মুম্বই: মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সঙ্গে গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করলেন বিজেপির উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। বৃহস্পতিবার রাতে দুজনের সাক্ষাতে মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের জল্পনার ঢেউ উঠেছে আরব সাগর তীরে। শরদ পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি ভেঙে অজিত পাওয়ার গোষ্ঠী মারাঠা সরকারে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। সে ব্যাপারেই আলোচনা করতে অনেক রাতে মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডের সরকারি বাসভবন বর্ষায় আসেন ফড়নবিশ।
বিশেষত, অজিত পাওয়ার গোষ্ঠী যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিরোধী দলগুলি শিন্ডেসেনাকে উসকে দিচ্ছিল। তারা রটিয়ে বেড়াচ্ছে এবারে শিন্ডের প্রয়োজন ফুরাল। আদালতে যদি শিন্ডেরা দলত্যাগ আইনে পড়েন, তাহলে অন্তত মন্ত্রিসভা টিকে যাবে। গতকাল এটাকেও গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শিন্ডে। তিনি বলেন, তাঁর পদত্যাগের কোনও পরিকল্পনা নেই। সরকারের পক্ষে এখন ২০০ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। এসব জল্পনাকে গুজব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: Panchayat Election | পঞ্চায়েত ভোটে কীভাবে কাজ করবে পুলিশ, জারি বিজ্ঞপ্তি
যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, অজিত পাওয়ারের সদলবলে মহারাষ্ট্র সরকারে যোগদান একনাথ শিন্ডের শিয়রে শমন হবে না তো? চোখের সামনে শরদ-ভাইপোকে বিজেপি-শিন্ডে সেনা সরকারে ঢুকতে দেখেও কিছু করার অবস্থায় ছিলেন না বাল ঠাকরের শিবসেনা ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া একনাথ। ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় হোক, তেতো বটিকা গিলতে হয়েছে তাঁকে। তৃতীয় ভাগীদারের সঙ্গে যে ক্ষমতা ভাগ করে নিতে হচ্ছে তাই নয়। সরকার পরিচালনায় বিজেপির যে শিন্ডে গোষ্ঠীর উপর নির্ভর করে থাকতে হতো, এখন সেই গলার কাঁটাও নরম হয়ে গেল। শিন্ডেদের একচ্ছত্র দবদবা খানিকটা হলেও কমে এল।
৯ জন বিধায়কের মন্ত্রিসভায় যোগ এবং অজিত পাওয়ারের দাবিমতো তাঁর পক্ষে ৩৬ জন এনসিপি বিধায়ক রয়েছেন বলে যদি সত্যি হয়, তাহলে শিন্ডের দিকের ১৪ জনের মন্ত্রী হওয়া আপাতত শিকেয় তোলা রইল। ফলে, শিন্ডে সেনায় ধোঁয়া উসকে ওঠা সময়ের অপেক্ষা। মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভায় মোট ৪৩ জন ঠাঁই পেতে পারেন। যার মধ্যে ২৩টি দফতরই রবিবার পর্যন্ত শূন্য ছিল। জানা ছিল এর মধ্যে আরও ১১টি দফতর শিন্ডে গোষ্ঠীর হাতে যাবে। সমবণ্টন নীতিতে সেই কথাই বলে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, শিন্ডের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে বিজেপির আর কোনও দায়বদ্ধতা নেই। সে কারণে ‘অপরিহার্য’ থেকে ‘উচ্ছিষ্ট’ হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে অজিত পাওয়ারের অন্তর্ভুক্তি শিন্ডে ও তাঁর দলবলের পক্ষে অশনি সংকেতও হতে পারে। সরকারে এবং জোটে যে স্বাধীনতা ছিল এবার থেকে তা হারাবেন একনাথ শিন্ডে। শুধু তাই নয়, সরকারে শিন্ডের যে দাপট ছিল তাও কমে আসবে।