বাংলাদেশ: বাংলাদেশে (Bangladesh) স্কুল পড়ুয়াদের জন্য নতুন দুটি পাঠ্য বই তুলে নেওয়া হয়েছে। সে দেশের ইসলামি (Islam) গোষ্ঠীদের বিক্ষোভের চাপে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একটি পাঠ্য বইতে শরিফ নামের একটি ছেলের গল্প বলা হয়েছে, যে নিজের নাম পরিবর্তন করে মহিলা নাম শরিফা রাখে। তারপর সে রূপান্তরকামী (Transgender) বা ট্রান্সজেন্ডারদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। এই নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ১১ থেকে ১৩ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রকাশিত দুটি বইতে একাধিক বিতর্কিত অংশ নিয়ে বাংলাদেশের ইসলামি সংগঠনগুলি প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের দাবি, পাঠ্য বইয়ে ট্রান্সজেন্ডারদের (Transgender) পরিচিতি ও সমকামী সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে। প্রায় মাসখানেক ধরে চলা প্রতিবাদ বিক্ষোভে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় হাজার হাজার মানুষ শামিল হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত গত শনিবার (১১ ফ্রেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওই দু’টি বই বাতিল করে।
এবিষয়ে এনসিটিবি’র (NCTB) বক্তব্য, পাঠ্য বইয়ের ওই অংশ নিয়ে সমালোচনা ওঠায় এবং শিক্ষার্থীদের পড়ার চাপ কমাতে বইগুলি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : International Mother Language Day: মাতৃভাষাকে হত্যার দায় বাঙালিদেরই স্বীকার করে নিতে হবে
এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এনসিটিবি (NCTB) মুখপাত্র মহম্মদ মশিউজ্জামান জানান, “এবিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার মত আমাদের গ্রামীণ এলাকায় বহু স্কুলে পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত নেই। বইয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু পড়ুয়াদের জন্য একটু চাপেরও হয়ে যাচ্ছিল।” তিনি আরও বলেন, বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে বিতর্ক চলছিল। এই বিষয়টি নিয়ে আর যাতে কেউ রাজনীতি করতে না করে তাই বই দুটি তুলে নেওয়া হল।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সেদেশের রূপান্তরকামীদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে পরিচিতি দেওয়ার স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে ‘হিজড়া’ ব্যক্তিদের আবাসন ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার দিয়েছে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, এতসবের পরও বাংলাদেশে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন (১৫ লক্ষ) ট্রান্সজেন্ডার (Transgender) মানুষ এখনও বৈষম্যের স্বীকার। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই অর্থ উপার্জনের জন্য ভিক্ষা কিংবা যৌন ব্যবসা করতে বাধ্য হন।