পৃথিবীকে কেমন দেখায় সূদূর মহাকাশ থেকে? হলিউডের সিনেমা কিংবা ইন্টারনেটের সৌজন্যে আমরা অনেক ছবিই দেখেছি। আমাদের সৌরমণ্ডলের একমাত্র গ্রহ, যেখানে প্রাণ আছে, জলের অস্তিত্ব আছে। অন্তহীন মহাকাশে আমাদের নীলগ্রহকে নিয়ে আমাদের কৌতূহলের অন্ত নেই। আচ্ছা লক্ষ লক্ষ কিলোলিমাটর দূর থেকে কেমন দেখাতে পারে পৃথিবীকে? নিশ্চয় নীল নয়, তাহলে? সেই কৌতূহলেরই জবাব এবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA)-র কাছে। নাসার লুসি মহাকাশযান (Lucy Spacecraft) গত ১৫ অক্টোবর একটি ছবি তুলেছে। পৃথিবী থেকে ৬ লক্ষ ২০ হাজার কিলোমিটার (৩ লক্ষ ৮০ হাজার মাইল) দূরে নীল গ্রহের ছবি তুলেছে মহাকাশ যানটি। মহাকাশে অত দূর থেকে পৃথিবীর সাদা-কালো ছবিটি দেখে মন ভরে গিয়েছে মহাকাশপ্রেমীদের।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা জানিয়েছে, আমাদের সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি (Jupiter), তার কক্ষপথেই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলা ট্রোজন গ্রহাণুপুঞ্জ (Trojan Asteroids) নিয়ে অনুসন্ধান চালানোর উদ্দেশ্যে নাসা লুসি মহাকাশযান পাঠিয়েছে। এই গ্রহাণুগুলি আজও প্রহেলিকা নাসার কাছে। এই গ্রহাণুপুঞ্জের কাছে পৌঁছানোর জন্য লুসি মহাকাশযানে গতিপথে ব্যবহারের জন্য তিনটি পৃথিবী মাধ্যাকর্ষণ সহায়তা (Earth Gravity Assists) রয়েছে।
লুসির টার্মিনাল ট্র্যাকিং ক্যামেরা (T2CAM) সিস্টেমের মাধ্যমে পৃথিবীর ছবি তোলা হয়েছে। নাসা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটি ছবিটি তথ্য সহ প্রকাশ করেছে সর্বসাধারণ উদ্দেশে। মহাকাশযানে ২টি একই রকমের ক্যামেরা রয়েছে, যা দ্রুত গতিতে চলার সময়ও সহজেই ছবি তুলতে পারে গ্রহাণুগুলির। T2CAM সিস্টেমটির নকশা তৈরি, নির্মাণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে ম্যালিন স্পেস সায়েন্স সিস্টেমস (Malin Space Science Systems)। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর নাসা ১৪ লক্ষ কিলোমিটার (৮ লক্ষ ৯০ হাজার মাইল) দূর থেকে আরও একটি ছবি তুলেছিল। সেই ছবিতে পৃথিবীর সঙ্গে চাঁদও ছিল একই ফ্রেমে।
আরও পড়ুন: Google Workspace: মুশকিল আসান, ওয়ার্কস্পেসে সবার জন্যই ফ্রি স্টোরেজ বাড়াচ্ছে গুগল
উল্লেখ্য, নাসার মহাকাশ অনুসন্ধানের অঙ্গ হিসেবে লুসি ১২ বছরের যাত্রায় আটটি পৃথক গ্রহাণুতে পৌঁছবে। সেই সঙ্গে খোঁজ চালানো হবে বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথে থাকা সাতটি ট্রোজন গ্রহাণুতে। এই মিশনের জন্য নাসা ৯৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করছে। ২০১৭ সালে লুসি মহাকাশযানকে ট্রোজন গ্রহাণুর উদ্দেশ্যে মহাকাশে পাঠিয়েছে নাসা। নাসার বিশ্বাস, এই গ্রহাণুগুলি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালালে গ্রহ গঠনের (Planet Formation) অনেক অজানা তথ্য সামনে আসবে, যা আগামী দিনে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বৈজ্ঞানিকদের সামনে।