ দিয়েই চলেছেন। ১০০০/ ৫০০ টাকার নোট বাতিল, যাও লাইনে দাঁড়াও। দাঁড়ালাম। আধার কার্ড এর সংগে মোবাইল লিঙ্ক করো, মোবাইল এর সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, করলাম। এবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এর সঙ্গে আধার কার্ড লিঙ্ক করো, নইলে ট্রানজাকশন ক্লোজ, পড়ি কি মরি করে ছুটলাম। এবার ঝাড়ু লাগাও, লাগাও ঝাড়ু, লাগালাম। শেষ করে উঠেছি কি আদেশ এল থালা বাজাও,বাজালাম। এবার দিয়া জ্বালাও, বাজার থেকে মোমবাতি কিনে এনে জ্বালালাম। বললেন তালি বাজাও। কি কান্ড। ফটাফট তালি দিলাম। উনি রোজ নির্দেশ দিয়েই যাচ্ছেন, মানুষ তা পালন করতে বাধ্য। জিনিষপত্রের দাম বাড়ছে, ওনার কিচ্ছু করার নেই, রান্নার গ্যাস, পেট্রল ডিজেলের দাম বাড়ছে, উনি চুপ। গোরক্ষকরা কথায় কথায় পিটিয়ে মানুষ খুন করছে, উনি মৌন। ধর্ষণের সাজাপ্রাপ্তদের জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, উনি একটা কথাও বললেন না। বেকারত্ব রেকর্ড ছুঁয়েছে, উনি জানেন বলেও মনে হয় না। উনি নিয়ম করে মন কি বাত বলেই যাচ্ছেন আর সেই সব মন কি বাত ফলো করুন, মোদিজীর নির্দেশের বিরাট তালিকা। আমাদের সংবিধানে নাগরিকের অধিকার আর কর্তব্যের কথা লেখা আছে, উনি সেই কর্তব্যের কথাই শুধু বলে চলেছেন। এ জিনিস নতুনও নয়, পৃথিবীর প্রত্যেক স্বৈরাচারী নেতা এই কাজই করে থাকেন। আপনাদের বেশি দূরে যেতে হবে না, জরুরি অবস্থার কথাই অনে করুন। দেওয়ালে দেওয়ালে নাগরিকদের জন্য নির্দেশিকা। বাতে কম, কাম অধিক, হাম দো হামারা দো, দেওয়ালে লেখা থাকতো। তবে সে ছিল এক মোড়কে, ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, দেশ বিপন্ন, মানুষ কে এই কাজগুলো করতে হবে, এবং সেটাও চলেচিল বছর দুই তিন বছর। তাকিয়ে দেখুন জার্মানির দিকে, হিটলার ক্ষমতায় আসার পর ডিক্রির পর ডিক্রি জারি করেছিলেন, নাগরিক নির্দেশিকা, কোথাও ইহুদিদের জন্য, কোথাও সভা, মিছিল বাতিল করা জন্য, কোথাও শ্রমিক সংগঠন বন্ধ করে দেবার জন্য। একই ছবি ইতালিতে মুসোলিনির রাজত্বে। যেখানে মানুষ রোজ অপেক্ষা করতেন নয়া ফরমানের জন্য। আমাদের দেশে মহম্মদ বিন তুঘলকের আমলেও মানুষ সকালে উঠে জানার চেষ্টা করতো আজ পাগলা রাজা কোন আদেশ দিয়েছে তা জানার জন্য। অন্যদিকে ভুল কি ঠিক তা নিয়ে আলোচনা করার অবকাশ থাকলেও দেশে দেশে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাদের কাজের ঘোষণা করে। জনতা সরকার রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করার আদেশ দিয়েছিল, বাম সরকার বেকার ভাতা দেবার নির্দেশ দিয়েছিল, মমতার সরকার সিঙ্গুরে চাষীদের জমি ফেরত দেবার ঘোষণা করেছিল, এই কদিন আগে বিহারে নতুন সরকার বেকারদের চাকরি দেবার ঘোষণা করেছে। ইউরোপের সরকার আসেই নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়ে, ক্ষমতায় এসেই সেই প্রতিশ্রুতিই পালনের কথা বলেন। মোদিজী কেবল মন কি বাত বলেন। আমরা এক সময় রাজীব গান্ধীকে নিয়ে হাসাহাসি করতাম, উনি বক্তৃতায় বলতেন, হামেঁ ইয়ে করনা হ্যায়, আমরা বলতাম আর কবে? এবার করুন। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী? আগের প্রত্যেকের চেয়ে আলাদা। ধরুন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, তিনি বলেছিলেন আমাদের ভারি শিল্প বিকাশ করতে হবে, ইস্পাত কারখানা তৈরি হয়েছিল, বলেছিলন আমাদের বিদুৎ চাই, বিভিন্ন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হয়েছিল, ছোট্ট সময়ের জন্য ছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী এক কৃষক ঘরের সন্তান, কৃষির অগ্রগতির জন্য বিরাট পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন পরমাণু শক্তির কথা, হয়েছিল পরমাণু বোমার প্রথম পরীক্ষা। অটলবিহারি এসে বলেছিলেন সড়ক যোগাযোগের কথা, করেছিলেন। ইনি আলাদা ব্যাপার, কেবল কী করিতে হইবে, আমাদের কী করতে হবে, তার ব্যাখ্যা প্রতিদিন, উনি কী করবেন? কেউ জানে না। সেই সুরেই কদিন আগে তিনি দেশের রাজপথের নাম অদলে দিলেন, নাম কেন রাজ পথ হবে? বললেন, এই রাজ তো সেই ব্রিটিশ রাজ এর কথা মনে করিয়ে দেয়, সে নাম মুছে দিয়ে নতুন নাম হল কর্তব্য পথ। কার কর্তব্য? তিনি খোলসা করেই দিয়েছেন, দেশের মানুষের কর্তব্যের কথা। এবার দেখতে থাকুন, এ তো ছিল ট্রেলার, রাজ্যে রাজ্যে আছে রাজভবন, সেগুলোর নাম কর্তব্য ভবন হবে নিশ্চই, রাজপাল যাদব ভয়ে ভয়ে আছেন তাঁর নাম না বদলে যায়। আসলে ওনার কাজ তো কিছুই করার নেই, তাই অকাজের কাজ করে চলেছেন আর হররোজ পাবলিককে কী করতে হবে, সেটা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। কর্তব্য ওনার নয়, নিরন্ন কে ভাত দেবার কর্তব্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর নয়, কর্তব্য কেবল দেশের নাগরিকের। একটা কবিতা মনে পড়ে গ্যালো, বাংলাদেশের কবি রফিক আজাদের লেখা কবিতা পড়ছি।

ভীষণ ক্ষুধার্ত আছিঃ উদরে, শরীরবৃত্ত ব্যেপে

অনুভূত হতে থাকে- প্রতিপলে- সর্বগ্রাসী ক্ষুধা

অনাবৃষ্টি- যেমন চৈত্রের শষ্যক্ষেত্রে- জ্বেলে দ্যায়

প্রভুত দাহন- তেমনি ক্ষুধার জ্বালা, জ্বলে দেহ

দু’বেলা দু’মুঠো পেলে মোটে নেই অন্য কোন দাবী

অনেকে অনেক কিছু চেয়ে নিচ্ছে, সকলেই চায়

বাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি- কারো বা খ্যাতির লোভ আছে

আমার সামান্য দাবী পুড়ে যাচ্ছে পেটের প্রান্তর-

ভাত চাই- এই চাওয়া সরাসরি- ঠান্ডা বা গরম

সরু বা দারুণ মোটা রেশনের লাল চাল হ’লে

কোনো ক্ষতি নেই- মাটির শানকি ভর্তি ভাত চাইঃ

দু’বেলা দু’মুঠো পেলে ছেড়ে দেবো অন্য-সব দাবী;

অযৌক্তিক লোভ নেই, এমনকি নেই যৌন ক্ষুধা

চাইনিতো নাভি নিম্নে পরা শাড়ি, শাড়ির মালিক;

যে চায় সে নিয়ে যাক- যাকে ইচ্ছা তাকে দিয়ে দাও

জেনে রাখো আমার ওসবের কোনো প্রয়োজন নেই।

যদি না মেটাতে পারো আমার সামান্য এই দাবী

তোমার সমস্ত রাজ্যে দক্ষযজ্ঞ কাণ্ড ঘ’টে যাবে

ক্ষুধার্তের কাছে নেই ইষ্টানিষ্ট, আইন কানুন-

সম্মুখে যা কিছু পাবো খেয়ে যাবো অবলীলাক্রমে

থাকবে না কিছু বাকি- চলে যাবে হা ভাতের গ্রাসে।

যদি বা দৈবাৎ সম্মুখে তোমাকে ধরো পেয়ে যাই-

রাক্ষুসে ক্ষুধার কাছে উপাদেয় উপাচার হবে।

সর্বপরিবেশগ্রাসী হ’লে সামান্য ভাতের ক্ষুধা

ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসে নিমন্ত্রণ করে।

দৃশ্য থেকে দ্রষ্টা অব্দি ধারাবাহিকতা খেয়ে ফেলে

অবশেষে যথাক্রমে খাবো : গাছপালা, নদী-নালা

গ্রাম-গঞ্জ, ফুটপাত, নর্দমার জলের প্রপাত

চলাচলকারী পথচারী, নিতম্ব প্রধান নারী

উড্ডীন পতাকাসহ খাদ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর গাড়ী

আমার ক্ষুধার কাছে কিছুই ফেলনা নয় আজ

ভাত দে হারামজাদা,

তা না হলে মানচিত্র খাবো।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Soumendu Adhikari | সৌমেন্দু অধিকারীর মিছিলে 'বোমা 'বর্ষণ, TMC-র বিরুদ্ধে বোমা মারার অভিযোগ BJP -র
03:05
Video thumbnail
Irfan Pathan | বহরমপুরে দাদার প্রচারে ভাই, ইউসুফ পাঠানের হয়ে প্রচারে ইরফান পাঠান
06:39
Video thumbnail
Yusuf Pathan | Irfan Pathan | ইউসুফ পাঠানের প্রচারে ভাই ইরফান পাঠান, দেখুন ভিডিও
00:17
Video thumbnail
TMC | তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার প্রচারে কৌশানি, প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা অভিনেত্রীর
02:33
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | রামপুরহাটে ভোটপ্রচারে অভিষেক, কী বললেন দেখুন ভিডিও
05:11
Video thumbnail
৪টেয় চারদিক | যিনি ১০০ দিনের টাকা দেননি, তাঁর গ্যারান্টি বীরভূমের মানুষ বিশ্বাস করবেন না: অভিষেকের
43:44
Video thumbnail
Sandeshkhali | 'মহিলাদের নিয়ে যায় বিজেপি নেতা অনুপ দাস', সন্দেশখালির আরেক ভিডিয়ো ভাইরাল
06:45
Video thumbnail
পলিট্রিক্সের গ্রিনরুম (পর্ব ৫) | Pranab Mukherjee | ‘যুধিষ্ঠির’ মুখোপাধ্যায়
59:11
Video thumbnail
Dilip Ghosh | 'দমবন্ধ করে দেব, ঘর থেকে বেরোতে দেব না', ফের বেলাগাম দিলীপ ঘোষ
06:58
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধের দামামা | 'শাসকদলকে নিশানা করে অনেক আলোচনা হচ্ছে', সন্দেশখালি ইস্যুতে TMCর পাশে কংগ্রেস
21:33