নয়াদিল্লি: উচ্চশিক্ষার পরেও বেকারত্বের জ্বালা সহ্য করতে না পেরেই ‘রং দে বাসন্তী’ (Rang de Basanti) প্রতিবাদে নেমেছিলেন ভগৎ সিংয়ের (Bhagat Singh) ‘ফ্যান’ নীলম আজাদ (Neelam Azad)। ভগৎ সিং ও তাঁর সঙ্গীরা যেমন ধোঁয়া-বোমা ফাটিয়েছিলেন ব্রিটিশ রাজশক্তিকে ঝাঁকিয়ে দিতে, কারও ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল না। তেমনই বুধবার সংসদে (Parliament Security Breach) রঙিন ধোঁয়ার কৌটোবাজি ফাটিয়ে দেশের বেকারি (Unemployment), দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি (Inflation), মণিপুর সমস্যা (Manipur Crisis) নিয়ে নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন ওঁরা। এখন তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ইউএপিএ (UAPA) ধারায় মামলা করলেও সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে, ওদের পদ্ধতি ‘ভুল’ হলেও দাবি কি একেবারেই ফেলনা?
এক অভিযুক্ত নীলম আজাদের এম ফিল ডিগ্রি ছিল। শিক্ষকতা করার জন্য আবশ্যিক কেন্দ্রীয় পরীক্ষাও পাশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু, দরজায় দরজায় ঘুরেও চাকরি পাননি। যা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন। নীলমের মা সরস্বতী বলেন, ও খুবই উচ্চশিক্ষিত। কিন্তু কোনও চাকরি পায়নি। এ নিয়ে খুব হতাশ ছিল। কেবলই বলত, দুবেলা পেট ভরে খাবার জোগাড় করার মতো রোজগার নেই, কী হল এত পড়াশোনা করে!
আরও পড়ুন: ‘রং দে বাসন্তী’ প্রতিবাদীরাও ভগৎ সিংয়ের ‘ফ্যান’
নীলমের ভাই রামনিবাস বলেন, এক আত্মীয়ের কাছ থেকে খবরটা পেয়েছিলেন। তিনি টিভিতে দেখে খবরটা দেন। তিনি বলেন, হিসারে কোনও চাকরি না পেয়ে ও ঝিন্দে গিয়ে ছিল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। মাত্র দুদিন আগেই বাড়ি ফিরেছিল। তিনিও বলেন, বিএ, এমএ, এম ফিল করার পর নেট পরীক্ষাতেও পাশ করেছিল। ঝিন্দে গিয়ে সেকেন্ডারি টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্টের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
আর এক প্রতিবাদী পেশায় ইঞ্জিনিয়ার মনোরঞ্জন ডি-র বাবা দেবরাজে গৌড়া বলেন, যদি তাঁর ছেলে কোনও অন্যায় করে থাকে, তাহলে তার ফাঁসি হওয়া উচিত। এই সংসদ দেশবাসীর। মহাত্মা গান্ধী থেকে জওহরলাল নেহরু সকলে মিলে একে মন্দির তৈরি করেছেন। এই মন্দিরের সঙ্গে এমন ব্যবহার বরদাস্ত করা যায় না, তা সে আমার ছেলেই বা না হয় হল। অন্য অভিযুক্ত লখনউয়ের বাসিন্দা সাগর শর্মা ই-রিকশ চালিয়ে চারজনের সংসার প্রতিপালন করেন। পরিবার জানিয়েছে, দুদিনের জন্য একটি প্রতিবাদে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।
অন্য খবর দেখুন