বহরমপুর: রাতের অন্ধকারে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গ্রাম। বৃহস্পতিবার রাত্রে নওদা থানার মধুপুর এলাকার ডাঙ্গাপাড়ায় এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওই ঘটনায় মেরজুল শেখ নামের এক ব্যক্তি সেদিন নিহত হন। গুরুতর জখম হয়েছিলেন কাবিজুল শেখ। তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ( Murshidabd Medical collage Hospital) করা হয়। তবে শেষপর্যন্ত প্রাণ রক্ষা হল না, শনিবার ভোর রাত্রে কাবিজুলের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে খবর ।
গত বৃহস্পতিবার রাত্রে ডাঙ্গাপাড়ার একটি বাগান থেকে হঠাৎ করে বিকট আওয়াজ শুনতে পান গ্রামের মানুষ। স্থানীয়রা তখনই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখতে পান রক্তাক্ত অবস্থায় দুজন পড়ে রয়েছেন। তাঁরা স্থানীয় পুলিশকে খবর দেন।পুলিশ (Pollice) সেখানে পৌঁছে তাঁদের উদ্ধার করে। তাঁদের নওদার আমতলা হাসপাতালে (Hospital) নিয়ে যায়। সেখানে মেরজুল শেখকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অন্য জনকে সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
মৃতের ব্যক্তিদের পরিবারের দাবি, ওই দুজনকে বোমা মারা হয়েছে।পুলিশকে দেওয়া বয়ানে কাবিজুল দাবি করেছি্লেন, তাঁরা নির্দোষ। ওদিন তাঁদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। পুরনো বিবাদের জেরেই এই হামলা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল জানান, নানা রকম কথা শোনা যাচ্ছে। তদন্তে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে। যে বাগানে এই ঘটনা ঘটে, সেখানে আরও বোমা আছে কি না, তার খোঁজ করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন : Jalpaiguri | আলুর বন্ড নিয়ে রণক্ষেত্র জলপাইগুড়ি, পুলিশের লাঠি, কাঁদানে গ্যাস
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। মিলেছে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্রও। মুর্শিদাবাদের লাগোয়া বীরভূমেও বোমা, অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার কিংবা বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা প্রায় রোজকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই সবই পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের গোলমাল পাকানোর প্রস্তুতি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের অনুমান রাতের অন্ধকারে বোমা বাঁধতে গিয়ে ওই ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের মার্চ মাসে বগটুই গণহত্যার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অকুস্থলে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দেন, বীরভূম সহ সমস্ত জেলা থেকে বোমা এবং বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। বিরোধীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশ কোনও জেলাতেই যে মানা হয়নি, তা ঘনঘন বোমা উদ্ধারের ঘটনাতেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় রোজই কোথাও না কোথাও বোমা উদ্ধার হয়েই চলেছে।