লস এঞ্জেলেস: তিনিই হলেন প্রথম বাঙালি যিনি বেভারলি হিলসের (Beverly Hills, California) ৯৫ তম একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানে (95th Academy Award) উপস্থিত থেকে হাতে তুলে নিলেন অস্কার (Oscar)। গতকালটা ছিল কলকাতা তথা বাংলার অন্যতম গর্বের দিন।যদিও প্রথম বাঙালি হিসেবে অস্কার সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্র-পরিচালক সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray)। কিন্তু তিনি গুরুতর অসুস্থ থাকার জন্য ১৯৯২ সালে এই সম্মান নিতে লস এঞ্জেলেসে যেতে পারেননি। ৩১ বছর পর আবার কোন বাঙালি অস্কার গ্রহণ করলেন।
কিন্তু কে সেই বাঙালি! কোন ছবির জন্য তিনি অস্কার মঞ্চে …
সকলেই জানে এস এস রাজামৌলির ‘আরআরআর’ (RRR) ছবির ‘নাটু নাটু’ (Natu Natu Song) গানটি মৌলিক গানের বিভাগে অস্কার জিতে নিয়েছে। তারই পাশাপাশি তামিল তথ্যচিত্র ‘দ্যা এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ (Tamil Documentary Film The Elephant Whispers) ও পেয়েছে অস্কার। সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র হিসেবে পুরস্কৃত এই ছবির পরিচালক কার্তিকী গঞ্জালভেস (Director Kartiki Gangalves)। এই ছবির নেপথ্যে রয়েছে কলকাতা তথা গল্ফ গ্রীনের এক বাঙালি তনয়া সঞ্চারী দাস মল্লিক (Ediotr Sanchari Das Mollick from Golf Green)। এই ছবি যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন সঞ্চারী। ডগলাস ব্লাশের সঙ্গে সঞ্চারী প্রায় ৫০০ ঘন্টার এই ফুটেজকে এডিট করে ৪০ মিনিটের তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছিলেন। ২০২১ সাল থেকে ছবিটির এডিটিং শুরু হয়েছিল। তখন গোয়াতে ছিলেন সঞ্চারী। এটি তার প্রথম তথ্যচিত্র।
এক তামিল দম্পতি তাদের জীবনকে উৎসর্গ করে দুটি অনাথ হস্তি শাবকের দেখাশুনা করেছিলেন তা নিয়েই ছিল এই তথ্যচিত্র। সঞ্চারির এডিট করা সেই ছবি জিতে নিল আন্তর্জাতিক বিনোদন জগতের সবচেয়ে বড় সম্মান। মঞ্চে উঠে তিনি গ্রহণ করলেন অস্কার। পুরস্কার নিয়ে সঞ্চারী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন,’আমি এখনো একটা ঘরের মধ্যে আছি। এত সম্মানীয় ব্যক্তিদের মাঝে দারুন উত্তেজিত বোধ করছি। সবটাই দারুন সুন্দর লাগছে। বলার কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না’। সঞ্চারী একজন চলচ্চিত্র পরিবারেরই মেয়ে। সঞ্চারীর মা শুভা দাস মৌলিকও একজন তথ্যচিত্র পরিচালক এবং সেন্ট্রাল কলেজের ‘মাস কমিউনিকেশন’ বিভাগের প্রধান। মেয়ের সম্মানে হোয়াটসঅ্যাপে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। সঞ্চারীর দাদুও ‘ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি’র একজন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। সত্যজিৎ রায় ও ছিলেন এই সোসাইটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকেই স্নাতক হয়েছেন সঞ্চারী। গল্ফ গ্রীনের চলচ্চিত্র পরিবারের মেয়ের সারা বিশ্বে এখন জয় জয়কার।