পশ্চিম মেদিনীপুর: মিড-ডে মিল (Mid Day Meal) নিয়ে সম্প্রতি রাজ্যে (West Bengal) একের পর এক বিতর্ক দেখা দিচ্ছে। মাঝে মধ্যেই মিড-ডে মিলের খাবারে মৃত সাপ, ব্যাঙ, টিকটিকি, আরশোলা উদ্ধার হচ্ছে। তা খেয়ে অসুস্থ হওয়ার ঘটনাও নতুন কিছু নয়। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় মিড-ডে মিল তৈরির প্রকিয়া খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। এবার মিড-ডে মিল হয়নি বলে স্কুলে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। জেলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের মিড-ডে মিলের গুণগত মান পরিদর্শনের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়লো ব্যাপক চাঞ্চল্য। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Medinipur) নারায়ণগড় ব্লকের রানীসরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের একতাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (Primary school)।
অভিযোগ, পশ্চিম মেদিনীপুরের রানিসরাই গাম পঞ্চায়েতের একতাল প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রায় ১ মাসের বেশি সময় ধরে মিড-ডে মিলের কোনও রান্না হয়নি। শুধু তাই নয়, স্কুলে করা হয়নি সরস্বতী পুজোও। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণী কক্ষ সহ অফিস ঘরে তালা লাগিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। এর জেরে কার্যত শিকেয় উঠল পঠন পাঠন। স্কুলের বারান্দাতে বসেই চলল পঠন-পাঠন প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুনCBI On Recruitment Scam : ওএমআর শিট বিকৃতির মামলায় সন্দেহের তির সিবিআইয়ের দিকে
আরও অভিযোগ, সরস্বতী পুজোর চাঁদা নিয়ে সরস্বতী পুজো করা হয়নি। সেই কারণে স্কুলে তালা বন্ধ করেছেন গ্রাম বাসীরা। গ্রামবাসী পিনাকী দত্ত জানান, ডিসেম্বরে প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যালয়ে কোনো মিড ডে মিল রান্না হয়নি। রান্না না হলেও রান্না হয়ে যাওয়ার মেসেজ পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।সরস্বতী পূজোর চাঁদা নিয়েও কোন পূজো করা হয়নি এবং মিড ডে মিলের নিম্নমানের খাবার দেওয়া হত।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিনের মতোই এদিনও স্কুলে এসেছিল পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা। আর তাঁরা পৌঁছে দেখেন স্কুলের গেটে তালা লাগানো। বিদ্যালয়ের তালার উপরে আরও একটি তালা ঝোলানো হয়েছে। কে বা কারা এই তালা লাগিয়েছে তা জানেন না শিক্ষকরা। তাই স্কুলের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে শিক্ষক শিক্ষিকারা। খোঁজ খবর নেওয়ার পরে যখন কেউ তালা খুলতে না আসে অবশেষে বারান্দায় বসে পঠন পাঠন চালানোর সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। পঠন পাঠন চললেও মিড ডে মিলের কোন ব্যবস্থা নেই কারণ মিড ডে মিলের সরঞ্জাম রাখার ঘরেও ঝুলছে তালা। রান্নাকারী সহ-সহায়ক দলের মহিলারা এসেও নিরুপায়।
শিক্ষিকা কেকা নন্দগোস্বামী অধিকারি জানান, কে বা কারা তালা লাগিয়েছে তা আমরা জানিনা। তালা লাগানোর কি কারণ সেটাও জানিনা। যদি কারও কোন সমস্যা থেকে থাকে আমাদের সঙ্গে এসে সরাসরি কথা বলুক। মিড-ডে মিল নিয়ে ওঠা অভিযোগ এড়িয়ে যান শিক্ষিকা। স্কুল বন্ধ হওয়া নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকরা কেন্দ্রীয় টিমের পরিদর্শনের কাজে ব্যস্ত থাকায় তাদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া সম্ভব হয়নি।