কলকাতা: পুজো কমিটিগুলির বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভাষণে উঠে এল ইডি-সিবিআইয়ের অতিসক্রিয়তার কথা। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো সমন্বয় কমিটির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ইডি-সিবিআইকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এই এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমার বাড়িতে প্রতিদিন অত্যাচার করা হচ্ছে। কথা নেই, বার্তা নেই, রাতবিরেতে হাজির হয়ে যাচ্ছে ওরা কাউকে কিছু না জানিয়ে।
দু’দিন আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ থেকে ফিরেছেন। সোমবার অভিষেকের পুরনো সংস্থা লিপস অ্যান্ড বাউন্স কোম্পানির বেশ কিছু অফিসে ইডির তল্লাশি হয় , তল্লাশি চলে ওই সংস্থায় ডিরেক্টর হিসেবে এক সময় কাজ করা বর্তমানে জেলবন্দি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকুর’ মেয়ের বাড়িতেও। মুখ্যমন্ত্রী সম্ভবত সেই প্রসঙ্গই টেনে এনে বলেন, মাত্র তিন দিন আগে বাড়ি ফিরেছে ছেলেটা। কিছু না জানিয়ে ওর চার-পাঁচটা জায়গায় চলে গেল। আমি কিছু জানতাম না। রাতে আইনজীবী মাধ্যমে খবর পেলাম, বাবুরা নাকি বেরিয়েছে। তিনি বলেন, সব কিছুরই একটা নিয়ম আছে। একটা ওয়ারেন্ট লাগে। তল্লাশি বা গ্রেফতার করতে হলে বাড়ির লোকের উপস্থিতি বা সম্মতি প্রয়োজন হয়। কেউ হয়তো বাংলা বা ইংরেজি ড্রাফট করতে পারে না। তার জন্য আইনজীবীর সাহায্য নিতে হয়।বলা নেই, কওয়া নেই, এরা যখন খুশি যার তার বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। বাড়িতে কাউকে থাকতে দিচ্ছে না। এমনকী যে লোকটা চা করে, তাঁকে পর্যন্ত বার করে দিচ্ছে। যা খুশি তাই করে চলেছে। আসলে বাংলায় একটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চালাচ্ছে এরা। তাঁর আরও মন্তব্য, কে কাকে বিয়ে করছে, কার কটা বাচ্চা আছে, তাও জানতে হবে ওদের।
আরও পড়ুন: পুজোয় ঘন চুলের আশা পূর্ণ হবে নিমেষে
মমতা বলেন, পুজো কমিটিগুলিকে পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে না। বলা হল, তাদেরও ইনকাম ট্যাক্সের রিটার্ন জমা দিতে হবে। আমি তা নিয়ে হইচই করলাম। তারপর ওরা পিছু হটেছে। রটিয়ে দেওয়া হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি দুর্গাপুজো করতে দিচ্ছে না। ওদের কাছ থেকে দূর্গা পুজো শিখতে হবে? প্রধানমন্ত্রী বাইরে গিয়ে বড় বড় কথা বলেন আর এখানে বিরোধী রাজ্যগুলিতে দেখুন, ডোরা পিঁপড়ের মতো কামড়াচ্ছে। সংবাদমাধ্যমকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, একটা পিঁপড়ে কামড়ালেও ওরা তাই নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকে। তবে ওরা ভালো কিছু করে না তা নয়। কিন্তু ওদের মালিকদেরও ইডি-সিবিআইয়ের ভয় আছে। ওরাই বা কী করবে।
এদিনের বৈঠকে কলকাতা এবং লাগোয়া জেলাগুলির পুজো কমিটিগুলি হাজির ছিল। এছাড়া দূরবর্তী জেলাগুলিও বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নেয়।কমিটিগুলিকে কী কী করতে হবে, মুখ্যমন্ত্রী তার বিস্তারিত বিবরণ দেন। তিনি জানান, ২৭ অক্টোবর কার্নিভাল হবে , তার আগে ২৪,২৫,২৬ অক্টোবর বিসর্জন দেওয়া যাবে।