আসানসোল: ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকার পর আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে হাজির ছিলেন গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। ভার্চুয়াল শুনানিতে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর কাছে সায়গল জামিনের আবেদন করে বলে, প্রায় ৮ থেকে ৯ মাস যাবত সে জেলে বন্দি। এই অবস্থায় যে কোনও শর্তসাপেক্ষে বিচারকের কাছে জামিনের আবেদন করছি।
তখন বিচারক বলেন, আমি তোমার কথা শুনলাম। আজকে তোমার আইনজীবি তোমার জন্য জামিনের আবেদন করেছেন। দুই পক্ষের আইনজীবীদের শোনার পর আমি সিদ্ধান্ত নেব। এরপর শুনানি শুরু করেন সায়গল হোসেনের আইনজীবী শেখর কুন্ডু। তিনি আদালতে সায়গলের জামিনের জন্য নানা তথ্য খাড়া করেন। যেমন ১, আমার মক্কেলকে যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বা তদন্ত করা হয়েছে তার অনেক তথ্যই আমরা ঠিকঠাক পাচ্ছিনা।
২, গরু পাচার কাণ্ডে মামলায় অভিযুক্ত সতীশ কুমার এবং এনামুল হককে আদালত জামিন দিয়েছে। অন্যদিকে এই কাণ্ডে বিনয় মিশ্র, বিকাশ মিশ্র সহ অনেকের নাম চার্জশিটে আছে। এদের মধ্যে অনেকেই জামিনে মুক্ত। তবে এইক্ষেত্রে কেন সায়গল হোসেন জামিন পাবেন না।৩, এই কেসে গ্রেফতার হওয়ার আগে সায়গল হোসেনের এক সন্তান দুর্ঘটনাতে মারা যায়। এখন বাড়িতে সায়গলের পত্নী ও শারীরিক ভাবে অক্ষম এক শিশু আছে। তাদের সমস্যা হচ্ছে।
আমার মক্কেল ৮ মাসেরও বেশি আপনার হেফাজতে আছে। সায়গল একজন কনস্টেবল। সে একজন রাজনৈতিক নেতার দেহরক্ষী মাত্র। তার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত স্বাপেক্ষ।
যে কোনও শর্ত সাপেক্ষে সায়গল হোসেনের জামিনের জন্য আবেদন করেন তার আইনজীবী।
তার প্রেক্ষিতে সিবিআই আইনজীবি সায়গলের জামিনের বিরোধিতা করে বিচারকের কাছে বেশ কিছু তত্ত্ব খাড়া করেন। তাতে বলা হয়,
১, সায়গল একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি।২, সায়গলের কাছে থেকে একটি বেনামি দলিল পাওয়া যায়। যা সায়গল হোসেন অন্য কারোর নামে অন্য কাউকে দিয়ে কেনা করিয়েছিলেন।
৩, বেশ কিছু সোনার অলঙ্কার পাওয়া গেছে। যার মধ্যে অনেক গুলির তদন্ত করা হয়েছে। এছাড়া ও অনেক অলঙ্কার কোথা থেকে এল তার তদন্ত বাকি আছে। সেদিকেও তদন্ত করা হচ্ছে।
৪, এই তদন্ত সম্ভব হচ্ছে এই কারণে যেহেতু সায়গল জেলে বন্দি আছে। এছাড়াও নতুন-নতুন এই কেস সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।বিচারক রাজেশ চক্রবর্ত্তী বলেন, সায়গল হোসেনের অভিযোগের বিরুদ্ধে অনেক তথ্য আদালতে জমা আছে। অবশেষে দুই পক্ষের আইনজীবিদের শুনানি শোনার পর বিচারক রাজেশ চক্রবর্ত্তী সায়গলের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন । ৩ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।