জয়জ্যোতি ঘোষ
১৯৭৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ স্মরণীয় হয়ে থাকবে ভিভ রিচার্ডস এবং গর্ডন গ্রিনিজের জন্য। ৭৯-র বিশ্বকাপ ফাইনাল সাক্ষী ছিল ভিভ রিচার্ডসের অনবদ্য ব্যাটিং নৈপূণ্যতার। অন্যদিকে, গর্ডন গ্রিনিজ পুরো বিশ্বকাপেই স্বমহিমায় ব্যাটিং করেন। বেঙ্কটরঘবনের নেতৃত্বে ভারত দ্বিতীয়বারের জন্য অংশ নেয় বিশ্বকাপে। তবে যতগুলি ম্যাচ খেলে সবকটিতেই হারের মুখ দেখতে হয়। ভারতের প্রাপ্তি বলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের করা ৭৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস। ভারতের প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তান কিন্তু এশিয়া থেকে প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
অংশগ্রহণকারী দল
মোট আটটি দল এই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে। তবে এই বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার দল নির্বাচন সঠিক হয়নি। তাঁরা আভ্যন্তরীণ বিবাদের শিকার হয়। অস্ট্রেলিয়া দলের বড় বড় নাম প্রায় প্রত্যেকেই ক্যারি প্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। তাই সেইসময় তাঁদের আর বিশ্বকাপের দলে রাখেনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। জেফ মোস এবং গ্রাহাম পোর্টার-কে ক’জনই বা মনে রেখেছেন? তবে অস্ট্রেলিয়ার পথে অবশ্য হাঁটেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাকিস্তান। ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেট খেলা অধিকাংশ ক্রিকেটারদের দলে রেখেই বিশ্বকাপে নামে পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সেরা ব্যাটিং
এই বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে শাসন করেন গর্ডন গ্রিনিজ। যাঁর সর্বমোট রানসংখ্যা ২৫৩। ভারতের বিরুদ্ধে একটি শতরানও আছে। বিশ্বকাপ ফাইনালে ভিভ রিচার্ডস এবং কলিস কিং-এর ঝোড়ো ইনিংসও স্মরণীয়। এছাড়া ব্যাট হাতে নজর কাড়েন গ্রাহাম গুচ(২১০), গ্লেন টার্নার(১৭৬) এবং জন রাইটও(১৬৬)।
সেরা বোলিং
১৯৭৯ বিশ্বকাপে বল হাতে নজর কাড়েন মাইক হেনড্রিক্স। সর্বাধিক ১০টি উইকেট তুলে নেন ইংল্যান্ডের এই ফাস্ট বোলার। সেরা বোলিং ফিগার ইংল্যান্ডের ক্রিস ওল্ডের(৪/৮)। নিজের প্রতিভার ছাপ রাখেন পাকিস্তানের আসিফ ইকবাল। তিনি নেন ৯টি উইকেট। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাইকেল হোল্ডিং নেন ৮টি উইকেট।
ফাইনাল
১৯৭৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৬০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ২৮৬/৯। ইংরেজ বোলারদের বিরুদ্ধে রীতিমত শাসন করেন ভিভ রিচার্ডস। ৮৭ স্ট্রাইক রেটে ১৩৮ রানের অপরাজেয় ইনিংস খেলেন এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার। তাঁকে সঙ্গ দেন কলিস কিং। সেইসময়ে দাঁড়িয়ে টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ব্যাটিং করে ৮৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন কলিস কিং। স্ট্রাইক রেট ১৩০.৩০। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব একটা খারাপ করেনি ইংল্যান্ড। ১২৯ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ হয় মাইক ব্রিয়ারলি এবং জিওফ্রে বয়কটের মধ্যে। কিন্তু ওপেনিং পার্টনারশিপ ভেঙে যেতেই একের পর এক উইকেট পতন হতে থাকে। গ্রাহাম গুচ(৩২) কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। মাত্র ১৯৪ রানে অল আউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। জোয়েল গার্নার একাই তুলে নেন ৫ উইকেট। এছাড়া কলিন ক্রফট নেন ৩ উইকেট। অনবদ্য ব্যাটিং-এর জন্য ম্যাচের সেরা হন ভিভ রিচার্ডস।