বোলপুর: মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে জমি দখলের অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এবারেও খবরের শিরোনামে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) বীরভূম। অভিযোগ, নানুর ব্লকের বাসাপাড়া গ্রামে সরকারি ও দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে বিঘের পর বিঘে জমি দখল করেছেন খোদ বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ আবদুল কেরিম খান (Abdul Kerim Khan)। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন জমিদাতারা। তাঁদের অভিযোগ, মিলন মেলা মাঠের নাম করে পূর্ত-পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ দলের দাপট দেখিয়ে একের পর এক জমি হাতিয়েছেন। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ।
গরু পাচার কাণ্ডে দিল্লিতে ইডির হেফাজতে রয়েছেন বীরভূমের বাহুবলী নেতা অনুব্রত মণ্ডল। কেরিম খান অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত, তা নানুরের মাটিতে কান পাতলেই শোনা যায়। এবার এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেই প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোর করে জমি দখলের অভিযোগ উঠল।
আরও পড়ুন: Visva-Bharati University | পড়ুয়া বিক্ষোভে আবারও উত্তাল বিশ্বভারতী
মঙ্গলবার নানুর ব্লকের বাসাপাড়ায় জমিদাতা আরোবা বিবি, শেখ নুরজাহান, শেখ সাদ্দাম হোসেনদের অভিযোগ, বাসাপাড়া মিলনমেলা মাঠের নাম করে করিম খান জোড়পূর্বক তাঁদের জমি দখল করেছে। এরই প্রতিবাদে এদিন বাসাপাড়া এলাকায় হাতে জমির দলিল নিয়ে বিক্ষোভে নামেন জমি তাঁরা।
যদিও ওই তৃণমূল নেতা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সম্পূর্ণ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমরা গ্রামের মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলাম। সেই বৈঠকে বাসাপাড়া মিলন মেলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে এই জমিগুলি কেনা হয়। আসলে অজয় নদের সুন্দরপুর বালিরঘাটে অবৈধভাবে বালি তুলছে মাফিয়ারা। সেই অভিযোগ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম আমি। তাই কিছু বালি মাফিয়ারা এই সমস্ত গ্রামবাসীদের হুমকি দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এই সব ভুল অভিযোগ তুলে আন্দোলন গড়ে করছে।
সামনেই রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। গরু পাচার কাণ্ডে ইডি হেফাজতে রয়েছে অনুব্রত। এর জেরে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ করিম খান দলের সাংগঠনিক দিক থেকে ক্ষমতা খর্ব হয়েছে। নানুরে তৃণমূলের দায়িত্বে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। কেরিমের ক্ষমতা যাতে খর্ব হয়, তাই গ্রামবাসীরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে বলে এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও এই সব অভিযোগ মানতে নারাজ করিম। অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃমমূলেরই জয় হবে বলে আগেই হুঙ্কার দিয়েছেন কাজল। দায়িত্ব পাওয়ার পর গোটা জেলা চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈঠক করছেন। তবে একদা অনুব্রত বিরোধী কাজল শেখও একাধিক বৈঠকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের একাংশের বিরুদ্ধে দলের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। আবার কখনও অনুব্রতর হয়েও মন্তব্য করেছেন। যদিও অুনব্রত গোষ্ঠী মনে করেছ, কাজল দায়িত্ব পেয়ে এসব নাটক করছে। অনেকের মতে, জেলায় নিজের ক্ষমতা দখলের জন্যই খবরের শিরোনামে আসতে চাইছে কজল। এরই মাঝে কেরিমের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াবে বলে মনে করেছে রাজনৈতিক মহল।