Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeAajke | সুভদ্রার তিন ছেলে ফিরল না ঘরে
Array

Aajke | সুভদ্রার তিন ছেলে ফিরল না ঘরে

Follow Us :

হারান গায়েন, ৫১ বছর বয়স, নিশিকান্ত গায়েন, ৪০ আর দিবাকর গায়েন, ৩৩। এদের জন্য বসে থাকবেন মা সুভদ্রা, এঁরা আর কোনওদিনও ফিরবেন না। আধা মাটি, আধা ইটের ঘরে এদের জামাকাপড় ঝুলছে, এঁদের বউ ছেলেমেয়েরা রয়েছে। মাত্র ক’দিন আগেই সবাই মিলে অষ্টপ্রহর সংকীর্তনে সারারাত কীর্তন শুনেছেন, ডাল ভাত তরকারি খেয়েছেন পাত পেড়ে, ৩০১ টাকা চাঁদা দিয়েছিল গায়েন পরিবার, চাল আলাদা। আজ সেসব অতীত। এখানে কাজ নেই? জমি নেই? আছে তো। কিন্তু সে জমিতে চাষ করে যা আয় হয়, তাতে তো সংসার চলে না। আগে যে সংসার টানাটানি হলেও চলে যেত কোনওরকমে, সে সংসার আর চলছে না। কাজেই মধ্যে যদি কিছু রোজগার করা যায়, আড়কাঠি আছে, তারাই জানিয়েছে চুক্তিতে ধান রোয়ার কাজ অন্ধ্রপ্রদেশে। একদল যাবে, থাকার একটা জায়গা দেবে, দু’বেলা ভাত ডাল সবজি, মাঝে মধ্যে ডিম বা মাছ। দিন কুড়ি কাজ করে খরচ খরচা বাদ দিয়ে মাথা পিছু ৬ কি ৭ হাজার টাকা, তাই বা কম কী? তিন ভাই মিলে ২৫ হাজার কামালে গোটা ৩০ সোনালি মুরগির একটা ফার্ম, বা দুটো ধাড়ি নিয়ে ছাগলের ব্যবসা। কিছু একটা যা এই বাড়তে থাকা মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে লড়তে সাহায্য করবে, ওরা তো ডিএ পায় না। এই মাগ্‌গি গন্ডার বাজারে খাওয়া দাওয়ার পরে জামাকাপড়, ওষুধ আর নতুন একটা ঘরের স্বপ্নের সুরাহা। তাই করমণ্ডলে চেপেছিলেন তিন ভাই, একজনও বেঁচে নেই। গ্রামের মুখ ভার। আজ সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, সুভদ্রার ছেলেরা ফিরল না ঘরে।

এই পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে এক অদ্ভুত বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে এই রেল দুর্ঘটনার পর থেকে। এক অদ্ভুত যুক্তি, রাজ্যে কাজ নেই, রোজগারের ব্যবস্থা নেই, তাই শ্রমিকরা, মূলত কৃষি শ্রমিকরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যাচ্ছেন। তাই মারাও যাচ্ছেন। এ রাজ্যে এমন কথা অনেকেই বলছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারাও বলছেন। সুন্দর পিচাই দেশ ছেড়ে আমেরিকাতে গুগলের মাথায় বসলে আহা কী আনন্দ, কিন্তু কেবল সুন্দর পিচাই যাচ্ছেন তা তো নয়, অসংখ্য তরুণ তরুণী যাচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, কাজ করতে, আরও বেশি রোজগার করতে, আরও বড় মাপের কাজ করতে, ওটা মাইগ্রেশন নয়? এই ক’দিন আগে সামরিক বাহিনীর বিমানে করে সুদানে কর্মরত ভারতীয়দের ফেরত আনা হল, তখন কি এই কথা শুনেছেন? প্লেন অ্যাক্সিডেন্টের সময়ে আলাদা করে এই তথ্য আসে কখনও? আসে না কারণ তারা ট্রেনের জেনারেল বগিতে মুড়ি ছোলা নিয়ে ওঠেনি। 

আরও পড়ুন: Aajke | ধনখড়ের পথেই বাংলার রাজ্যপাল 

যোগাযোগ ব্যবস্থা বেড়েছে, মানুষ অনেক বেশি খবর রাখেন, নিজেদের ধান রোওয়া হয়ে গেছে এবার দিন ২০-২৫ কিছু রোজগার করে আসা যাক। বা গ্রামে তেমন কিছু করে ওঠা যাচ্ছে না, এক বন্ধু বলেছে চলে আয় রাজমিস্ত্রির হেল্পারের কাজ আছে, দল বেঁধে সেখানে গ্রামের ছেলেরা চলে গেল, জরির কাজ জানে, হায়দরাবাদে বেশি মজুরির কাজ আছে, সেখানে চলে গেল। এটা কি অস্বাভাবিক? ক’দিন আগেই নীতিন গড়করি তাঁর ভাষণে বলছিলেন, আমাদের মহারাষ্ট্র থেকে কত মানুষ দিল্লি যায়, কলকাতা যায়, চেন্নাই যায় কাজ করতে তারা কি সেখানে গিয়ে রাজ্যের ভাষা সংস্কৃতি খাবার ভুলে যায়। তিনি স্থানীয় ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলছিলেন, কিন্তু বললেন যে মহারাষ্ট্র থেকেও কলকাতায় মানুষ কাজ করতে আসে। আসে তো। পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে আমরা মাথা ঘামাতে শুরু করলাম তো এই করোনার সময়ে, কেন করলাম? দেশের প্রধানমন্ত্রীর অবিবেচক সিদ্ধান্তের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে দুর্গতির সামনে পড়তে হল, তাই আমরা পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেছিলাম। তা না হলে চিরটা কাল মানুষ দেশ ছেড়ে, রাজ্য ছেড়ে, শহর বা গ্রাম ছেড়ে বাইরে কাজ করতে যায়, যাচ্ছে যাবেও। পরিযায়ী শ্রমিক চেপেছে বলেই তো অ্যাক্সিডেন্ট হয়নি, অ্যাক্সিডেন্টের কারণ তো আলাদা। সেই কারণ থেকে বিষয়টাকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই কি এই পরিযায়ী ব্যাখ্যান তুলে আনা। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা তো আছে, তাঁদের কাজের পরিবেশ ঠিক করা হোক, তাঁদের কাজের সুরক্ষা থাকুক, তাঁদের ডেটাবেস তৈরি হোক, তাঁদের সঙ্গে রাজ্যের প্রশাসনের এক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকুক, যাতে প্রয়োজনে তাঁরা তাঁদের কথা সরকারকে বলতে পারেন। কিন্তু নিতান্তই রেল প্রশাসনের গাফিলতি আর গড়িমসির ফলে এক মারাত্মক দুর্ঘটনাকে পরিযায়ী শ্রমিকদের আলোচনার মধ্যে টেনে নিয়ে গিয়ে জলঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে। আজ গ্লোবাল ইকোনমির জমানায় অদক্ষ, দক্ষ শ্রমিক এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাবে, এটাই স্বাভাবিক, এর সঙ্গে ট্রেন দুর্ঘটনার কোনও সম্পর্ক আছে কি? মানুষ কী ভাবছেন? মানুষ কী বলছেন? শুনুন।

হ্যাঁ, ওই অভিশপ্ত ট্রেনে কিছু পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন, কিন্তু ওই করমণ্ডলেই ফার্স্ট ক্লাস এসির একটা কম্পার্টমেন্ট, সেকেন্ড ক্লাস এসির তিনটে, থ্রি টিয়ার এসির পাঁচটা, স্লিপার ক্লাসের সাতটা বগি ছিল, ট্রেনে সবাই পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন না। হ্যাঁ, রেলের নিয়ম অনুযায়ী ট্রেনের সামনে পিছনে আনরিজার্ভড জেনারেল ক্লাস বগি ছিল থাকে, গাড়ি সামনে ধাক্কা খেলে বা পিছনে, ওই বগিই আগে উল্টোয়, আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ওরাই মারা যায়। সেখানেই দেশের গরিব মানুষেরা থাকে, যারা পেটের জোগাড়ে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যায়, যেতে বাধ্য হয়। এবং সেটা গোটা দেশের ছবি আমাদের বাংলার একার নয়। বিষয় ঘোরাবেন না, সরকারের ব্যর্থতায় এতজন মারা গেছেন কেন? তা নিয়েই আলোচনা হোক। সুভদ্রার তিন ছেলে কেন আর ঘরে ফিরবে না তাই নিয়ে আলোচনাটা জরুরি। 

 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Kolkata Rain | অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়, দেখুন ভিডিও
00:40
Video thumbnail
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR? দেখুন দর্শকদের জন্য ক্যুইজ
13:48
Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধে রণহুঙ্কার | পাতাল থেকেও খুঁজে বের করব, মমতাকে কটাক্ষ অমিত শাহের
04:20
Video thumbnail
Garia News | গড়িয়ার ৫২ পল্লিতে ৩০ রাউন্ড কার্তুজ, ৫ কেজি বারুদ, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
02:21
Video thumbnail
Amit Shah | 'মমতার সাহায্যে সরকার চালিয়েছে কংগ্রেস', বিস্ফোরক দাবি শাহের
03:58
Video thumbnail
Sandeshkhali | সন্দেশখালিতে মুখোমুখি রেখা-হাজি নুরুল, বিজেপি প্রার্থীর হয়ে বাজি ধরছেন সুজয় মাস্টার
03:31
Video thumbnail
Lalbazar | 'রাজভবন- অনুসন্ধান ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়', রাজভবনকাণ্ডে বিবৃতি লালবাজারের
03:13
Video thumbnail
Sukanta Majumder | সাংবাদিক বৈঠক থেকে তৃণমূলকে তোপ সুকান্ত মজুমদারের
05:28
Video thumbnail
৪টেয় চারদিক | বিজেপি চাকরিখেকো বাঘ, দুর্গাপুর থেকে হুঙ্কার মমতার
43:57
Video thumbnail
Abhijit Ganguly | 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার রাজ্য কোষাগারের টাকা' : অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
02:29