Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeBig newsরেস্ত নেই, নেই জ্বালানি, কোথায় যাবেন গাজাবাসী?

রেস্ত নেই, নেই জ্বালানি, কোথায় যাবেন গাজাবাসী?

উত্তর গাজা যেন জীবন্ত কবরস্তান, শুনশান রাস্তা, শুধু অ্যাম্বুল্যান্সের শব্দ

Follow Us :

উত্তর গাজা: রাস্তাঘাট শুনশান। মাঝেমধ্যে শুধু অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। মানুষজন ঘরের মধ্যে বসে কান পেতে শুনছেন ঘড়ির টিকটক শব্দ। সময় যে কমে আসছে। এই অবস্থায় কী করা যায়? তা ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছেন না উত্তর গাজাবাসী (Gazans)। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজা শহর খালি করে দক্ষিণ প্রান্তে চলে যাওয়ার ইজরায়েলি (Israel) হুমকির পরে সাধারণ মানুষ শুধু ঘড়ি দেখে চলেছেন। পথেঘাটে লোকজন উধাও।

উধাও হামাসের (Hamas) বাহিনীও। যদিও তারা বাসিন্দাদের ঘরে থাকতেই বলেছে। ইজরায়েল মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে ভুয়ো প্রচার করছে বলে হামাসের দাবি। কিন্তু, সাধারণ প্যালেস্তিনীয়রা (Palestine) মনেপ্রাণে তা বিশ্বাস করতে নারাজ। কেউ কেউ যথাসম্বল নিয়ে বেরিয়েও পড়েছেন পথে।

আরও পড়ুন: ১৬ ঘণ্টা পরেই গাজা আক্রমণ, পালাচ্ছেন শহরবাসী

উত্তর গাজা অঞ্চলের ইন্টারনেট অকেজো, ফোন পরিষেবা বিকল। ফলে অনেকে এখনও ভালোভাবে জানেনই না যে, ইজরায়েল সেনাবাহিনী ঠিক কী বলেছে! অনেকই সাংবাদিক দেখলে জানতে চাইছেন, এটা কি সত্যি? নাকি কোনও ভয়ঙ্কর স্বপ্ন! কী ঘটছে! ১৬ বছর ধরে যুদ্ধ, গুলি-বোমার সঙ্গে ঘর মানুষগুলো ভাবছেন এবার কী তবে ভিটেমাটি ছাড়তে হবে! ছাড়লেও কোথায় যাবেন তাঁরা। শহর ছেড়ে গণপ্রস্থান কীভাবে সম্ভব?

যদি যেতেও হয়, যাবেন কীভাবে। গাধা, গাধা কোথায়! মানুষই খেতে পাচ্ছে না, গাধার খোরাকি জোগাড় হবে কী করে? গাড়ি। জ্বালানি নেই, ট্যাঁকে কড়িও নেই। গত সাতদিন ধরে শহরের সব পেট্রল পাম্প শূন্য। প্রবীণদের দুএকজন ১৯৪৮ সালের বিপর্যয়ের কথা স্মরণ করলেন। যখন প্যালেস্তাইন থেকে সাড়ে ৭ লক্ষ আরবের গণ দেশত্যাগ ঘটেছিল। গতকাল রাত পর্যন্ত মানুষ খাবার ও জলের খোঁজে ছিল। কিন্তু শুক্রবার থেকে তাঁদের ভাষা হারিয়ে যাওয়া দুচোখে একটাই দুশ্চিন্তার মেঘ ঘুরছে। কীভাবে ঘর ছাড়ব, কোথায়ই বা যাব?

এই অবস্থায় হামাসের রাজনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ব্যুরোর প্রধান বাসেম নইম বলেছেন, প্যালেস্তিনীয়দের কাছে দুটি রাস্তা খোলা। একটি দখলদারিকে পরাজিত করা অথবা স্বদেশে প্রাণ বিসর্জন দেওয়া। আমরা জমি ছাড়ছি না। নকবা অর্থাৎ আর গণ দেশত্যাগ হতে দেব না।

একের পর এক ইজরায়েলি হানাদারিতে ক্ষতবিক্ষত প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই মুহূর্তে ত্রাণসাহায্য পাঠানোর আর্জি জানিয়েছে। গাজায় ইজরায়েলি অবরোধের ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এমনিতেই হাসপাতালে আর সাধারণ রোগী ও জখমদের চিকিৎসা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কোথাও জায়গা নেই। ভিড় উপচে পড়ছে করিডরে। যন্ত্রণায় কাতর মানুষের চিৎকারে ভরে উঠেছে হাসপাতাল চত্বর। আর কয়েক ঘণ্টা মাত্র বিদ্যুৎ থাকবে। ইনটেনসিভ কেয়ার, এক্স রে এবং ডায়ালিসিসের জন্য জেনারেটর চালানো জ্বালানি মেপেমেপে খরচ করা হচ্ছে।

এই অবস্থায় মরণাপন্ন রোগীদের নিয়ে যাওয়াও এক দুরূহ কাজ। অনেক ডাক্তারও মুমূর্ষু রোগীদের ছেড়ে পালাতে নারাজ। এই অবস্থাতেও জন্ম নিচ্ছে নতুন প্রাণ। একদিকে ইজরায়েলি বোমা-গুলির মারণ নিয়তি। অন্যদিকে, এই যুদ্ধক্ষেত্রেও ফুটফুটে সদ্যোজাতকে বুকে জড়িয়ে ধরে দেহের শেষ রক্তবিন্দুটি সন্তানের ঠোঁটে উগরে দেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রথম মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়া তরুণী। হাসপাতালে শয্যার পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখতে থাকেন ইজরায়েলি দখলমুক্ত প্যালেস্তাইনের স্বপ্ন দেখা তরুণীর স্বামী।

দেখুন অন্য খবর

RELATED ARTICLES

Most Popular