Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeFourth Pillar | নরেন্দ্র মোদি ২০২৪-এ ক্ষমতায় ফিরবে? রাজনৈতিক হাওয়া কী বলছে?...
Array

Fourth Pillar | নরেন্দ্র মোদি ২০২৪-এ ক্ষমতায় ফিরবে? রাজনৈতিক হাওয়া কী বলছে?  

Follow Us :

মোদিজি ক’দিন আগেই তাঁর ভাষণে বলেছেন, আমার তৃতীয় প্রধানমন্ত্রিত্ব কালেই আমরা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠব। কী হয়ে উঠব সে নিয়ে তো গতকালই আলোচনা করেছি। কিন্তু এই বক্তৃতায় আমাদের মোদিজি একটা কথা দল, দলের নেতাদের সাফ জানিয়ে দিলেন। ওসব পঁচাত্তর ফচাত্তর ছাড়ুন, ওগুলো আদবানি জোশিদের জন্য, আমি ব্যতিক্রম, আমি অন্তত ২০২৯ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ছি না। আর এই সময়কালের মধ্যেই সেই সব স্বপ্ন পূরণ হবে যা এতদিন অধরা ছিল। ২০১৭-তে ৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে উনি বলেছিলেন, ২০২২ এর মধ্যে এক ভারতবর্ষ তৈরি হবে যেখানে ধর্ম, জাতির ভেদাভেদ থাকবে না, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে, হরেক কো ঘর মিলেগা, হর ঘর মে কল হোগা, কল মে জল হোগা, ঘর মে বিজলি হোগা ইত্যাদি ইত্যাদি। গোলপোস্ট ২০২২। এখন সেটাকে টেনে নিয়ে তিনি চলে গেলেন ২০২৯। এটা ওনার পুরনো খেলা। কিন্তু মোদিজি ২০২৪-এর নির্বাচনের আগেই নতুন স্বপ্ন ফেরি করতে নামলেন কেন? তার কারণ উনি ভালো করেই জানেন বিরোধীরা আগের দেখানো স্বপ্নগুলোকে এক এক করে তুলে নিয়ে আসবেন, সেই অচ্ছে দিন আয়েঙ্গে, পন্দরা পন্দরা লাখ ইউহি মিলেঙ্গে থেকে কৃষকের দ্বিগুণ রোজগারের ভাঁওতা, ঘর আর পানীয় জলের স্বপ্নের মরা লাশ মানুষের সামনে তুলে ধরবেন। সেখান থেকে বাঁচার জন্যেই এখন উনি গোলপোস্টটাকে আরও দূরে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। 

কিন্তু আরও নতুন অনেকগুলো সমস্যা এসে দাঁড়িয়েছে মোদিজির সামনে, দিল্লির সরকারের সামনে, বিজেপির সামনে। নরেন্দ্র মোদি বা বিজেপির র‍্যাঙ্ক অ্যান্ড ফাইল দৃশ্যতই শেকি, ব্যাকফুটে, এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়। একটা সময় ছিল যখন মনেই হচ্ছিল ২০২৪ আরএসএস–বিজেপির কেক ওয়াক। মনে হচ্ছিল ৩০৩ কেন, সর্বকালের রেকর্ড রাজীব গান্ধীর ৪০৪-কেও ছাপিয়ে যাবে। কিছুদিন পর থেকে মনে হতে শুরু করল, না, ঠিক এরকম তো হচ্ছে না, কংগ্রেসের বা বলা ভালো রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা আর হিমাচলের রেজাল্ট ওই আগামী ৫০ বছর তো বিজেপিই ক্ষমতায় থাকবে এই ধারণাকে থমকে দাঁড় করিয়ে দিল। এর পরের চমক ছিল কর্নাটক, বিজেপির বিরাট পরাজয় দক্ষিণের দরজাটাই বন্ধ করে দিল এবং তারপরে বিরোধী ঐক্যের বিষয়গুলো আসতে শুরু করল এবং এখন এই প্রথমবার আমরা বিজেপিকে দেখছি ডিফেন্সে নেমে খেলতে, অফেন্সে আপাতত বিরোধীরা। আগে বিজেপিই এজেন্ডা সেট করত, সে তিন তালাক বিল হোক বা ৩৭০ ধারা বিলোপ, ভ্যাক্সিনেশনের সাফল্য বা বিশ্বগুরু হয়ে ওঠার দাবি, বিজেপি এজেন্ডা সেট করে দিত, বিরোধীরা বিরোধিতায় নামতেন। এখন ছবি প্রায় উল্টো। বিরোধীরা কর্নাটকে ২৬ দলের বৈঠক ডাকছেন, বিজেপি দিল্লিতে ৩৮ দলের বৈঠক ডাকছে, কবরে শয়ান এনডিএ-কে তুলে আনছে। বিরোধীরা তাঁদের ঐক্যবদ্ধ জোটের নাম দিলেন ইন্ডিয়া, মোদিজি থেকে অমিত শাহ থেকে নির্মলা সীতারামন থেকে এ রাজ্যের খোকাবাবু শুভেন্দু অধিকারী পর্যন্ত রিয়্যাক্ট করলেন, তীব্র রিয়্যাকশন। এরমধ্যে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে কুমি কাপুরের মতো কলামনিস্ট লিখছেন, অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে মোদিজির ৭ জন ক্যাবিনেট মিনিস্টার নির্বাচনে হারবেন। তিনি যা লিখেছেন তা সত্যি হলে, ৭ জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী হারলে, ১৫০ জন বিধায়কও হারবেন, তাহলে? 

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | নরেন্দ্র মোদি তাঁর দেশের মানুষকে বোকা ভাবেন   

হ্যাঁ এই ছবিই আরএসএস-বিজেপির কাছে আছে। কোন তিনটে ঘটনা বা কারণ বিজেপিকে এই পতনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে? অ্যান্টি ইনকমব্যান্সি তো আছেই, ১০ বছরের। এতবড় দেশে বিজেপি সমর্থক বা মোদি ভক্ত হলেও ছোট থেকে বড়, গরিবতম মানুষ থেকে বিলিয়নেয়ার, স্বার্থে ঘা পড়েনি এমন তো নয়, পড়েছে, তার একটা কমপাউন্ড এফেক্ট আছে, এই বিপুল অ্যান্টি ইনকমব্যান্সির পরেও সব মিলিয়ে ১০ বছরের বেশি একটানা সরকার চালিয়ে গেছেন এমন ইতিহাস তো সেই জওহরলাল নেহরুর আমল ছাড়া আর নেই। মোদিজি সেই দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, জিতলে রেকর্ড, হারলে খুব স্বাভাবিক হার। কিন্তু আপাতভাবে তিনটে কারণ এই হারকে ত্বরান্বিত করছে বা করবে। প্রথমটা হল বিরোধী ঐক্য, ফর্মেশন অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া নামের মঞ্চ গড়ে ওঠা। ২০১৪ কংগ্রেস আলাদা, তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে ওঠেনি, বামেরা আলাদা। বিজেপি জিতেছে, তার এনডিএর শরিকরাও সঙ্গে ছিল। ২০১৯, একে তো বালাকোট, পুলওয়ামা অন্যদিকে বার দুয়েক মঞ্চে হাত ধরাধরি করে দাঁড়ানো এবং ছবি তোলানোর বাইরে কোনও ঐক্য তৈরি হয়নি। এবারে পাটনায় বৈঠক হল, খুব যে হাত ধরাধরি করে ছবি উঠল তাও নয়, বরং শেষে প্রেস কনফারেন্সের সময় আপ অনুপস্থিত। মনে হল ঐক্যের দফারফা। কিন্তু সব ছক ভেঙে বেঙ্গালুরুর মিটিং, এনসিপিকে আড়াআড়ি ভাঙার পরেও ঐক্য বৈঠক, মমতা প্রস্তাব করলেন ইন্ডিয়া, মেনেও নিলেন সব্বাই। অ্যাকচুয়ালি আগের দিনের ডিনার বৈঠকের সময়েই এই কাজ সারা হয়ে গিয়েছিল, তারপর প্রথামত নাম প্রস্তাব করলেন সেই মমতা, সিলমোহর দিলেন বিরোধী নেতারা, রাহুল গান্ধীও। কতটা ঐক্য? আপ আর কংগ্রেসের আসন ভাগাভাগির আলোচনাও শুরু হয়ে গেছে। দিল্লিতে আপ পাঁচ, কংগ্রেস দুই, পঞ্জাবে আপ ৮, কংগ্রেস ৫ গোছের আলোচনা চলছে, মেটেনি জট, আপ কিছু আসন রাজস্থান, হরিয়ানাতেও চাইছে। কিন্তু আলোচনা তো শুরু হয়েছে। হ্যাঁ, বাংলার চারটে আসনের কথাও চলছে, যদিও নেতৃত্ব বদলেই সম্ভবত লুকিয়ে আছে এই ভাগাভাগির সমাধান। কিন্তু সব মিলিয়ে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ, কেবল নির্বাচনে নয়, সংসদেও। ইন্ডিয়া জোট থেকে মণিপুরে সাংসদদের টিম গ্যালো, একসঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হল, আপ-এর সঞ্জয় সিংহের বহিষ্কারের পরে সোনিয়া গান্ধী নিজে এসে আপ সাংসদের সঙ্গে দেখা করলেন। কাজেই বিরোধী ঐক্য এখন আর পদ্মপাতায় জল নয়, টলমল করছে না, বরং একটা নির্দিষ্ট আকার নিচ্ছে, তেলঙ্গানার নির্বাচনের পরে বিআরএস যোগ দেবে, নিশ্চিত, আরও এক আধজন এই জোটে আসতে পারে, মিজোরামে এমএনএফ-এর সুর বড্ড বেসুরো। হ্যাঁ, এই জোটের সঙ্গীদের দেশের ২০টা রাজ্যতে নির্বাচিত প্রতিনিধি আছে, ১১টা রাজ্য এই জোটের নেতাদের হাতে। 

মোদিজির দ্বিতীয় সমস্যা হল ভোট, আগে বিভাজিত ভোটের খেলায় বিজেপি এগিয়ে থাকত, থাকত বলেই ৩৭ থেকে ৩৯ শতাংশ ভোট নিয়েও বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা। এবারে সেই ভোট ভাগাভাগির সম্ভাবনা অনেকটা কমছে, আপ ভোট কেটে জিতিয়ে দেবে এমনটা হবে না, এই ভোট কাটাকাটির খেলাটা এবারে খুব একটা কাজ করবে না। অন্যদিকে বাঘের পিঠে সওয়ার বিজেপি, মহারাষ্ট্র বিহার উত্তরপ্রদেশে তো বটেই, যে সমস্ত শরিকদের নিয়েছেন, তাঁদের আসন দিতে গেলে নিজেদের হাতে থাকবে পেনসিল। এনসিপির অজিত পাওয়ার বা শিন্ডের শিবসেনা, চিরাগ পাসোয়ানের লোক জনশক্তি বা উত্তরপ্রদেশের নিশাদ পার্টি ছেড়ে কথা বলবে? অন্যদিকে কং-বাম-নীতীশ-লালু জোট বিহারে, এনসিপি শরদ গোষ্ঠী, উদ্ধবের শিবসেনা, কংগ্রেস, প্রকাশ আম্বেদকরের বঞ্চিত আগাড়ির জোট মহারাষ্ট্রে, বাংলায় সাবেক কংগ্রেস আর তৃণমূলের জোট, পঞ্জাবে, গুজরাতে, দিল্লিতে আপ, কংগ্রেস জোট, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস, সমাজবাদী, আরএলডি জোট হলে বিরোধীদের যে সুবিধে হবে তা তো অঙ্ক কষে বলতে হবে না। কাজেই ভোট বিভাজনের লড়াইতেও অনেকটা পিছিয়ে আছে বিজেপি। তিন নম্বর কারণটা হল আমাদের ভৌগোলিক রাজনৈতিক অবস্থা। পাকিস্থানের অর্থনীতি ভেঙে দ, এদিকে মোদিজি আন্তর্জাতিক মঞ্চে গিয়ে পিস অ্যান্ড প্রসপারিটির প্রচুর লেকচার দিয়েছেন। কাজেই এইবারে ওই পুলওয়ামা বা বালাকোট তৈরি করা যাবে না, ঘর মে ঘুসকর মারেঙ্গে যাদের বলা হচ্ছিল, তারা ঘরেই মরার মতন পড়ে আছে। অন্যদিকে চীন সীমান্তে তাদের ঘুঁটি সাজাচ্ছে, সেনাবাহিনী জড়ো করছে, রাস্তা বানাচ্ছে সীমান্ত জুড়ে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে দেখুন, বালিতে ঘরমে ঘুসকর মারেঙ্গে বলা তো দূরস্থান, হেঁ হেঁ করে এলেন চীনের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে। মানে পাকিস্তান এতটাই দুর্বল যে তাকে মারার মধ্যে আর কোনও গৌরব নেই, আর চীন এতটাই শক্তিশালী যে তাকে মারার কথা মাথাতেও আনবেন না নরেন্দ্র মোদি। কাজেই পুলওয়ামা বা বালাকোট দিয়ে হালকা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা করে জঙ্গি জাতীয় প্রেম জাগিয়ে তোলার সুযোগ আজকে নেই। তাহলে বাঁচল কী? 

সৎপাল মালিক তার একটা হদিশ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। রাম মন্দির উদ্বোধনের সময় যদি একটা বড়সড় বিস্ফোরণ, গণ্ডগোল করা যায়, তাহলে বিজেপি দেশজুড়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আচ্ছা সেটাও কি সহজ? তা নিয়ে আরেকদিন আলোচনা করব। কিন্তু আপাতত বিজেপি মণিপুর নিয়ে, সারা দেশের বেকারত্ব থেকে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে, দেশের অর্থনীতি নিয়ে এবং দল নিয়ে ব্যতিবস্ত। বাংলায় বিরাট হারের পরে গত একবছর ধরে প্রায় বসিয়ে দেওয়া কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে আবার দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেই রাখতে হয়েছে। তা না হলে মধ্যপ্রদেশে শুয়ে পড়বে দল, এটাই ছিল ফিডব্যাক, কিন্তু ওঁকে নেওয়ার পরেও যে উঠে দাঁড়াবে তাও নয়। ছত্তিশগড় বিজেপির নেতারাও জানেন কংগ্রেস জিতবে, রাজস্থানে কাঁটে কা টক্কর, তেলঙ্গানাতে বিজেপি নয় কংগ্রেস এখন দু’ নম্বরে আর মিজোরামের এমএনএফ রেগে আগুন তেলে বেগুন, মণিপুরের ঘটনার পরে ওখানেও বিজেপি ব্যাকফুটে। সবমিলিয়ে নরেন্দ্র মোদি সাফ বুঝতে পারছেন হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতা। সবথেকে বড় কথা ১০০ বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আরএসএস বুঝতে পারছে নরেন্দ্র মোদির সরকার না জিতে আসলে তাঁদের হিন্দুরাষ্ট্রের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে, কাজেই শেষ কামড় দেওয়ার জন্য তারাও প্রস্তুত। আগামী কাল সেই মরণ কামড়ের কথা বলব।       

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
৪টেয় চারদিক | সব সাধু সমান হয় না, আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবা‌ই সমান? : মমতা
59:07
Video thumbnail
Narendra Modi | বিষ্ণুপুরে মোদির সভা, কী বললেন দেখুন ভিডিও
25:00
Video thumbnail
পায়ে পায়ে ধর্মযুদ্ধে | রবিবাসরীয় বঙ্গ সফরে নরেন্দ্র মোদি
02:18
Video thumbnail
Jyotipriya Mallick | হাড়-মাংস-কিডনি-লিভার, জামিনে বালুর হাতিয়ার
06:36:36
Video thumbnail
আমার শহর (Amar Sahar ) | ভাঙা হয়েছিল অবৈধ দোকান, এবার শুরু নতুন দোকানঘর বানানোর কাজ
02:15
Video thumbnail
Kunar Hembram | বিজেপির বিদায়ী সাংসদ তৃণমূলে, জোড়া ফুলে যোগ কুনার হেমব্রমের
04:06
Video thumbnail
Narendra Modi | ভোট প্রচারে মেগা-রবিবার, পুরুলিয়ায় ভোটপ্রচারে মোদি
03:22
Video thumbnail
Arjun Singh | 'BJP প্রার্থীর দ্বিতীয় স্ত্রী', বিবাহ-বিতর্কে অর্জুন সিং, আসরে তৃণমূল
00:26
Video thumbnail
Sandeskhali | নাবালিকাকে 'শ্লীলতাহানি, ধর্ষণের চেষ্টা', সন্দেশখালিতে ফের নির্যাতনের অভিযোগ
01:09
Video thumbnail
Top News | আপের 'জেল ভরো' কর্মসূচি, কেজরিওয়ালের সমর্থনে রাজধানীর পথে আপ
34:49